Advertisement
E-Paper

ঐতিহ্যে আজও বেঁচে রয়েছে রাজবাড়ির পুজো

রাজা নেই সে অনেককাল হল। নেই কোনও রাজত্বও। বিক্রি হয়ে গিয়েছে রাজবাড়িটিও। কিন্তু বন্ধ হয়নি মালদহের চাঁচল রাজবাড়ির পুজো। রাজবাড়ির সেই প্রাচীন পুজোর দায়িত্বে এখন ট্রাস্টি বোর্ড। বাজেট সাকুল্যে ন’হাজার টাকা। কিন্তু ঐতিহ্যে আজও অমলিন এই রাজবাড়ির পুজোর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০০
চণ্ডী মণ্ডপে শুরু হয়ে গিয়েছে ঘট পুজো। — নিজস্ব চিত্র

চণ্ডী মণ্ডপে শুরু হয়ে গিয়েছে ঘট পুজো। — নিজস্ব চিত্র

রাজা নেই সে অনেককাল হল। নেই কোনও রাজত্বও। বিক্রি হয়ে গিয়েছে রাজবাড়িটিও। কিন্তু বন্ধ হয়নি মালদহের চাঁচল রাজবাড়ির পুজো।

রাজবাড়ির সেই প্রাচীন পুজোর দায়িত্বে এখন ট্রাস্টি বোর্ড। বাজেট সাকুল্যে ন’হাজার টাকা। কিন্তু ঐতিহ্যে আজও অমলিন এই রাজবাড়ির পুজোর। ৩০০ বছরের পুরানো ঐতিহ্য মেনে শনিবার কৃষ্ণা নবমী তিথিতে ঘট ভরে পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে পাহাড়পুর চন্ডীমন্ডপে। রাজবাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে পাহাড়পুরের ওই পুজোই রাজবাড়ির পুজো বলে পরিচিত। এখনকার বাজারে ন’হাজার টাকায় পুজো করা কষ্টকর হলেও ঐতিহ্যে কোনও খামতি থাকে না বলে জানাচ্ছেন ট্রাস্টি বোর্ডের স্থানীয় পর্যবেক্ষক পিনাকীজয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছর স্থানীয় বাসিন্দারা সাহায্য করেন বলেই পুজো হচ্ছে।’’ দু’বছর আগে বরাদ্দ আরও কম ছিল বলে জানান পিনাকীজয়বাবু।

৩০০ বছর আগে এই পুজো শুরু হয়েছিল হরিশ্চন্দ্রপুরে সেকসাতন গ্রামে। পরে তা পাহাড়পুরে স্থানান্তরিত হয়। এখন পুজো হয় স্থায়ী চণ্ডীমণ্ডপে। দেবী এখানে চতুর্ভুজা সিংহবাহিনী। পুরানো রীতি মেনে কৃষ্ণা নবমীর দিন তামার ঘট ভরে দেবীর আরাধনা শুরু হয়। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় মণ্ডপে বসানো হয় মৃন্ময়ী দেবী প্রতিমাকে। সপ্তমীর ভোরে ঠাকুরবাড়ি থেকে অষ্টধাতুর প্রতিমা শোভাযাত্রা করে নিয়ে গিয়ে বসানো হয় পাহাড়পুরের চণ্ডীমণ্ডপের মৃন্ময়ী দেবী প্রতিমার পাশে। জানা যায়, চণ্ডীমন্ডপের উল্টোদিকে সতীঘাটে রাজ পরিবারের এক মহিলা স্বামীর চিতায় মৃত্যু বরণ করেছিলেন। কথিত আছে, স্বপ্নাদেশ পেয়ে রাজ পরিবারের পূর্ব পুরুষরা সতীঘাট থেকে অষ্টধাতুর তৈরি ওই দেবী প্রতিমা উদ্ধার করেছিলেন। রাজবাড়ি লাগোয়া ঠাকুরবাড়িতে রাখা সেই অষ্টধাতুর প্রতিমাই পুজোর দিনগুলি চণ্ডীমন্ডপে রাখা হয়। সেখানে প্রতিদিন পুজোর পাশাপাশি সন্ধ্যায় বসে চণ্ডীপাঠের আসর। দশমীর সন্ধ্যায় দেবী বিসর্জন পর্যন্ত তা চলে। এলাকার মানুষের বিশ্বাস পাহাড়পুরের দেবী তাঁদের সুরক্ষিত রেখেছেন। সেই বিশ্বাসে ভর করেই ভিড় জমান তাঁরা। আবার দশমীর সন্ধ্যায় বিসর্জনে দেবীকে হ্যারিকেন জ্বেলে বিদায় জানানোর প্রথা আজও মেনে চলেন স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা। আড়ম্বরের বালাই না থাকলেও নিষ্ঠা, ভক্তি ও ঐতিহ্যের ওই পুজোতে ইতিহাস ছুঁতে চান দর্শনার্থীরা।

Rajbari Puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy