রেশনে গরিবদের নিম্নমানের চাল সরবরাহের অভিযোগে চালকল ব্যবসায়ীর একটি গুদাম সিল করে দিল খাদ্য দফতর।
রেশনে গরিবদের সরবরাহ করা আটার মান খতিয়ে দেখতে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। শনিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের ঘটনা। ওই দিন বিকেলে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উপস্থিতিতে রাজ্য খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা ওই গুদামে হানা দিয়ে নিম্নমানের চালের হদিশ পান। সেখানে ছিলেন খাদ্য সচিবও। সরেজমিনে তদন্তে মজুত আটার মানও খতিয়ে দেখতে উদ্যোগী হন। এর পরে চালের গুদামটি সিল করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই গুদামে সরকারের সংগৃহীত প্রায় ২,০০০ কুইন্টাল লেভি চাল মজুত ছিল। চালকল মালিকের থেকে ওই চাল সংগৃহীত বলে অভিযোগ।
ওই ব্যবসায়ীর সরবরাহ করা আটার মান খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়বাবু তিনি বলেন, “দক্ষিণ দিনাজপুরের উত্পাদিত উত্কৃষ্ট চাল দিয়ে গণবন্টন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত জেলার মানুষকে চাল সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। অথচ রেশনে নিম্নমানের চাল ও আটা সরবরাহ হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সে কারণে সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে বিভাগীয় অফিসারদের বলা হয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে রাজ্যের মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু হতে চলেছে। সেই প্রেক্ষাপটে চুরি রুখতে ব্যাপক কড়াকড়ি যে হবে সেই ইঙ্গিত মন্ত্রী দিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকেই।
সাধারণত ডিসেম্বরের শেষ থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কৃষকের উত্পাদিত নতুন ধান চালকল মালিকদের দিয়ে সহায়ক মূল্যে কিনেছে খাদ্য দফতর। চালকল মালিকদের গুদাম ভাড়া নিয়ে মজুত রাখে দফতর। প্রয়োজন মতো ডিস্ট্রিবিউটারের মাধ্যমে ওই চাল রেশন দোকানে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু খাদ্য দফতরের পদস্থ কর্তাদের ওই হানায় গুদামে মজুত দু’হাজার কুইন্টাল চাল খারাপ বলে প্রাথমিক পরীক্ষায় ধরা পড়েছে। ওই চালকল মালিক কর্তৃপক্ষের তরফে রঞ্জন পাল বলেন, “ওই চাল এক বছর আগের সংগৃহীত লেভি চাল গত এক বছর ধরে খাদ্য দফতর থেকে গুদামে মজুত রাখায় গুণগত মান খারাপ হতে পারে। গুদামটি সিল করে খাদ্য বিভাগ থেকে চালের গুণগত মান পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ওই ব্যবসায়ীর আটাকল থেকে দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ৩ লক্ষ ৮৬ হাজার ৫৮৯ জন বিপিএলভুক্ত বাসিন্দাকে রেশন দোকানের মাধ্যমে আটার প্যাকেট সরবরাহ করছে। জেলা খাদ্য দফতর জেলার বিপিএলভুক্ত গরিবেরা রেশন দোকান থেকে প্রতি সপ্তাহে পাঁচ টাকা দামে মাথাপিছু ৬৫০ গ্রাম আটার প্যাকেট সরবরাহ পান। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে প্যাকেটজাত ওই আটা নিম্নমানের বলে রাজ্য খাদ্য বিভাগে অভিযোগ পৌঁছয় বলে খাদ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। ফলে শনিবার জেলা সফরে গিয়ে বালুরঘাটে খাদ্য সুরক্ষা আইন প্রকল্প চালু নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করে ফিরে যাওয়ার পথে বিভাগীয় মন্ত্রীর সঙ্গে থাকা পদস্থ আধিকারিকের দলটি গঙ্গারামপুরে একই সঙ্গে ওই গুদামে হানা দেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী রঞ্জনবাবুর দাবি, “গুদামে ২০০০ মেট্রিক টন মজুত আটার প্যাকেট ভালো অবস্থায় রয়েছে। খাদ্য বিভাগের কর্তারা ওই আটার গুণগত মান ঠিক আছে কি না পরীক্ষা করবেন বলে জানিয়েছেন। তার পরেই ওই আটা রেশনে সরবরাহ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy