Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

প্রচুর টাকার টোপে বাড়ছে পাচার

অথচ ২০০৬ সাল অবধি ওই রুট নিয়ে মাথাব্যথাই ছিল না গোয়েন্দাদের। কারণ, স্বাধীনতার পরে কয়েক বছর চললেও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৪ হাজার ৪০০ ফুট উঁচুতে নাথুলা সীমান্ত দিয়ে প্রায় সাড়ে চার দশক লেনদেন বন্ধ ছিল।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৬
Share: Save:

কখনও পাহাড়, কখনও নির্জন বনপথ পেরিয়ে কারা নিয়ে যায় এই সোনা? মণিপুর থেকে মিজোরাম থেকে কলকাতা ভায়া শিলিগুড়ি, নাথুলা-শেরাথাং থেকে দিল্লি-কলকাতা, বিহার ভায়া শিলিগুড়ি ক্যারিয়ারদের হিসেবটা প্রায় একই রকম। আগে দেখে নেওয়া যাক সোনা পাচারের সাবেকি রুটের পরিস্থিতি। মায়ানমার থেকে মণিপুরের মোরে হয়ে গুয়াহাটি দিয়ে সড়ক পথে শিলিগুড়ি হয়ে বিহার, দিল্লি, কলকাতায় পৌঁছতে ‘ক্যারিয়ার’দের কেজি প্রতি ২০ হাজার টাকা অবধি দেওয়ার খবর রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। সঙ্গে রাহা খরচ। মানে পথের খাবারের দাম, হোটেলে থাকার খরচ, ট্রেনের টিকিট, গাড়ির ভাড়া। মিজোরামের চাম্ফাই সীমান্ত দিয়েও পাচারকারীরা সক্রিয়। চিন থেকে মায়ানমার হয়ে মণিপুর, মিজোরাম হয়ে গুয়াহাটি, শিলিগুড়ির মধ্যে দিয়ে দিল্লি, কলকাতা, বিহারে পৌঁছতে যা খরচ, সেই তুলনায় নাথুলা-শেরেথাং দিয়ে পরিবহণ খরচ কম। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, তাতেই ওই সীমান্তে অতি মাত্রায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক পাচার চক্র।

অথচ ২০০৬ সাল অবধি ওই রুট নিয়ে মাথাব্যথাই ছিল না গোয়েন্দাদের। কারণ, স্বাধীনতার পরে কয়েক বছর চললেও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৪ হাজার ৪০০ ফুট উঁচুতে নাথুলা সীমান্ত দিয়ে প্রায় সাড়ে চার দশক লেনদেন বন্ধ ছিল। ২০০৬ সালে ১৩ হাজার ৬০০ ফুট উঁচু শেরেথাংয়ে নতুন করে পরিকাঠামো তৈরির পরে ফের আমদানি-রফতানি চালু হয়। এখন ৩১টি পণ্য ওই সীমান্ত দিয়ে লেনদেন হয়। সিকিমের ৫০০ জন ব্যবসায়ী ও চিনের ৩০০ জন ব্যবসায়ীকে সে জন্য লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। মে মাস থেকে নভেম্বর অবধি ওই লেনদেন হয়। তার পরে বরফে রাস্তা চলাচলের প্রায় অযোগ্য হয়ে যায় বলে লেনদেন সরকারি ভাবে বন্ধ থাকে।

কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের এক অফিসার জানান, সিকিমের নাথুলায় জনবসতি প্রায় নেই। মূলত সেনাবাহিনীই থাকে। ছাঙ্গু থেকে শেরেথাং অবধি সামান্য জনবসতি রয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের বেশির ভাগই গরিব। তাঁদের নানা ভাবে ধনী করার টোপ দিচ্ছে পাচারচক্রের চাঁইরা।

সিকিম সরকারের এক মুখপাত্র জানান, নাথুলা যাতায়াতের পথের গ্রামগুলিতে বাসিন্দাদের মধ্যে যাঁরা এখনও গরিব রয়েছেন, তাঁদের স্বনির্ভর করতে একাধিক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী, আইটিবিপি ও কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দারাও সমন্বয়ের উপরে জোর দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্তা জানান, ডিসেম্বর শেষ হলে এপ্রিল অবধি ওই রুট নিয়ে কিছুটা নিশ্চিন্তে থাকা যাবে। তখন বরফে রাস্তা বন্ধ থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Smuggling Bait Gold
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE