Advertisement
০২ মে ২০২৪

কুয়াশার আড়ালে কাঁটাতার কেটে পাচারের ছক সীমান্তে

বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলায় মোট ১৭৮ কিলোমিটার বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। তারমধ্যে ৫০ কিলোমিটার এখনও খোলাই রয়েছে। সেই খোলা অংশের মধ্যে জলপথ রয়েছে ২০ কিলোমিটার।

কেটে দেওয়া হয়েছে মালদহের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া। নিজস্ব চিত্র

কেটে দেওয়া হয়েছে মালদহের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:৫০
Share: Save:

কোথাও দুই দেশের মাঝে রয়েছে নদী। আবার কোথাও রয়েছে চাষের জমি। অভিযোগ, শীত পড়তেই উন্মুক্ত সীমান্ত এলাকাগুলিকে কাজে লাগিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে পাচার চক্র। কুয়াশার আড়ালে কাঁটাতারও কেটে দিচ্ছে পাচারকারীরা। শীতের মরসুমে সীমান্তে পাচার নিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ বিএসএফ ও পুলিশকর্তারা। ফলে সীমান্তে শীতের মরসুমে বাড়তি টহলদারি শুরু করেছে বিএসএফ। জলপথেও স্পিডবোটের মাধ্যমে চলছে নজরদারি।

বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলায় মোট ১৭৮ কিলোমিটার বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। তারমধ্যে ৫০ কিলোমিটার এখনও খোলাই রয়েছে। সেই খোলা অংশের মধ্যে জলপথ রয়েছে ২০ কিলোমিটার। জেলা জুড়ে চারটি ব্যাটেলিয়নের জওয়ানেরা সীমান্তে টহলদারি চালান। তবে শীত পড়তেই সীমান্তে সক্রিয় হয়ে উঠেছে গরু পাচারকারীরা। গভীর রাতে একাধিক উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে দল বেঁধে চলছে পাচার। অভিযোগ, তারকাঁটার বেড়াও কেটে দেওয়া হচ্ছে। তারপরে সেই কাটা অংশ দিয়ে অবাধে চলছে গরু পাচার।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে নদী কিংবা সড়কপথে গরু নিয়ে আসা হচ্ছে জেলায়। নজরদারি এড়াতে পাচারকারীরা গরু পাচারের জন্য গাড়ি ব্যবহার করছে। পিকআপ ভ্যানের পাশাপাশি ট্যাক্সির ডিকিতেও গরু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সীমান্তে। হাত বদলে সীমান্তে গরু নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি গোয়েন্দা বিভাগের কর্তাদের। তাঁদের দাবি, সীমান্তের চার কিলোমিটার আগে একদল কারবারি গরু পৌঁছে দেয়। সেখান থেকে আবার সীমান্তে গরু পৌঁছে দেয় অন্য কারবারীরা। সীমান্তে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গরু প্রতি মজুরি দেওয়া হয় দেড় হাজার টাকা। আর সেই কারবারের জন্য সীমান্ত এলাকার যুবকদের কাজে লাগায় পাচারকারীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমান্তবর্তী গ্রামের বাড়িগুলিও ব্যবহার করে পাচারকারীরা। বিভিন্ন বাড়িতে টাকার বিনিময়ে মজুত রাখা হয় গরু। সেগুলি রাতের অন্ধকারে পাচার করে দেওয়া হয়। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে নজরদারি চালানোর পাশাপাশি ওই গ্রামের বেকার যুবকদের সচেতন করতে প্রচার চালানো হয়। এমনকী, দিশা নামে একটি প্রকল্পও চালু করা হয়েছে। সেই প্রকল্পে আগ্রহী বেকার যুবকদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীকালে তাঁদের কর্মসংস্থানের সুযোগও করে দেওয়া হচ্ছে।’’

অভিযোগ, পুরাতন মালদহের মুচিয়া সাতমাইল, মোহনবাগান গ্রামের মহানন্দা নদী পার হলেই বাংলাদেশ। আর এই গ্রামগুলি রাজ্য লাগোয়া হওয়ায় অবাধে গাড়িতে পৌঁছে যায় গরু। পুরাতন মালদহের মত কালিয়াচক থানার শশ্মানি, চোরি অনন্তপুর, বৈষ্ণবনগর থানার দৌলতপুর, মিলিক সুলতানপুর, পারদেওনাপুর প্রভুতি সীমান্তে সক্রিয় পাচার চক্র। আর শীতের মরশুমে সবথেকে বেশি পাচার হয়। অভিযোগ, রাত ২টো থেকে ৪টে পর্যন্ত চলে গরু পাচারের কারবার। রাতেই গভীর রাতে নজরদারি আরও জোরদার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিএসএফের কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Trafficking Barb Wire Border BSF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE