রাজু বিস্তা। —ফাইল চিত্র।
দার্জিলিঙের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের প্রশ্ন নিয়ে দিল্লি আপাতত উচ্চবাচ্য না হওয়ায় এ বার সামনে এল ১১ জনজাতির তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতির দাবি। গত রবিবার মিরিকের টিংলিঙের একটি ফুটবল প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা ওই আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁকে সমর্থন করেছেন দার্জিলিঙের বিজেপি বিধায়ক নীরজ জিম্বাও। সাংসদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার ১১ জনজাতির বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। এরা তফসিলি উপজাতির তালিকায় ঢুকে যাবে। যা শুনে, পাহাড়ের বিরোধীরা বলছেন, ‘‘পাহাড় সমস্যায় স্থায়ী সামাধান দূর্-অস্ত বুঝে এ বার ভোটের আগে ১১ জনজাতির প্রসঙ্গ সামনে আনা হচ্ছে।’’
বিজেপি-বিরোধী প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ প্রধান অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘সাংসদ সত্যিই ঘুরছেন। বিভিন্ন দাবির আশ্বাসও দেন। কিন্তু উনি কী করবেন, কেন্দ্রের যাঁরা দায়িত্বে বসে রয়েছেন, তাঁরা তো কিছু বলেননি। আর নতুন করে বলছেনও না। ভোট আসছে। তাই নানা কিছু তো বলতেই হবে।’’
দলীয় সূত্রের খবর, দার্জিলিং কেন্দ্রের টিকিট নিয়ে বিজেপির অন্দরেই ‘টানাপড়েন’ চলছে। সমতলে নিজেকে প্রায় প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরেছেন দেশের প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। তিনি দার্জিলিং পাহাড়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে কিছু কাজ করে বর্তমানে সমতলে মনোনিবেশ করেছেন। বিভিন্ন আড্ডা, অনুষ্ঠানে তিনি শিলিগুড়িকে ‘স্মার্ট সিটি’ করার প্রয়োজনীয়তা থেকে উন্নয়নের নানা প্রসঙ্গ টেনে আনছেন। তাঁর সঙ্গে থাকছেন বিজেপির জেলার একটি গোষ্ঠী। সেখানে বর্তমান সাংসদ বেশি করে পাহাড়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। জিএনএলএফের সমর্থন থেকে দলের পাহাড় কমিটি যে তাঁর পাশে রয়েছে, তা তিনি দলের অন্দরে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
জোটসঙ্গী দলের নেতা এবং দলের পাহাড়ের সভাপতিকে নিয়ে তিনি দিল্লিও দিয়েছেন। আর বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি উন্নয়নের সঙ্গে পাহাড়ের দাবিদাওয়ার প্রসঙ্গও টেনে আনছেন। মিরিকে ফুটবল প্রতিযোগিতায় ফাইনালে গিয়ে তিনি জনজাতির প্রসঙ্গে সরকারের সদর্থক মনোভাবের কথা বলেছেন। আবার ক’দিন আগে পাহাড়েই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ফিরে দিল্লি সরকার পাহাড়ের দাবিদাওয়া নিয়ে কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন। এ দিনও সাংসদ বাগডোগরা বিমানবন্দরের নকশা, বরাদ্দ এবং কাজ শুরুর কথা প্রচার করেছেন। পাহাড়ের নেতারা মনে করছেন, দুই নেতা জেলার দু’দিকে থেকেও নিজেদের মতো করে নানা প্রচার করে চলেছেন। তবে শ্রিংলার থেকে রাজু বিস্তার কাছে চ্যালেঞ্জ বেশি রয়েছে। কারণ, গত ১৫ তো বটেই, তাঁর পাঁচ বছরের আমলেও পাহাড়ের দাবিদাওয়া পূরণ হয়নি।
বিজেপির জোটসঙ্গী জিএনএলএফের সেক্রেটারি জেনারেল তথা বিজেপি বিধায়ক নীরজ জিম্বারও রাজু বিস্তার সুরে পাহাড় নিয়ে বাসিন্দাদের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে দিল্লির বৈঠক ‘গোপন’ বলে, কী আলোচনা হবে তা জানাননি। এতে পাহাড়ের শাসক দলের নেতারা বলছেন, ‘‘ওঁদের আর কিছু বলার নেই। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য আবার আশ্বাসের বন্যা শুরু হয়েছে। পাহাড়বাসী আর ভুল করবেন না বলেই মনে হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy