Advertisement
E-Paper

স্কুলের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন

মাধ্যমিকের পর উচ্চ মাধ্যমিকেও মেধা তালিকায় জায়গা পেল না দার্জিলিং তথা শিলিগুড়ির পড়ুয়ারা। তাতে স্কুলগুলিতে পড়াশোনার মান, পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্লাসের পড়াশোনা সঠিক ভাবে না হওয়ায় হত দরিদ্র ছেলেমেয়েদেরও গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যেতে হচ্ছে বলে অনেকেই অভিয়োগ তুলেছেন। স্কুলের পড়াশোনার উপর নির্ভর করে তারা যে ভাল ফল করতে পারবেন না ছাত্রছাত্রীদের কাছে তা স্পষ্ট।

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৬ ০২:৫৭
ফল জানার পর উচ্ছ্বাস ছাত্রীদের। শিলিগুড়ির একটি স্কুলে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

ফল জানার পর উচ্ছ্বাস ছাত্রীদের। শিলিগুড়ির একটি স্কুলে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

মাধ্যমিকের পর উচ্চ মাধ্যমিকেও মেধা তালিকায় জায়গা পেল না দার্জিলিং তথা শিলিগুড়ির পড়ুয়ারা। তাতে স্কুলগুলিতে পড়াশোনার মান, পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্লাসের পড়াশোনা সঠিক ভাবে না হওয়ায় হত দরিদ্র ছেলেমেয়েদেরও গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যেতে হচ্ছে বলে অনেকেই অভিয়োগ তুলেছেন। স্কুলের পড়াশোনার উপর নির্ভর করে তারা যে ভাল ফল করতে পারবেন না ছাত্রছাত্রীদের কাছে তা স্পষ্ট। কেন না ক্লাসে পড়াশোনায় সিলেবাস শেষ করানোর বালাই নেই। এমনকী বছরভর রাজনৈতিক ডামাডোলের জেরে পড়াশোনারও ক্ষতি করছে বলে ছাত্রছাত্রী থেকে পড়ুয়া, অভিভাবকদের অনেকেই মনে করছেন।

স্কুল কলেজগুলিতে শিক্ষার পরিবেশ, পড়াশোনার মান নিয়ে উঠকন্ঠা পড়ুয়া অভিভাবক অনেকেরই। স্থানীয় কলেজে না পড়ে অনেকেই তাই বাইরে অন্তত কলকাতায় ভাল কলেজে ভর্তির জন্য চেষ্টা করবেন বলেই জানিয়েছেন। শহরের স্কুলগুলি থেকে মেঠা তালিকায় কেউ উঠে না আসায় চিন্তিত মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘এটা খুবই চিন্তার। এটা নিয়ে আমাদের সকলকেই ভাবতে হবে। কোথায় সমস্যা হচ্ছে। স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা ঠিক মতো হচ্ছে কি না? স্কুল পরিচালন সমিতিতে এ জন্যই অভিভাব প্রতিনিধিদের রাখা বা বলার জায়গা দরকার।’’

জেলায় সম্ভাব্য সেরা শিলিগুড়ি গার্লস স্কুলের ছাত্রী অন্তরীপা মণ্ডল পেয়েছে ৪৭৫। অন্তরীপা যাদবপুর বা প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তির জন্য চেষ্টা করছেন। মেধা তালিকায় শিলিগুড়ি পিছিয়ে পড়ার জন্য পরিবেশ পরিস্থিতি অনেকখানি দায়ী বলে মনে করেন তাঁর মা তথা পেশায় জলপাইগুড়ি বিএড কলেজের শিক্ষিকা কাকলি দেবী। তিনি বলেন, ‘‘গৃহশিক্ষক ছাড়া পড়া হবে না এ ধরনের একটা ব্যাপার বিভিন্ন স্কুলগুলির পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেই সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠেছে। এটা কেন হবে? স্কুলের পড়ানোটাই এমন হবে যাতে গৃহশিক্ষকের কাছে কেউ যেতে না পারলেও তার সমস্যা না হয়। তার উপর লাগাম ছাড়া ছুটি-ছাটায় শিক্ষা ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।’’ তাঁর মতে শিলিগুড়িতেও প্রতিভা রয়েছে। তবে রাজনীতি সেটাকে খণ্ডখণ্ড করে দিচ্ছে। অন্তরীপা মনে করেন রাজনীতি থেকেও শিক্ষার অনেক কিছু থাকে। কিন্তু এখন যে রাজনীতিটা হচ্ছে তার মধ্যে শিক্ষার কিছু থাকছে না। তবে কলকাতাতেও না পরবর্তীতে দিল্লি বা রাজ্যের বাইরে অন্যত্র কোথাও পড়াশোনা করতে চান অন্তরীপা।

শিলিগুড়ি বয়েজ হাই স্কুল, শিলিগুড়ি নেতাজি উচ্চ বিদ্যালয়, নেতাজি গার্লস, তরাই তারাপদ আর্দশ বিদ্যাপীঠ, জ্যোৎস্নাময়ী স্কুলের মতো শহরের নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি থেকেও মেধা তালিকায় কেউ নেই। ওই সমস্ত স্কুলের পড়ুয়াদের অনেকেই জানিয়েছেন তাঁরা গৃহশিক্ষকের কাছে না পড়লে ফল আরও খারাপ করতেন। নেতাজি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চণ্ডিব্রত চক্রবর্তীও স্কুলে সিলেবাস শেষ করতে না পারার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আমরা যতটা পারছি সাহায্য করছি। উচ্চ মাধ্যমিকের যে সিলেবাস তা পুরোটা শেষ করা কঠিন হচ্ছে।’’ মেয়ের রেজাল্ট নিতে স্কুলে এসেছিলেন স্বপন বড়ুযা। ডাক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী।

মেঠা তালিকায় শহরের পড়ুয়ারা পিছিয়ে পড়া নিয়ে তিনিও উদ্বিগ্ন। স্কুলের পড়াশোনার উপরে সব চেয়ে বেশি জোর দেওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।

HS Result Student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy