সেই ২০১৬ সালের অক্টোবর। তখন ১০০ নোটে মিলত ৯০ টাকার খুচরো। আর ২০১৭ সালে দেড়শো টাকার খুচরো দিয়েও মিলছে না ১০০ টাকা।
মাত্র এক বছরের ব্যবধানে খুচরো নিয়ে এমনই অবস্থা মালদহে। খুচরো নিয়ে বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাজিয়া রোজকার হয়ে উঠেছে। এ জন্য নোটবন্দিকেই দুষছেন জেলার ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। অভিযোগ, নোটবন্দির সময় অচলাবস্থা কাটাতে ব্যাঙ্কগুলি লক্ষ লক্ষ টাকার খুচরো পয়সা বাজারে ছেড়েছিল। সেই বাড়তি খুচরোর বোঝা নোটবন্দির এক বছর পরেও ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
গত, ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসেও খুচরোর জোগান ছিল না মালদহের বাজারে। এমনকী, খুচরোর জন্য বাড়তি টাকাও গুনতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। জানা গিয়েছে, খুচরোর অভাবের জন্য বাটা প্রথা চালু হয়েছিল জেলায়। ১০০ টাকার নোট দিলে কখনও ৯০ কিংবা ৮৫ টাকা খুচরো মিলত। বিগত বছরের ৮ নভেম্বর কেন্দ্র সরকার ৫০০ এবং ১০০ হাজারের নোট বাতিল বলে ঘোষণা করে। তারপর থেকেই খুচরো নিয়ে বদলাতে শুরু করে জেলার ছবি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু হয়েছে খুচরো নিয়ে জট। পাড়ার মুদির দোকান থেকে শুরু করে বাজার। আনাজ বিক্রেতা হোক কিংবা মাছ ব্যবসায়ী। কেউ এক, দুটাকার কয়েন নিতে নারাজ। এ ছাড়া একাধিক পাঁচ ও দশ টাকার কয়েন নিতেও অস্বীকার করছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারাও ব্যবসায়ীদের কাছে বাড়তি খুচরো নিতে চান না। যার জন্য খুচরো পয়সা নিয়ে প্রায় বাজার কাজিয়া লেগেই থাকছে। অনেক সময় হাতাহাতিতেও গড়িয়ে যায়। নেতাজি পুরবাজারের আনাজ বিক্রেতা ফুলিয়া সরকার, কবিতা দাসেরা বলেন, “প্রথম দিকে ক্রেতাদের কাছ থেকে আমরা খুচরো নিয়েছিলাম। তবে মহাজনেরা আমাদের কাছে খুচরো নিচ্ছে না। যার জন্য বাড়িতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার খুচরো জমে রয়েছে। বাড়িতে টাকা থাকলেও টাকার অভাবে ব্যবসা লাটে উঠতে বসেছে।”
কেন এত খুচরো জেলায়? মালদহের মার্চেন্ট চেম্বার অফ কর্মাসের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, “নোট বাতিলের সময় টাকার ঘাটতি মেটাতে প্রচুর টাকার খুচরো সরবরাহ করেছিল জেলার ব্যাঙ্কগুলি। সেই সময় খুচরো টাকায় বাজারে লেনদেন চলত। যার ফলে খুচরো বাড়ন্ত হয়ে যাওয়ায় বাজারে অচল হয়ে পড়েছে। এ দিকে, মানুষের ঘরে ঘরে জমেছে খুচরোর স্তূপ। আমাদের কেন্দ্র সরকারের নোটবাতিলের সিদ্ধান্তের ফল এখনও ভুগতে হচ্ছে।”
তবে ব্যাঙ্কের একাংশ কর্তা বলেন, নোটবন্দির সময় সাধারণ মানুষের ঘর থেকেও প্রচুর খুচরো বেরিয়েছিল। বাড়িতে নোটের টান পড়তেই সেই ভাঁড় ভেঙে বের করা হয়েছিল পয়সা। তাই বাডারে বাড়ন্ত হয় খুচরো। মালদহের লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার রবীন্দ্র শর্মার আশ্বাস, “খুচরো ব্যবহার করলেই খুচরো নিয়ে সমস্যা মিটবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy