Advertisement
০৩ মে ২০২৪

জলের জন্য হাহাকার

বুধবার বালুরঘাটের চকভৃগুর সীমান্ত গ্রাম ধাউল, চন্দ্রদৌল্লা থেকে চকহরিণা, ভাতশালা এলাকার সর্বত্র পানীয় জলের জন্য আকুতিই শুনলেন ত্রাণ দিতে যাওয়া বিভিন্ন সংস্থার লোকজন।

বিপন্ন: সামান্য খাবার জলটুকু পেতে লাইন দিয়েছেন বাসিন্দারা। বালুরঘাটের ধাউলে। ছবি: অমিত মোহান্ত

বিপন্ন: সামান্য খাবার জলটুকু পেতে লাইন দিয়েছেন বাসিন্দারা। বালুরঘাটের ধাউলে। ছবি: অমিত মোহান্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৭ ০৫:৪৮
Share: Save:

শুকনো খাবার ভর্তি ট্রাক্টর থামতেই দৌড়ে এলেন বানভাসিরা। সবার হাতে বাটি, বালতি নয়তো হাড়ি। শুধু খাবার নয়, সবার গলায় তখন জলের জন্য হাহাকার। বন্যা পরিস্থিতির পরে জেলার প্রায় সব এলাকাতেই একই ছবি।

বুধবার বালুরঘাটের চকভৃগুর সীমান্ত গ্রাম ধাউল, চন্দ্রদৌল্লা থেকে চকহরিণা, ভাতশালা এলাকার সর্বত্র পানীয় জলের জন্য আকুতিই শুনলেন ত্রাণ দিতে যাওয়া বিভিন্ন সংস্থার লোকজন।

এ দিন বালুরঘাট শহরের একটি ক্লাবের মহিলারা ওই এলাকাগুলোয় ট্রাক্টরে করে বিভিন্ন শুকনো খাবার ও পানীয় জলের ড্রাম নিয়ে যান। সেখানে খাবারের চেয়ে পানীয় জলের জন্য বেশি হাহাকার দেখে বিড়ম্বনায় পড়েন উদ্যোক্তারা। ৪০টি ড্রামে ৮০০ লিটার জল নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ধাউল এবং চন্দ্রদৌল্লা এলাকায় অধিকাংশ জলের ড্রাম নিমেষে শেষ হয়ে যায়। পাশের এলাকার বেশকিছু মহিলা,পুরুষ বালতি-ঘটি নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন। ট্রাক্টর যেতেই জলের জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।

অশীতিপর বৃদ্ধা বুধনি মুর্মু কাঁপা হাতে থালাতেই জল নিয়ে চুমুক দিয়ে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেন। তাঁর কথায়, ‘‘নলকূপের জলে কাদা, দুর্গন্ধ। খাওয়া যায় না।’’ স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘খিদে নিয়ে তবুও বাঁচা যায়। কিন্তু জল ছাড়া তো মরে যাওয়ার জোগাড়।’’ অনেকে জল না পেয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দেন। উদ্যোক্তাদের তরফে সুভাষ সাহা বলেন, ‘‘এ সময়ে বানভাসিদের মধ্যে ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। শুদ্ধ পানীয় জলের জোগান ভীষণ প্রয়োজন।’’

ওই প্রত্যন্ত এলাকাগুলো সাতদিন ধরে এক বুক জলের তলায় ডুবে ছিল। ঘরবাড়ির সঙ্গে পঞ্চায়েতের বসানো হস্তচালিত নলকূপগুলোও জলের নীচে চলে যায়। জল নেমে গেলেও বন্যার ধ্বংসের ছাপ সর্বত্র। সংস্কার হয়নি নলকূপেরও। প্রশাসন ছাড়াও বেসরকারি ক্লাব ও সংস্থার উদ্যোগে বন্যার্তদের খাবার, ওষুধ বিলি করা হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় জল বিলির পরিমাণ অনেক কম বলেই দাবি ঘরহারাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE