Advertisement
০৫ মে ২০২৪

সাপের ভয়ে স্কুল বন্ধ

কারণ ক্লাসরুমের মেঝেতে কিলবিল করছে অজস্র কেঁচো, জোক ও শুঁয়োপোকা। যত্রতত্র ঘুড়ে বেড়াচ্ছে সাপ। জলে ডুবে পচে গিয়েছে মিডডে মিলের ৫০ কেজি চাল, ১০ কেজি ডাল, মশলাপাতি ও আনাজ।

বন্যা: ক্লাস ঘরে জল ঢুকে পচেছে মিড ডে-র চাল। —নিজস্ব চিত্র।

বন্যা: ক্লাস ঘরে জল ঢুকে পচেছে মিড ডে-র চাল। —নিজস্ব চিত্র।

গৌর আচার্য
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৭ ০২:৫৮
Share: Save:

বন্যায় ভেসে গিয়েছিল বাড়িঘর, স্কুল। শিকেয় উঠেছিল পড়াশোনা। তাই জল নামতেই স্কুলের পথে পা বাড়িয়ে ছিল দিশা, বিবেকরা। কিন্তু স্কুলে ঢোকার সাহস পায়নি খুদে পড়ুয়ারা।

কারণ ক্লাসরুমের মেঝেতে কিলবিল করছে অজস্র কেঁচো, জোক ও শুঁয়োপোকা। যত্রতত্র ঘুড়ে বেড়াচ্ছে সাপ। জলে ডুবে পচে গিয়েছে মিডডে মিলের ৫০ কেজি চাল, ১০ কেজি ডাল, মশলাপাতি ও আনাজ। জলে ডুবে বিকল হয়ে গিয়েছে পানীয় জল সরবরাহের মোটরচালিত পাম্প। বন্যার জল নামার পর এই পরিস্থিতিতে রায়গঞ্জের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শক্তিনগর এলাকার স্নেহলতাদেবী অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঠনপাঠন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

উত্তর দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতির জেরে দু’দফায় গত ১৬ অগস্ট থেকে ২৩ অগস্ট পর্যন্ত সমস্ত সরকারি স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশিকা জারি করে প্রশাসন। ইটাহার ব্লক বাদে রায়গঞ্জ সহ বাকি ৮টি ব্লকে বন্যার জল নেমে গিয়েছে। সেই কারণে, সরকারি নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার থেকে ইটাহার ব্লক বাদে রায়গঞ্জ ব্লক সহ বাকি ৮টি ব্লকের সমস্ত সরকারি স্কুল খোলার নির্দেশ জারি করে প্রশাসন। কিন্তু পরিকাঠামো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় স্কুলে পঠনপাঠন চালু করতে পারেননি ওই প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে গত দু’দিন ধরে পড়ুয়ারা স্কুলে গিয়েও ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির দুই পড়ুয়া দিশা গুপ্তা ও বিবেক পাসোয়ান বলে ‘‘সাপ ঘুরে বেড়াচ্ছে। ক্লাসরুম নোংরা। তাই স্কুলে গিয়েও বাড়ি ফিরে আসি।’’

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক বিজয় রায়চৌধুরীর দাবি, ‘‘বন্যার জল নামার পর বর্তমানে স্কুলের যা পরিবেশ তাতে কোনওমতেই পড়ুয়ারা সুরক্ষিত নয়। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পঠনপাঠন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি।’’ তিনি জানান, পুরসভা ও প্রশাসনের কাছে সাফাইকর্মী নিয়োগ করে স্কুলচত্বর সাফাই করা, ব্লিচিং পাউডার, কীটনাশক ও কার্বোলিক অ্যাসিড ছড়ানোর ব্যবস্থা করা, মিডডে মিলের চাল বরাদ্দ করা ও পানীয় জল সরবরাহের মোটরচালিত পাম্পমেশিন মেরামতের অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও কাজ হয়নি।

ওই স্কুলে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ৭০ জন পড়ুয়া রয়েছে। শিক্ষক রয়েছেন দু’জন। দু’টি পাকা ক্লাসরুম সহ মিড-ডে মিল রান্নার একটি টিনের ঘর ও একটি স্টোর রুম রয়েছে। বন্যার জেরে প্রায় এক সপ্তাহ প্রতিটি ঘরে সাড়ে চার ফুট উচ্চতায় জল দাঁড়িয়েছিল। জেলাশাসক আয়েশা রানি বলেন, ‘‘প্রশাসন ও পুরসভার যৌথ উদ্যোগে দু’একদিনের মধ্যেই ওই স্কুলের পঠনপাঠনের স্বাভাবিক পরিবেশ ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

school Flood Snake
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE