Advertisement
E-Paper

উৎসবের আবহে সম্প্রীতি

জেল সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারের ওই জেলে বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত মিলিয়ে বন্দি রয়েছেন ১৮৬ জন। তাদের মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত রয়েছেন অনেকেই। দু’টি উৎসব আয়োজনের জন্যই সবাই মিলে জেল কর্তাদের কাছে তাঁদের আগ্রহের কথা জানান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:২০

আজ শনিবার ইদ। মাস গড়ালেই দুর্গাপুজো। এই দুই উৎসব ঘিরেই বদলে গিয়েছে কোচবিহার জেলের ছবিটা। এক উৎসবের দিনেই চলছে আরেক উৎসবের প্রস্তুতি। আর তাতে সামিল জেলে বন্দি দুই সম্প্রদায়ের মানুষই।

আজ ইদে স্পেশাল মেনু। হায়দার মিঁয়া, রাহুল আমিন, শামিম মিঁয়াদের মতোই রান্নার দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন জেলের আবাসিক অভিজিৎ সরকার, বিমল দাস। একইভাবে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতিতেও অভিজিৎ, বিমল দাসদের পাশে থাকার ব্যাপারে সমান উৎসাহ হায়দারদের। সবমিলিয়ে জোড়া উৎসবের আমেজে জেলের চার দেওয়ালের ভেতরেও খুশির হাওয়া। সম্প্রীতির এই আবহে খুশি জেলের কর্তা থেকে সাধারণ কারারক্ষীরাও। বিশেষ দিনে জেলে বন্দি প্রিয়জনদের কথা ভেবে যাদের মুখ ভার ছিল, খুশির ছাপ তাদের চোখেমুখেও। জেলের সুপারিন্টেন্ডেন্ট অনিরুদ্ধ গুপ্ত বলেন, “দুই উৎসব নিয়ে সবাই সমান উৎসাহী। ইদের দিনের স্পেশাল মেনু তালিকা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। দুর্গাপুজোর অনুমতিও এসেছে। শীঘ্র পুজো কমিটি গড়া হবে।”

জেল সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারের ওই জেলে বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত মিলিয়ে বন্দি রয়েছেন ১৮৬ জন। তাদের মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত রয়েছেন অনেকেই। দু’টি উৎসব আয়োজনের জন্যই সবাই মিলে জেল কর্তাদের কাছে তাঁদের আগ্রহের কথা জানান। ইদের দিন স্পেশাল মেনুর ব্যবস্থা করতে সবাই মিলে আগাম সাপ্তাহিক মেনু কাটছাঁট করারও সিদ্ধান্ত নেন। বুধবার রুটিনে তাই মাংস রাখা হয়নি। শুক্রবার বাদ রাখা হয় মাছও। জমিয়ে রাখা মেনুই ইদের দিন সবাই মিলে একসঙ্গে পাতপেড়ে খাবেন। জেল পরিদর্শন কমিটির সদস্য খোকন মিঁয়া বলেন, “ইদের দুপুরে পাঁঠার মাংস, রাতের মেনুতে মাছ থাকছে। পরস্পরের প্রতি ভালবাসা, শ্রদ্ধা না থাকলে সম্ভব হত না। সম্প্রীতির বড় নজির এটা।”

খুশি বন্দিদের পরিজনরাও। কোচবিহারের বাসিন্দা আইনজীবী শিবেন রায় বলেন, “আমার মক্কেল বিচারাধীন দু’জন বন্দি জেলে রয়েছেন। তাদের দু’জন দুই সম্প্রদায়ের। এখানে উৎসবের আয়োজনের খবর জেনে দুই পরিবারের লোকেরা দারুণ খুশি। সম্প্রীতির বার্তা এতে জোরালো হল।”এক বন্দির আত্মীয়ের কথায়, “বিশেষ দিনে কাছের লোকেরা আনন্দ করতে পারবে না ভেবে মনটা খারাপ লাগছিল। সেই আক্ষেপটা ঘুচল।”জেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘জেলের ভেতরে হাত মিলিয়ে ইদের নামাজ আর পুজোর জন্য মণ্ডপ তৈরিতে সবার সমান আগ্রহ রয়েছে। এটা সত্যিই দারুণ ব্যাপার।’’

Festival Eid Durga Puja ইদ Prisoners
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy