Advertisement
০৪ মে ২০২৪

জোট বেঁধে ‘লড়াই’ পুজোতেও

রাজনীতি নয়, এ বার পুজোতেও জোট। আলাদা আলাদা করে ‘লড়াই’ নয়, একসঙ্গে পুজো করেই লোক টানতে নেমেছে কোচবিহার জেলার ছ’টি পুজো কমিটি।

(বাঁ দিকে) খাগড়াবাড়িতে ও (ডান দিকে) দিনহাটায় তৈরি হচ্ছে মণ্ডপসজ্জা। —নিজস্ব চিত্র

(বাঁ দিকে) খাগড়াবাড়িতে ও (ডান দিকে) দিনহাটায় তৈরি হচ্ছে মণ্ডপসজ্জা। —নিজস্ব চিত্র

অরিন্দম সাহা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৪১
Share: Save:

রাজনীতি নয়, এ বার পুজোতেও জোট। আলাদা আলাদা করে ‘লড়াই’ নয়, একসঙ্গে পুজো করেই লোক টানতে নেমেছে কোচবিহার জেলার ছ’টি পুজো কমিটি।

একটি কোচবিহার শহর লাগোয়া খাগরাবাড়ি সর্বজনীন, অন্যটি দিনহাটার এক নম্বর ওয়ার্ড সর্বজনীন দুর্গোৎসব। ওই দুটি পুজোতেই এ বার একসঙ্গে মিলেমিশে একাকার তিনটি করে মোট ছ’টি ক্লাবের উদ্যোক্তারা। দিনহাটার পুজোতে সামিল হয়েছে ‘আমরা সবাই’, ‘হরিসভা ইউনিট’ ও ‘কলেজপাড়া-বড়নাচিনা দুর্গোৎসব কমিটি’। অন্য দিকে খাগরাবাড়ির উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, তাঁদের পুজো কমিটিতে একসঙ্গে রয়েছে দেশবন্ধু ক্লাব, চৌরঙ্গী ইউনিট ও দেশবন্ধু স্পোর্টিং ক্লাব। একই এলাকায় আলাদা আলাদা পুজো নয়, একসঙ্গে আনন্দ করার জন্যই তাঁদের এই উদ্যোগ, জানাচ্ছেন পুজো কমিটির কর্তারা।

দিনহাটার পুজোর থিম ‘আমার কোচবিহার’। দিনহাটা কলেজের মাঠজুড়ে সুবিশাল মদনমোহন মন্দিরের আদলে তৈরি মূল মণ্ডপের ভেতরে প্রতিমায় থাকবে রাজ আমলের ঐতিহ্যবাহী বড়দেবী ছাপ। ভেসে আসবে নহবতের সুর। রাসচক্র, পুতনা রাক্ষসী, বাণেশ্বর শিবমন্দির, মধুপুরধাম, ধলুয়াবাড়ির টেরাকোটার মন্দির, গোসানিমারির কামতেশ্বরী মন্দিরের আদলে জেলার ইতিহাস বিজড়িত মন্দির, ঐতিহ্যের নানা খণ্ডচিত্র ছড়িয়ে থাকবে মণ্ডপে। রাজবাড়ির সুবিশাল ফ্লেক্স, সাগরদিঘির আদলে তৈরি পুকুর, রাজ আমলের মুদ্রা, দলিল দস্তাবেজের সঙ্গেই রাজাদের নানা মূর্তি বাড়তি আকর্ষণ। সেইসঙ্গে ছোটদের মন কাড়তে আনা হচ্ছে নবদ্বীপের পুতুলনাচ শিল্পীদের। মণ্ডপ চত্বরজুড়ে ঘুরে বেড়াবে জীবন্ত স্পাইডারম্যান, মোটু-পাতলু, ছোটা ভীমেরা।

মণ্ডপ জুড়ে থাকবে চন্দননগরের আলোও। রাজ আমলের নানা ছবি ভেসে উঠবে তাতে। ফুটিয়ে তোলা হবে মনীষীদের ছবি। থাকছে দোতলা বাসের প্রদর্শনী, হাডুডু প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও। পুজো কমিটির আহ্বায়ক বিশু ধর বলেন, “বরাবর একই এলাকায় তিনটি আলাদা দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হত। আনন্দটা যেন ভাগ হয়ে যেত। যৌথ পরিবার ভেঙে গেলে যেমন হয়। সুর্বণ জয়ন্তী বর্ষে যৌথ পরিবারের মত একসঙ্গে পুজোর আনন্দে মাততে নতুন কমিটি হয়। রাজ্যের অন্যতম সেরা পুজো হবে এটি।”

খাগরাবাড়ি সর্বজনীনের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এলাকার প্রাচীন পুজো হিসেবে দেশবন্ধু ক্লাবের ৬০ বছরকে স্মরণীয় করে রাখতে এগিয়ে আসেন এলাকার অন্য দুটি ক্লাবও। মুম্বইয়ের তাজ হোটেলের অনুকরণে মণ্ডপসজ্জা হচ্ছে। হোগলা পাতা, বাঁশের কারুকাজে সাজান মণ্ডপসজ্জার সঙ্গে থাকবে নজরকাড়া প্রতিমা। কৃষ্ণনগরের শিল্পী ওই প্রতিমা তৈরি করছেন। চন্দননগরের আলোয় ফুটিয়ে তোলা হবে অলিম্পিক পদকজয়ী ভারতীয় খেলোয়াড়দের ছবি। শিশুদের নজর কাড়তে আলোয় ফুটিয়ে তোলা হবে কার্টুনের নানা চরিত্র থেকে জীবজন্তুর ছবি। উদ্যোক্তাদের তরফে সজল সরকার জানিয়েছেন, “সকলে আলোচনা করেই একসঙ্গে পুজো আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

তিন পুজোয় মিলে জেলার ওই দুটি বড় পুজোর বাজেট অঙ্ক ৩০ লক্ষ। দুই শহরে দর্শক টানার লড়াই তাই এ বার জমজমাট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE