Advertisement
০৩ মে ২০২৪

এটিএম কার্ড হাতিয়ে পালায় অনির্বাণ

তদন্তে যে তথ্য মিলেছে তার ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, প্যান কার্ড বানানোর কাজ করে বিশেষ কিছু আয় ছিল না অনির্বাণ রায়ের। চার-পাঁচ বছর আগে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরির পর উত্তমবাবুর মাইনের টাকা থেকে তাকে টাকা দিত লিপিকা৷ টাকা না পেয়ে একবার ছুরি দেখিয়ে লিপিকার সোনার গয়না কেড়ে নিয়ে অনির্বাণ বিক্রি করে দিয়েছিল বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে লিপিকা৷

হেফাজত: লিপিকা মোহান্ত। ফাইল চিত্র।

হেফাজত: লিপিকা মোহান্ত। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০৩:১৫
Share: Save:

উত্তমের টাকার ভরসাতেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে তার খুনি। জলপাইগুড়িতে এলআইসির ডেভেলপমেন্ট অফিসার উত্তম মোহান্ত খুনের ঘটনার তদন্তে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। কারণ পালানোর আগে সে হাতিয়ে নিয়ে যায় উত্তমবাবুর মেয়ের এটিএম কার্ড। টাকাও তুলে নেয়।

তদন্তে যে তথ্য মিলেছে তার ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, প্যান কার্ড বানানোর কাজ করে বিশেষ কিছু আয় ছিল না অনির্বাণ রায়ের। চার-পাঁচ বছর আগে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরির পর উত্তমবাবুর মাইনের টাকা থেকে তাকে টাকা দিত লিপিকা৷ টাকা না পেয়ে একবার ছুরি দেখিয়ে লিপিকার সোনার গয়না কেড়ে নিয়ে অনির্বাণ বিক্রি করে দিয়েছিল বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে লিপিকা৷ শুধু তাই নয়, দ্বিতীয়বার পালিয়ে ফিরে আসার পর উত্তমবাবু লিপিকাকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলে লিপিকা তার মেয়ের থেকে টাকা নিয়ে অনির্বাণকে দিত বলেও তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ৷

২৯ জুন দুপুরে মৃত্যু হয় উত্তমবাবুর৷ এক আয়ুর্বেদিক চিকিৎসককে দিয়ে ডেথ সার্টিফিকেট লেখালেও ভেটাগুড়িতে থাকা উত্তমবাবুর দাদারা এই মৃত্যু নিয়ে থানা পুলিশ করতে যাচ্ছেন দেখে পালানোর ছক কষে অনির্বাণ৷ পুলিশের দাবি, সেই সময় অনির্বাণের হাতে খুব বেশি টাকা ছিল না৷ কিন্তু পালিয়ে থাকতে গেলে টাকার প্রয়োজন যে হবে তা তখনই মাথায় চলে আসে অনির্বাণের৷ সেজন্য পালিয়ে যাওয়ার আগে উত্তমবাবুর মেয়ের এটিএম কার্ড ও মোবাইল ফোনটি চুরি করে সে৷ পুলিশ জানিয়েছে, উত্তমবাবুর এটিএম কার্ডের পাস ওয়ার্ডও জানা ছিল অনির্বাণের৷ কিন্তু পালানোর সময় সেই এটিএম কার্ডটি হাতাতে পারেনি৷ তাঁর মেয়ের এটিএম কার্ড দিয়ে পরের দিনই কুড়ি হাজার টাকা তোলে সে৷ পরে অবশ্য উত্তমবাবুর মেয়ে কার্ডটি ব্লক করে দেন৷ তদন্তকারীদের কথায়, তারা নিশ্চিত, ওই টাকার ওপর ভরসা করেই জলপাইগুড়়ি ছেড়ে পালিয়েছে অনির্বাণ৷

এ দিকে পুলিশ সূত্রের খবর, হেফাজতে থাকা লিপিকা এই মুহূর্তে খুবই হতাশ। যত দিন যাচ্ছে ততই অনির্বাণের প্রতি মোহ ভাঙছে লিপিকার৷ রবিবার থানায় বসেই লিপিকা দাবি করেছিল, সে নির্দোষ৷ বরং অনির্বাণ এই ঘটনায় জড়িত৷ তাই তার ধরা পরা উচিত৷ পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন জেরার সময় এক তদন্তকারী অফিসারকে আচমকাই লিপিকা জিজ্ঞাসা করেন, এখনও কেন অনির্বাণ ধরা পড়ছে না? তারপরেই জানায়, অনির্বাণের সঙ্গে মুখোমুখি বসালেই সে প্রমাণ করে দেবে যে কোনও দোষ করেনি৷ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরাও চাই অনির্বাণ ও লিপিকাকে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করতে৷ তাই তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE