Advertisement
০৪ মে ২০২৪
তারকাঁটায় কড়াকড়ি

তল্লাশি চলছে ট্রেনের কামরায়

ফের বিস্ফোরণ বাংলাদেশে। তার পরেই উত্তরবঙ্গের সব জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন, বাসস্ট্যান্ডেও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। ট্রেনেও চলেছে অতিরিক্ত নজরদারি। তারই মধ্যে কোথাও আবার ঢিলেমির অভিযোগও শোনা যাচ্ছে। কোথাও উঠছে তল্লাশির নামে হয়রানির অভিযোগও। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির সেই ছবি একনজরে ঘুরে দেখল আনন্দবাজার।মালদহ জেলা সদরের রথবাড়ি, সুকান্ত মোড়, স্টেশন চত্বর সহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ ব্লক ও মহকুমা সদরগুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ওই এলাকায় সাদা পোশাকের পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।

এবং কাঁটাতারহীন। তাই বাড়ানো হয়েছে সীমান্ত রক্ষীর নজরদারি। দিনহাটা মহকুমার সীমান্ত এলাকায়। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

এবং কাঁটাতারহীন। তাই বাড়ানো হয়েছে সীমান্ত রক্ষীর নজরদারি। দিনহাটা মহকুমার সীমান্ত এলাকায়। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৬ ০১:২০
Share: Save:

মালদহ স্টেশন

মালদহ জেলা সদরের রথবাড়ি, সুকান্ত মোড়, স্টেশন চত্বর সহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ ব্লক ও মহকুমা সদরগুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ওই এলাকায় সাদা পোশাকের পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জনবহুল এলাকা, হোটেল, মল-সহ বাণিজ্যিক এলাকাগুলিতে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। জেলার কয়েকটি পয়েন্টে নাকা চেকিং চলছে।’’ এদিকে রেল পুলিশের তরফে মালদহ স্টেশন ও এই স্টেশনে থামা সমস্ত ট্রেনেই তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

নিউ কোচবিহার

নিউ কোচবিহার স্টেশন লাগোয়া এলাকায় দিনভর তল্লাশি চালান হয়। কিছু ট্রেনের কামরাতেও রেল পুলিশের কর্মীরা তল্লাশি অভিযান চালান। স্টেশনে ঢোকার দরজায় বসান ‘ডোর ফ্রেম’ এড়িয়ে যাতে কেউ প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে না পারেন, সে ব্যাপারে কড়াকড়ি ছিল। বিভিন্ন ট্রেনে এদিন বাড়তি পুলিশ দেওয়া হয়েছে। নিউ কোচবিহার জিআরপির ওসি অভিষেক ভট্টাচার্য বলেন, “নিরাপত্তার ব্যাপারে সব রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা রয়েছে। নজর রাখা হচ্ছে।” অন্য জনবহুল এলাকার দিকেও সতর্ক নজর রাখছে পুলিশ। কোচবিহারের ঘুঘুমারি এলাকায় তোর্সা সেতু এলাকায় যানবাহনে তল্লাশি চলে। অসম সীমানা লাগোয়া তুফানগঞ্জ ও বক্সিরহাট থানা এলাকাতেও পুলিশের বিশেষ টহলদারির ব্যবস্থা ছিল। দিনহাটা শহর ও লাগোয়া এলাকাতেও পুলিশ নাকা বসিয়ে তল্লাশি চালায়। পুলিশ জানিয়েছে, গোসানিরোড, বাজার রোড, শিমুলতলা এলাকা সহ বেশ কিছু এলাকায় তল্লাশি হয়।

রায়গঞ্জ

নিরাপত্তা জোরদার করা হয় রায়গঞ্জ স্টেশন সহ শহরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড ও বাজারেও। দিনভর সাদা পোশাকের পুলিশ নজরদারি চালিয়েছে বলে উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশ সূত্রের খবর। সেই সঙ্গে, রায়গঞ্জের জনবহুল মোহনবাটী বাজার, লাইন বাজার, দেবীনগর বাজার, এফসিআই মোড় বাজারেও অন্য দিনের তুলনায় পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়। রায়গঞ্জ স্টেশনেও এ দিন যাত্রীদের দেহতল্লাশির পাশাপাশি তাঁদের ব্যাগ পরীক্ষা করে দেখেন রেল পুলিশের কর্মীরা। সেই সঙ্গে, রেলসুরক্ষা বাহিনীর কর্মীরা রাধিকাপুর-কাটিহার রুটের একাধিক ট্রেন সহ শিলিগুড়ি, কলকাতা ও দিল্লিগামী ট্রেনের বিভিন্ন কামরায় তল্লাশি চালান। দিনভর রায়গঞ্জের শিলিগুড়িমোড় এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে তল্লাশি চালান ট্রাফিক পুলিশের কর্মীর। জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর জানান, এখন থেকে মাঝেমধ্যেই এই ধরণের নজরদারি চালানো হবে।

জলপাইগুড়ি

নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে জলপাইগুড়িতেও৷ বিভিন্ন রেল স্টেশনেও নজরদারি বাড়ানোর জন্য রেল পুলিশ ও আরপিএফ-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ ওই সব স্টেশনে সন্দেহভাজন কাউকে দেখলেই তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দিয়েছে জেলা পুলিশ৷ কিন্তু, ট্রেন যাত্রীদের অভিযোগ, হলদিবাড়িতে থেকে যাতায়াতকারী ট্রেনের কামরায় বস্তা-বস্তা মাল তোলা হলেও তা মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে কোনও পরীক্ষা করা হচ্ছে না। তাঁরা মনে করিয়ে দেন, ওই হলদিবাড়ি প্যাসেঞ্জারের কেএলও বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। রেল পুলিশের এক অফিসার জানান, তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত মেটাল ডিটেক্টরই নেই। জলপাইগুড়ির এসপি আকাশ মেঘারিয়া জানান, জেলার প্রায় সর্বত্রই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে৷ গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে নজরদারি বাড়ানোর সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় নাকা তল্লাশিও চালানো হচ্ছে৷ পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়ে বিএসএফ-এর সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

হলদিবাড়ি

হলদিবাড়ি স্টেশনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপ্রতুল— এমন দাবি করলেন খোদ স্টেশন মাস্টারই। জানা গেল, স্টেশনে রাজ্য পুলিশের এখন একজন এএসআই-এর সঙ্গে ছয় জন কনস্টেবল আছেন। কনস্টেবলদের মধ্যে চার জন প্যাসেঞ্জার ট্রেন এবং তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেসে ডিউটি করেন। দু’জন স্টেশনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন। স্টেশনের যাত্রীদের নিরাপত্তা দেখার পক্ষে দুজন অপ্রতুল বলে তাকে সহায়তা করার জন্য হলদিবাড়ি থানা থেকে ছ’জন সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু যে কাজ জিআরপির কনস্টেবল করতে পারেন, তা সিভিক ভলান্টিয়াররা করতে পারেন না বলে দাবি স্টেশনের কর্মীদের। স্টেশন মাস্টার সত্যজিৎ তিওয়ারি বলেন, “হলদিবাড়ি প্রান্তিক স্টেশন। এখান থেকে দুটি এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়ে। তিনটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন যাতায়াত করে। স্টেশনে পর্যাপ্ত রাজ্য পুলিশের কর্মী নেই।” স্টেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিবাড়ি স্টেশনে আরপিএফের দুজন কর্মী আছেন। তাদের কাজ রেলের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ করা। রাজ্য পুলিশ যাত্রী সুরক্ষার দিকটি দেখে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Railway compartments
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE