Advertisement
০৪ মে ২০২৪
North Bengal University

উপাচার্যের ‘চাপেই’ বেতন বৃদ্ধি রদের নির্দেশ, দাবি রেজিস্ট্রারের

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি করে আন্দোলনরত ‘সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি’র সঙ্গে আলোচনায় এমনই দাবি করলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত।

বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়।

বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। নিজস্ব চিত্র।

সৌমিত্র কুন্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৪ ০৮:৩৮
Share: Save:

আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের নির্দেশ না-মানলে, তাঁকে (ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার) সাসপেন্ড করা হবে জানিয়েছিলেন উপাচার্য। তার পরেই ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী কর্মী, শিক্ষকদের ১০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির নির্দেশিকা বাতিল করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসারকে নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে উপাচার্য সিএম রবীন্দ্রনের নির্দেশে অস্থায়ী শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্তও বাতিল করতে বলেন। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি করে আন্দোলনরত ‘সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি’র সঙ্গে আলোচনায় এমনই দাবি করলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে হোয়াট্‌সঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে উপাচার্য সেই নির্দেশ কার্যকর করতে বলেছেন দাবি করে, তা নিয়ে আচার্য তথা রাজ্যপাল এবং উপাচার্যের বিরুদ্ধে ‘অনৈতিক’ কাজের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে কর্মী সংগঠন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দাবি করেন, তিনি উপাচার্যকে বোঝাতে চেয়েছিলেন, হাসিমুখে আলোচনায় বেতন বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা রদ করলে, কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাবেন। তা নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে ‘মতান্তর’ও হয়েছে। তখন তিনি হোয়াট্‌সঅ্যাপে নির্দেশ পালন করতে বলেন। এ ভাবে দেওয়া নির্দেশ কতদূর গ্রহণযোগ্য, আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ফিনান্স অফিসারকে বেতন বৃদ্ধির নির্দেশ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাতিল করতে বলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ওই দিন থেকেই আন্দোলনে নামেন কর্মীরা। তবে এখনও বাতিলের কোনও নির্দেশিকা প্রকাশ করেননি ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার। তিনি দিল্লি থেকে এ দিন ফিরে আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছিলেন। সেই মতো আলোচনায় বসা হয় প্রশাসনিক ভবনের করিডরে।

এ দিন আন্দোলনকারীরা প্রশাসনিক দফতর বন্ধ করে রাখেন। শেষে দফায় দফায় ফিনান্স অফিসার, ডিন, ক্যাম্পাস ইন-চার্জ, পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক-সহ শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা করে জানানো হয়, আজ, শুক্রবার সমস্ত বিভাগীয় প্রধান এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক হবে। উপাচার্যকেও তা জানানো হয়েছে। পরে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘উপাচার্যের নির্দেশ আমাকে মানতে হয়েছে।’’ ইতিমধ্যেই পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার। কিন্তু উপাচার্য তা গ্রহণ না করে আগামী ৫ মার্চ পর্যন্ত তাঁকে কাজ চালাতে বলেছেন। সেই মতো তিনি কাজ চালাচ্ছেন। বহু চেষ্টা করেও এ দিন উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

আন্দোলনকারী সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক রঞ্জিত রায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে বলেন, ‘‘উপাচার্য আপনার সম্মানহানি করছেন। উনি অন্তরালে রয়েছেন। আপনাকে দিয়ে নোংরামি করাচ্ছেন। আমরা আপনাদের কখনও অসম্মান করিনি। কিন্তু আমাদের দাবি মানা না হলে, তার জন্য ক্যাম্পাসে অরাজক পরিস্থিতি হলে, আপনি দায়ী থাকবেন।’’ আন্দোলনকারী সংগঠনের মুখপাত্র তন্ময় বাগচী বলেন, ‘‘সরকারি বিধি ভেঙে হোয়াট্‌সঅ্যাপ মেসেজে পাঠিয়ে উপাচার্য নির্দেশ দিচ্ছেন, ভয় দেখাচ্ছেন, যাতে কর্মীদের দাবি দাবিয়ে রাখা যায়। আচার্য সংবিধানকে উপেক্ষা করে এ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের শাসন কায়েম করতে চাইছেন। আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি। বর্ধিত বেতন প্রদানের যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা পালন করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE