Advertisement
২২ মার্চ ২০২৩
Alipurduar

সুমনের বাড়িতে ধর্না প্রত্যাহারেই ‘ইঙ্গিত’টা ছিল

বর্তমানে জয়গাঁ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান গঙ্গাপ্রসাদ বলেন, “বিজেপির সঙ্গে থেকে তিনি (সুমন) কাজই করতে পারছিলেন না।

Abhishek Banerjee welcome BJP MLA of Alipurduar Suman Kanjilal to TMC

তৃণমূলে যোগদান সুমন কাঞ্জিলালের। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:৩২
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক আগে নিজেদের অন্যতম শক্ত ঘাঁটি আলিপুরদুয়ার জেলায় বড় ধাক্কা খেল বিজেপি। কলকাতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে রবিবার তৃণমূলে ‘গেলেন’ আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। যার জেরে উত্তরের এই জেলায় একমাত্র বিধায়ক ‘প্রাপ্তি’ হল তৃণমূলের।

Advertisement

২৭ জানুয়ারি থেকে আলিপুরদুয়ার জেলায় বিজেপির বিধায়কদের বাড়ির সামনে অবস্থান শুরু করে তৃণমূল। ২৯ জানুয়ারি সুমনের বাড়ির সামনেও অবস্থান শুরু হয়। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে সুমনের বাড়ির সামনে এক দিন আন্দোলন করেই তা প্রত্যাহার করে নেয় তৃণমূল। শাসক দলের একটি সূত্রে দাবি, সব ঠিক থাকলে জানুয়ারি মাসের শেষেই সুমনের তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রায় নিশ্চিত ছিল। তাই তাঁর বাড়ির সামনে থেকে অবস্থান প্রত্যাহার করতে বলা হয়। সুমন বলেন, ‘‘দুই বছর আগে জনপ্রতিনিধি হলেও মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলাম না। মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাতেই তিনি সদর্থক সাড়া দেন। আর সে জন্যই এ দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করি। উনি আমায় কাজ করে যেতে বলেছেন। আমি যেখানে ছিলাম, সেখানেই আছি। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে চাই।’’

গত বিধানসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার জেলার পাঁচটি আসনের সবেতেই জয়ী হয়েছিল বিজেপি। তবে প্রথম বড় ধাক্কা ওই নির্বাচনের পরেই পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। সেই সময় বিজেপির অন্যতম ‘সেনাপতি’ ছিলেন দলের জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় বিজেপিকে জিতিয়েই তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। ঘটনাচক্রে সেই গঙ্গাপ্রসাদের হাত ধরেই পেশায় সাংবাদিক সুমন ২০২০ সালে বিজেপি-তে যোগ দিয়ে দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক হন।

তৃণমূল সূত্রের খবর, সুমনের সঙ্গে কিছু দিন ধরেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কথা চলছিল। আলিপুরদুয়ারে তাঁর সঙ্গে গঙ্গাপ্রসাদের পাশাপাশি তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক ও সুমনের ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ করও যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। সমাজমাধ্যমে অভিষেকের সঙ্গে সুমনের ছবিতে আলিপুরদুয়ারের এই তিন নেতাকেও দেখা যায়। তবে সুমনের সঙ্গে ‘গোপনে’ কয়েক জন নেতার যে যোগাযোগ চলছে, তা দলের বাকিরা কেউ জানতেন না।

Advertisement

জেলা বিজেপি সভাপতি ভূষণ মোদক এ দিন দাবি করেন, “সুমন কাঞ্জিলাল যে তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, তা কয়েক মাস আগে থেকেই আমরা জানতাম। সে জন্যই নানা অজুহাতে দলের সঙ্গে দূরত্ব রাখছিলেন তিনি। আমাদের টিকিটে নির্বাচিত বিধায়ক হওয়ার জন্য ওঁকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু যেখানে লাভের অঙ্ক দিয়ে রাজনীতি বিচার হবে, সেখানে কাউকে ধরে রাখা সম্ভব নয়।” আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা বলেন, “সুমন কাঞ্জিলাল কোনও দিনই দলের সংগঠনের কাজে লাগেননি। এক জন বিশ্বাসঘাতকের হাত ধরে দলে এসেছিলেন। তাই বিশ্বাসঘাতকতা করে চলে গেলেন। এতে দলের ক্ষতি হবে না।” যদিও ‘দলবদলের’ পরে রাত পর্যন্ত চেষ্টা করেও সুমনকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

বর্তমানে জয়গাঁ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান গঙ্গাপ্রসাদ বলেন, “বিজেপির সঙ্গে থেকে তিনি (সুমন) কাজই করতে পারছিলেন না। তাই আলিপুরদুয়ার-সহ জেলার মানুষের জন্য কিছু কাজ করতেই তিনি তৃণমূলে এসেছেন।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রকাশ বলেন, “জেলার উন্নয়নমূলক কাজে দল ওঁকে কাজে লাগাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.