Advertisement
E-Paper

পুলিশি সক্রিয়তায় চুপসে গিয়েছে ‘স্মার্ট’ মোবাইল চোরেরাও

ফোন স্মার্ট হলে আর কাঁহাতক পকেটবন্দি থাকে!

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৫৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ফোন স্মার্ট হলে আর কাঁহাতক পকেটবন্দি থাকে!

অতএব, প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে সে উঠে আসে হাতে। তার পরে আঙুলের ছোঁয়ায় একের পর এক ভেলকি। কখনও নিজস্বী, কখনও গেম, কখনও হোয়াটসঅ্যাপ, কখনও আবার ‘অনবদ্য’ ফ্রেম।

এত দিন গৃহস্থ সতর্ক থাকতেন, তক্কে তক্কে থাকত তস্করও! এখন দিন বদলেছে। ফোনের সঙ্গে সঙ্গে স্মার্ট হয়েছে চোরেরাও। তাই মোক্ষম সময়ে চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই ভোজবাজির মতো উবে যায় ফোন। ফোনহারা মালিক প্রাথমিক ধাক্কা সামলে গুটিগুটি পায়ে থানায় যান। তার পরে সেই ছকে বাঁধা একটা ‘জিডি’। কিন্তু কিন্তু করেও একটু সাহস সঞ্চয় করে ফোনের মালিক জানতে চান, ‘‘ফোনটা কি ফিরে পেতে পারি, স্যর?’’ গম্ভীর গলায় ডিউটি অফিসারও জবাব দেন, ‘‘একটা ফোনও সামলে রাখতে পারেন না! দেখি, কদ্দুর কী করা যায়!’’

ব্যস, ওই পর্যন্তই! তার পরে কয়েক দিন থানা আর বাড়ি ঘুরে বেচারা সেই মালিকও এক দিন বুঝে যান, যে যায় সে একেবারেই যায়। আর ফেরে না! তবে গত কয়েক মাসে এতদিনের সেই চেনা ছবিটা পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। হারানো বা চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন দ্রুত ফিরিয়ে দিচ্ছে কোচবিহার পুলিশ। পুলিশের দাবি, কোচবিহার জেলা তো বটেই, গোটা উত্তরবঙ্গে চুরি বা হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন এ ভাবে ফিরিয়ে দেওয়ার তেমন নজির নেই।

তা কথাটা নেহাত কথার কথা নয়। গত কয়েক দিনে ১০০টির বেশি ফোন উদ্ধার করে তুলে দেওয়া হয়েছে মালিকদের হাতেই। বাসিন্দাদের কেউ কেউ বলছেন, ‘‘এত দিন চোরেদের পৌষ মাস চলছিল। এখন পুলিশও ম্যাজিক দেখাচ্ছে, মশাই! আসলে কী জানেন, পুলিশ চাইলে সবই পারে।’’

পুলিশের দাবি, একটা সময় কলকাতাতেই এ ভাবে ফোন ফিরিয়ে দেওয়ার নজির ছিল। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর বলেন, “নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত শুরু হচ্ছে। তার পরে মোবাইল কোথায় আছে তা বের করেই অভিযান চালানো হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, সন্তোষ নিম্বালকর পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেওয়ার পর থেকেই জোরকদমে শুরু হয় মোবাইল ফোন উদ্ধার অভিযান। পুলিশ সুপার নিজেই ওই বিষয়টি দেখভাল করেন। প্রথমে পুলিশের সাইবার সেল ওই বিষয়ে কাজ শুরু করে। কাজে গতি আনতে থানায় থানায় এক জন করে নোডাল অফিসারও নিয়োগ করা হয়েছে।

তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার জানান, ফোন চুরি বা হারানোর অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা ট্র্যাক করা হয়। অল্প সময়ে ফোনটি কোথায় আছে তা জানতে পারে পুলিশ। এমনকি ফোনে কোন সিমকার্ড ব্যবহার হচ্ছে, নম্বর-সহ তা-ও পুলিশের হাতে এসে যায়।

মসজিদপাড়ার এক বাসিন্দা বলছেন, ‘‘বাসে উঠেছিলাম ফোন নিয়ে। নামলাম ফোন ছাড়া। ফোন বিনে দিন চলবে কী করে ভাবতে ভাবতে মনের দুঃখে কোতোয়ালি থানায় একটা জিডি করেছিলাম। নিশ্চিত ছিলাম, ও ফোন আর পাব না। কিন্তু অবাক কাণ্ড, মাস না ঘুরতেই সেই ফোন ফেরত দিল পুলিশ! পুলিশের দাপটে এখন মোবাইল চোরেরাও বেশ চুপসে গিয়েছে কিন্তু।’’

Thief Police Mobile phone
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy