Advertisement
১৭ মে ২০২৪
পঞ্চানন বর্মা

উপাচার্য অনুপস্থিত, বিতর্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে

উপাচার্য নিয়মিত অফিসে না যাওয়ার অভিযোগ নিয়ে শিক্ষকদের দুটি পক্ষের বিরোধ চরমে উঠেছে কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

কোচবিহারে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়। —নিজস্ব চিত্র।

কোচবিহারে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩১
Share: Save:

উপাচার্য নিয়মিত অফিসে না যাওয়ার অভিযোগ নিয়ে শিক্ষকদের দুটি পক্ষের বিরোধ চরমে উঠেছে কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে পুজোর ছুটি শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা বন্ধ থাকলেও অফিস খোলা রয়েছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই পুরোপুরি খুলে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সময় বিতর্ক আরও চরম আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ছাত্রছাত্রী ও কর্মীদের একটি অংশ। শিক্ষকদের একটি অংশের অভিযোগ, অধিকাংশ দিনই উপাচার্য হাজির থাকেন না বিশ্ববিদ্যালয়ে। নানা অজুহাতে তিনি কলকাতায় থাকেন। তাঁর জন্য কোচবিহারে একটি কোয়ার্টার থাকার পরেও অভিজাত একটি হোটেলের বিলাসবহুল রুম ভাড়া করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া উপাচার্য না থাকাতে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতির ক্ষেত্রে নানা সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি। তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে অভিযোগও করা হয়েছে।

কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শ্যামল রায়ের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অমল হোড় অবশ্য ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ছুটির দিনেও অফিস করেন উপাচার্য। যারা এমন অভিযোগ করেছেন, তাঁরা ভাল ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে না জেনেশুনেই এমনটা করেছেন। সেমিনার যোগদান সহ নানা কাজে উপাচার্যকে মাঝে মধ্যে বাইরে যেতে হয়। এটা খুবই স্বাভাবিক।” বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দিলীপ রায় বলেন, “নতুন বিশ্ববিদ্যালয় নানা সফলতা র মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাক এটা আমরা চাই। কিছু সমস্যা নিয়ে ইদানিং কথা হচ্ছে। আশা করছি সব মিটে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় সুনামের পথে এগিয়ে যাবে।”

চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য হিসেবে শ্যামলবাবু যোগদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষকদের একটি পক্ষ অভিযোগ করেছেন, ১০ অগস্ট পর্যন্ত ১৬৮ দিনের মধ্যে ১০৬ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন উপাচার্য। রেজিস্ট্রার, ফিনান্স অফিসার এবং পরীক্ষা নিয়ামক পদে স্থায়ী নিয়োগের ব্যাপারেও কোনও উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ। এ ছাড়াও অধ্যাপকদের স্থায়ী পদ, অশিক্ষক কর্মীদের স্থায়ী পদ নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। রেজিস্ট্রার অবশ্য জানিয়েছেন, পদে আবেদনকারীর সংখ্যা খুব কম। তা নিয়েই সমস্যা হচ্ছে। এমনকি অধ্যাপকদের কিছু পদ আবেদনকারী না থাকায় পূরণ করা যাচ্ছে না। নভেম্বর মাসের মধ্যেই রেজিস্ট্রার সহ সব পদের জন্য ইন্টারভিউ নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “নিয়ম মেনে সব কাজ করতে হয়। সেক্ষেত্রে নানা সমস্যা রয়েছে। যারা অভিযোগ করছেন তাঁরা বিষয়গুলি জানেন না।”

এ ছাড়া বাংলা বিভাগের প্রধান জ্যোতিপ্রকাশ রায়ের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের একটি অংশ নানা অভিযোগ তুলেছেন। তা নিয়ে দফায় দফায় আন্দোলন হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। খারাপ ব্যবহার ও নম্বর কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জ্যোতিপ্রকাশবাবুর বিরুদ্ধে। তিনি অবশ্য আগেই জানিয়েছেন, ওই অভিযোগ ঠিক নয়। এবারে বিশ্ববিদ্যালয় খুললে শিক্ষকদের একটি অংশ বাইরের শিক্ষকদের দিয়ে পরীক্ষার খাতা দেখানোর জন্য উপাচার্যকে দাবি জানাবেন। তাঁদের একজন বলেন, “এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

vice-chancellor university campus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE