Advertisement
০২ মে ২০২৪

দয়া করে হেলমেট পরে ফেলুন, করুণ আর্তি মালদহে

চিত্র-১: গাবগাছির শোরুম থেকে মোটোরবাইক কিনে আমবাজার গেটের কাছে পাম্পে পেট্রোল ভরতে এসেছিলেন হবিবপুরের সমিত সিনহা। প্রায় ৭০ হাজার টাকা দিয়ে বাইক কিনলেও হেলমেটের দাম বেশি বলে সেটা আর কেনেননি।

হাত জোড় করে মোটরবাইক আরোহীকে অনুরোধ পেট্রোল পাম্প কর্মীর। মালদহের আমবাজারে বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

হাত জোড় করে মোটরবাইক আরোহীকে অনুরোধ পেট্রোল পাম্প কর্মীর। মালদহের আমবাজারে বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

জয়ন্ত সেন
মালদহ শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৬ ০২:৪৬
Share: Save:

চিত্র-১: গাবগাছির শোরুম থেকে মোটোরবাইক কিনে আমবাজার গেটের কাছে পাম্পে পেট্রোল ভরতে এসেছিলেন হবিবপুরের সমিত সিনহা। প্রায় ৭০ হাজার টাকা দিয়ে বাইক কিনলেও হেলমেটের দাম বেশি বলে সেটা আর কেনেননি। পাম্পে দাঁড়াতেই সেখানকার কর্মী জয়ন্ত দাস হাতজোড় করে বললেন, নো হেলমেট, নো পেট্রোল চালু হয়েছে। হেলমেট না থাকলে আর পেট্রোল দেওয়া হবে না। আপনি যে হেতু সবে বাইক কিনলেন, তাই আজ আপনাকে তেল দিচ্ছি। আশা করছি এর পর থেকে হেলমেট পরেই আসবেন। সমিতবাবু কথা দিয়ে গেলেন, এ দিনই রথবাড়ি থেকে হেলমেট কিনবেন।

চিত্র ২: বুলবুলচণ্ডীর তিলক শীল বন্ধুকে বাইকের পেছনে বসিয়ে ইংরেজবাজার শহরের নেতাজি সুভাষ রোড ধরে জীবন বিমা অফিসের দিকে যাচ্ছিলেন। হেলমেটটি তার বাইকেই রাখা। এবং মাথা ফাঁকা। ফোয়ারা মোড়ে ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মী কুশ চৌধুরী তাঁর বাইক রোখেন। নিয়ে যান ট্রাফিক পোস্টে। সেখানে জরিমানার ফর্দ লেখার আগেই এক বর্ষীয়ান পুলিশ কর্মী বিশ্বনাথ চক্রবর্তী তিলকবাবুকে বলেন, হেলমেট বাইকের পেছনে ঝুলিয়ে রাখার জিনিস নয়। তা মাথায় থাকলে নিরাপদ, জীবন বড়ই মূল্যবান। এটা মেনে চলবেন।

বুধবার আনন্দবাজার পত্রিকায় মালদহের হেলমেটকে থোড়াই কেয়ার করার কথা প্রকাশের পরেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। সচেতনতা বাড়াতে পথে নেমেছেন পুলিশ থেকে পাম্প কর্মী। তারই দুই খণ্ড চিত্র ধরা পড়ল ইংরেজবাজার শহরের দুই প্রান্তে।

শুধু তাই নয়, বিনা হেলমেটের বাইক আরোহীদের ধড়পাকড়েও এ দিন পুলিশের কড়া মনোভাব দেখা গিয়েছে। ট্রাফিক পুলিশের সদর দফতর রথবাড়ি তো বটেই, ফোয়ারা মোড়েও এ দিন সকাল থেকে ধড়পাকড়ে শুরু হয়। খোদ ট্রাফিক পুলিশের ওসি মানবেন্দ্র দাস দাঁড়িয়ে থেকে বিনা হেলমেটের বাইক আরোহীদের ধরে জরিমানা করেছেন। পাশাপাশি সচেতনতার প্রচারও করেছেন তিনি।

যদিও হেলমেটহীন বাইক-আরোহীদের দাপট এ সবে কমেনি। পুলিশ জানিয়েছে, এই সচেতনতার প্রচার জারি থাকবে। অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবতোষ মণ্ডল বলেন, সচেতনতার মাধ্যমেই হেলমেট ছাড়া বাইক চালানো বন্ধ করতে হবে। আমরা প্রচার চালিয়ে যাব।

প্রায় গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়েই পেট্রোল পাম্পগুলিতে হেলমেটবিহীন বাইক আরোহীদের তেল দেওয়া কার্যত বন্ধ। কিন্তু ব্যতিক্রম মালদহ জেলা। মঙ্গলবারও ট্রাফিক পুলিশের সামনে দিয়েই হেলমেটহীনরা দাপিয়ে বেরিয়েছেন। যদিও বুধবার সকাল থেকেই সেই ছবিটা কিছুটা হলেও বদলাতে শুরু করেছে। পাম্পে পাম্পে কর্মীরা সচেতনতার প্রচার করছেন। ট্রাফিক পুলিশও ধড়পাকড় বাড়িয়েছে। নর্থ বেঙ্গল পেট্রোল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের মালদহ শাখার সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবারই পাম্পগুলিতে পুলিশ এসে বলে গিয়েছে নো হেলমেট নো পেট্রল বিষয়টি। আমরাও পাম্পগুলিকে বিষয়টি মানতে বলেছি। কিন্তু কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি থেকেই গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Biker Helmet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE