Advertisement
১৬ মে ২০২৪

জনে জনে বলেও পেনশন মেলেনি পিপি রাইয়ের স্ত্রীর

এক সময়ে পুণ্যপ্রকাশ রাই (পিপি) ছিলেন দার্জিলিঙের ডানপন্থী রাজনীতির প্রধান মুখ। জনপ্রিয় সংগঠক ও শিক্ষক হওয়ার সুবাদে পিপি রাইকে ১৯৬৭ সালে বিধান পরিষদের সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়েছিল।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৭ ০২:০০
Share: Save:

এক সময়ে পুণ্যপ্রকাশ রাই (পিপি) ছিলেন দার্জিলিঙের ডানপন্থী রাজনীতির প্রধান মুখ। জনপ্রিয় সংগঠক ও শিক্ষক হওয়ার সুবাদে পিপি রাইকে ১৯৬৭ সালে বিধান পরিষদের সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়েছিল। সে সময়ে তাঁকে ঘিরেই ঘুরপাক খেত পাহাড়ের রাজনীতি-প্রশাসনও। কিন্তু, মৃত্যুর পরে সেই জনপ্রিয় পাহাড়ি নেতার পেনশনের টাকা না পেয়ে জনে-জনে আর্জি জানাতে হচ্ছে তাঁর অশীতিপর স্ত্রী হরিমায়া রাইকে।

নেতা-আমলাদের আশ্বাস মিলেছে। কিন্তু, পিপি রাইয়ের মৃত্যুর পরে বছর ঘুরতে চললেও এখনও তাঁর পেনশনের টাকা তাঁর স্ত্রীর নামে বরাদ্দ হয়নি। ক্ষুব্ধ হরিমায়াদেবী বলেন, ‘‘যে মানুষটা সারা জীবন অন্যের জন্য খাটলেন। হাতে ধরে কত নেতা তৈরি করলেন। তাঁর হাতে তৈরি কত নেতা এখন রাজনীতিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। অথচ, ওঁর পেনশনটা আমার নামে করার কাজটা করে দিচ্ছেন না। রাজনীতিতে কি এমনই হয়!’’

ইতিমধ্যেই ঘটনাটি শোনার পরে কংগ্রেসের মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক তথা দার্জিলিং সমতলের সভাপতি শঙ্কর মালাকার বিধানসভার অধ্যক্ষকে বিষয়টি জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘পিপি রাই আমাদের দলের জেলা সভাপতি ছিলেন। তখন আমি স্রেফ সদস্য ছিলাম। ওঁর কাছে দলের অনেক ঋণ রয়েছে। আমি হরিমায়াদেবীর বিষয়টি নিয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষের দ্বারস্থ হব। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইব।’’

কংগ্রেস সূত্রের খবর, পেশায় শিক্ষক পিপি রাই ছাত্র জীবন থেকেই জনপ্রিয় ছিলেন। কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরে দার্জিলিং পাহাড়ি এলাকায় সংগঠন গড়ে তোলায় তাঁর অবদান সকলেই মানেন। একটা সময়ে ইন্দিরা গাঁধীর আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন তিনি।

ষাটের দশকে পশ্চিমবঙ্গের বিধান পরিষদের সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। পরে ১৯৭৭ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পিপি রাই কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলার অন্যতম নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত বছর ২২ জুলাই দার্জিলিঙের সিংমারির বাস ভবনে তাঁর মৃত্যু হয়। বিধান পরিষদের প্রাক্তন সদস্য হিসেবে তিনি পেনশন পেতেন। তাঁর মৃত্যুর পরে স্ত্রীর প্রাপ্য পেনশন চেয়ে আর্জি জানান হরিমায়াদেবী। দার্জিলিঙের বিধায়ক অমর রাইয়ের মাধ্যমে তা পাঠানো হয় কলকাতায়।

প্রয়াত কংগ্রেস নেতার মেয়ে অঞ্জলিদেবী বলেন, ‘‘মা এখন শিলিগুড়িতে থাকেন। খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। আমি মিরিকে থাকি। সেখান থেকে নিয়মিত শিলিগুড়ি যাতায়াত করতে পারি না। তাই যত ক্ষণ না বাবার পেনশনটা মায়ের নামে না হয়, তত ক্ষণ দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Wife P P Rai Pension
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE