Advertisement
E-Paper

বন্দি-পুলিশে সেতু গড়ল রাখিবন্ধন

রাখির সুতোয় বাঁধা পড়লেন বিচারাধীন বন্দি, পুলিশ কর্মী এবং আইনজীবীরা। শনিবার সেই দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন কোচবিহার জেলা আদালত চত্বরে আসা বিচারাধীন বন্দিদের আত্মীয় পরিজন থেকে সাধারণ বাসিন্দারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৫ ০২:৪৬
সম্প্রীতির বার্তা। —নিজস্ব চিত্র।

সম্প্রীতির বার্তা। —নিজস্ব চিত্র।

রাখির সুতোয় বাঁধা পড়লেন বিচারাধীন বন্দি, পুলিশ কর্মী এবং আইনজীবীরা। শনিবার সেই দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন কোচবিহার জেলা আদালত চত্বরে আসা বিচারাধীন বন্দিদের আত্মীয় পরিজন থেকে সাধারণ বাসিন্দারা। এমন আকস্মিক প্রাপ্তিযোগের আবেগে তাঁদের অনেকে ঘনঘন চোখের জল মুছলেন। কোচবিহার জেলা তৃণমূল আইনজীবী সেলের তরফে ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ওই সেলের কোচবিহার জেলা কার্যকরী সভাপতি শিবেন রায় বলেন, “বিচারাধীন বন্দিদের অনেকে রাখি উৎসবে সামিল হতে না পারায় আক্ষেপ করেন। তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতেই এই ব্যবস্থা করা হয়। পরে পুলিশ, উপস্থিত আমজনতা থেকে সহকর্মীদেরও রাখি পড়ানো হয়েছে।”

উদ্যোক্তারা জানান, শনিবার দুপুরে কোচবিহার জেলা আদালত চত্বর ছিল প্রায় অন্য দিনের মতোই স্বাভাবিক। জিআর অফিসের পুলিশ লকআপে বিচারাধীন বন্দিরাও ছিলেন নিজের মতো। দেখা করতে আসা আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে তাঁদেরই দু’একজন আলোচনা করছিলেন প্রিয়জনের হাতে রাখি না পড়াতে পারা নিয়ে। তাঁরাও যে রাখি পড়তে না পেরে মনমরা, সে কথাও বলাবলি করছিলেন কেউ কেউ। সহকর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পরেই তড়িঘড়ি বিচারধীন বন্দিদের রাখি পড়ানোর উদ্যোগ নেন আইনজীবী সেলের সদস্যরা। জিআর কোর্টের পুলিশ লকআপে সে সময় উপস্থিত সব বন্দিদেরই একেএকে রাখি পড়িয়ে দেন তাঁরা। বিচারাধীন বন্দি খোলটার বাসিন্দা গোপাল রায় রাখি পড়তে গিয়ে রীতিমতো আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, “প্রতি বছর রাখিতে কত আনন্দ হয়। এ বার সেই মজাটাই পাব না বলে ধরে নিয়েছিলাম। আচমকা এ ভাবে আমার হাতে উকিলবাবুরা রাখি পড়াতে আসায় দারুণ আনন্দ হচ্ছে। ধর্ষণের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় প্রায় সাত মাস জেলে থাকার যন্ত্রণাও কমল।”

গোপালবাবুর স্ত্রী পবিত্রা রায় এ দিন আদালত চত্বরে এসেছিলেন। আবেগ তাড়িত হয়ে পড়া স্বামীকে দেখে চোখের জল সামলে পবিত্রাদেবী বলেন, “শেষ পর্যন্ত ওকে বঞ্চিত হতে হল না।” সুটকাবাড়ির মজিদুল হক, আলিপুরদুয়ারের বিপ্লব সরকারের মতো বিচারাধীন বন্দিদেরও এ দিন জিআর কোর্টের পুলিশ লকআপে খানিকটা সময় রাখা হয়। রাখি উৎসবে সামিল হতে পেরে তাঁদের চোখেমুখেও স্পষ্ট হয়ে ওঠে খুশির ছাপ। কোচবিহার জেলা আদালত চত্বরের ওই জিআরও অফিসের এক আধিকারিক পলাশ দত্ত বলেন, “ভাল উদ্যোগ। আমাদের অনেককেও ওঁরা রাখি পড়িয়েছেন।” অন্য এক পুলিশকর্মী গোপাল ছেত্রীর কথায়, “কাজের মধ্যেও রাখি দারুণ প্রাপ্তি।”

উচ্ছ্বসিত আয়োজকেরা পরে উপস্থিত বাসিন্দাদের অনেকের হাতেও রাখি পড়িয়েদেন। সেলের এক সদস্যের কথায়, “আমরা তো এমনটাই চেয়েছিলাম। রাখির আনন্দ, বন্ধন হোক সবার।” তা হলে জেল গিয়ে বন্দিদের জন্য কেন এমন আয়োজন হল না? আইনজীবীদের এক জন বলেন, “ছাড়পত্র আদায়ের জন্য বেশি সময় ছিল না। আদালত চত্বরের পুলিশ লকআপে ব্যবস্থা হয়।” এ দিন তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস, বিজেপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফেও কোচবিহারে রাখি বন্ধনের আয়োজন করা হয়। পথচারীদের রাখি পড়ায় বিভিন্ন সংগঠন। কোচবিহার কাছারি মোড়ে প্রশাসনিক উদ্যোগে রাখি বন্ধনের অনুষ্ঠান হয়।

Raksha Bandhan Jail cooch behar court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy