Advertisement
২৭ জুলাই ২০২৪
Siliguri

আলাদা রাজ্যের দাবি, গুরুংয়ের পাশে প্রদীপ

দলীয় সূত্রের খবর, বর্তমানে তিনি তৃণমূলের পাহাড় কমিটিতেও আছেন। দু’দিন আগে, কালিম্পঙে গুরুংয়ের সঙ্গে দেখা করেন প্রদীপ।

প্রদীপ প্রধান।

প্রদীপ প্রধান। — ফাইল চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:২৪
Share: Save:

দার্জিলিং পাহাড়ে তৃণমূলের অন্দরে আবারও ‘বেসুরো’ আওয়াজ। বিনয় তামাংয়ের পরে, এ বার কার্শিয়াঙের একদা দাপুটে নেতা তথা তৃণমূলের পাহাড়ের সহ-সভাপতি প্রদীপ প্রধান। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে আলাদা রাজ্যের দাবিতে এক জোট হয়ে লড়াইয়ের কথা বললেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, দার্জিলিং পাহাড় থেকে সমতলে— সব কিছুই ‘ব্যানার্জি, মুখার্জি বা বনসল’দের জন্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগও করলেন।

দলীয় সূত্রের খবর, বর্তমানে তিনি তৃণমূলের পাহাড় কমিটিতেও আছেন। দু’দিন আগে, কালিম্পঙে গুরুংয়ের সঙ্গে দেখা করেন প্রদীপ। সেখানে মোর্চার ডাকা বৈঠকে, সভাতেও ছিলেন। সেখানেই প্রকাশ্যে তিনি এ সব কথা বলেছেন। প্রদীপ বলেছেন, ‘‘এত দিনে কী হল আমাদের! তৃণমূলে থেকে শুধু কালীঘাট, নবান্ন, বালিগঞ্জ ঘুরেই সব শেষ। আবার পাহাড়েও একই জিনিস। তাই সকালের পথভোলা বিকেলে বাড়ি ফিরলে, কোনও সমস্যা নেই। আমি বরাবর মানুষের কথা বলেছি। গোর্খাল্যান্ড তৈরির জন্য় সবাইকে নিয়ে এগোতে হবে।’’ প্রদীপের এই বক্তব্যে পাহাড়ের তৃণমূলে অস্বস্তি ছড়িয়েছে। রাজ্যসভার সাংসদ তথা পাহাড় কমিটির সভানেত্রী শান্তা ছেত্রী বলেন, ‘‘যা বলার, রাজ্য নেতারা বলবেন। আমরা যেখানে যা জানানোর, জানিয়ে দিয়েছি।’’

অনীত থাপার যেমন কার্শিয়াং থেকে উত্থান, তেমনই বাম-আমলে কার্শিয়াঙের নেতা বলতে যাঁদের বোঝানো হত, প্রদীপ প্রধান তাঁদের অন্যতম। এক সময় তিনি বাম আন্দোলনের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। পরে, জিএনএলএফ হয়ে বিমল গুরংয়ের জনমুক্তি মোর্চার নেতা। সেখানেও দলের সহ-সভাপতি হয়েছিলেন। পরে, কেন্দ্রীয় কমিটির একাংশের সঙ্গে মত বিরোধের জেরে, তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। তবে গুরুংয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বরাবরই ভাল। ২০১৭ সালের আন্দোলনে তিনি শিলিগুড়িতে সপরিবার আশ্রয় নিয়েছিলেন। পাহাড়ে শান্তি ফিরলে কার্শিয়াং ফেরেন। এর পরে, বয়সজনিত কারণে কিছুটা চুপচাপ থাকলেও একদা দাপুটে ওই নেতাকে ফের গুরুংই সামনে নিয়ে এলেন।

প্রদীপ বলেন, ‘‘গুরুং পাহাড় ছেড়ে অন্যত্র থাকার সময় আমি সিকিমে ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে সমঝোতার হাত বাড়াই। একই জিনিস জিএনএলএফকে নিয়েও করা হয়েছিল। কার্যকর হয়নি। গুরুং নিজে এই আন্দোলন থেকে কোনও দিন সরবেন না বলেছিলেন। নেতা এমনই হয় বুঝে, আবার এক সঙ্গে এলাম।’’ তাঁর অভিযোগ— ‘‘পাহাড়বাসীর জন্য কী হচ্ছে? চা-বাগান বাইরের লোকজনের, সমস্ত হোটেল কলকাতার বাসিন্দাদের লিজ়ে নেওয়া। এখানকার মানুষ উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছেন।’’

তৃণমূলের অনেক নেতা মনে করছেন, এ বার বিনয়, প্রদীপদের মতো রাজনীতিককে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং জেলা কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিয়ে ভাবা জরুরি। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘বিনয় তামাং তৃণমূলের টিকিটে জেতা জিটিএ সদস্য। প্রদীপ দলের সহ-সভাপতি। অথচ, দু’জনে গুরুং, অজয় এডওয়ার্ডদের পাশে গিয়ে রাজ্যভাগের সওয়াল শুরু করলেও, দলের রাজ্য নেতারা তা কী ভাবে দেখছেন, তা পরিষ্কার নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Bimal Gurung
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE