Advertisement
০৫ মে ২০২৪

তরজায় সরগরম শিলিগুড়ি পুরসভা

পার্কিং ও ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের কাজকর্মে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে সরব হলেন তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা। শুক্রবার সভায় দফায় দফায় ওই দুই বিভাগের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু করেন একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলেরা।

চলছে অধিবেশন। —নিজস্ব চিত্র।

চলছে অধিবেশন। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৬ ০২:৩২
Share: Save:

পার্কিং ও ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের কাজকর্মে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে সরব হলেন তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা। শুক্রবার সভায় দফায় দফায় ওই দুই বিভাগের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু করেন একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলেরা। বিরোধী দলনেতা নান্টু পাল, রঞ্জন শীলশর্মা, কৃষ্ণ পাল, মানিক দে’র মতো কাউন্সিলরেরা একাধিক উদাহরণ, নথি দেখিয়ে তদন্তের দাবিও তোলেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের কাছে।

তৃণমূলের অভিযোগ, ‘‘পার্কিং ফি বৃদ্ধি নিয়ে বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার আগেই লাইসেন্সপ্রাপ্তরা কুপন ছাপিয়ে তা আদায় শুরু করে দিয়েছেন। কুপনগুলিতে ভুয়ো মেমো নম্বর দিয়ে বাসিন্দাদের কাছ থেকে টাকা আদায় হচ্ছে।’’ তাদের আরও অভিযোগ, ‘‘পার্কিং বিভাগটি দালালদের আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। হলফনামা থেকে বিশেষ অনুমোদন, টেবিল পেতে দালালদের দিয়ে কাজকর্ম চলছে।’’ এক সময় রঞ্জনবাবু ৩৭ জন দালালের নামের তালিকাও সভায় উল্লেখ করেন। তেমনিই, কৃষ্ণবাবু জাতীয় সড়কে পার্কিং দিয়ে পুরসভা কী ভাবে টাকা আদায় করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

মেয়র পারিষদ কমল অগ্রবাল, দুর্গা সিংহ তো বটেই, মেয়র অশোকবাবুও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘কোনও অনিয়ম, দুর্নীতির প্রশ্নই নেই। তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা বিস্তারিত খোঁজ না নিয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে এ সব বলছেন।’’

অশোকবাবু জানান, বর্ধিত পার্কিং ফি নিয়ে এ দিন সিদ্ধান্ত হল। আগেই তা বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগেই যারা নিচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে ব্যবস্থা হবে। তেমনিই, ট্রেড লাইসেন্স পুরনো এবং সরকারি নিয়ম মেনে সব হচ্ছে। নইলে লাইসেন্সের হার, টাকা আদায় তো বেড়েছে, তবে সেখানে কিছু পরিবর্তন দরকার। কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রশাসনিক স্তরে দেখা হচ্ছে। পরে বিরোধী দলনেতা নান্টুবাবু বলেন, ‘‘বোর্ড কী পদক্ষেপ করছে, সে দিকে আমরা নজর রাখব। নইলে সেই মতো পুরসভার ভিতরে-বাইরে আন্দোলন হবে।’’

বানভাসিদের ত্রাণ দেওয়া নিয়ে তৃণমূলকে পাল্টা আক্রমণ করেন মেয়র ও মেয়র পারিষদরা। তাঁরা জানান, গত সপ্তাহে দু’দশকের রেকর্ড বৃষ্টি হয়। অধিকাংশ ওয়ার্ডেই জল জমে। জলপাইগুড়ি জেলায় থাকা তৃণমূলের পুর ওয়ার্ডগুলিকে বিপুল পরিমাণে ত্রাণ দেওয়া হয়। মেয়র জানান, ‘‘আমরা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানানো হয়, মন্ত্রীর নির্দেশে সব হচ্ছে। পরে অন্য ওয়ার্ডের জন্য ত্রাণ আসে।’’ রঞ্জনবাবু সভায় জানান, ‘‘পুরসভায় জঞ্জালের ট্রাকে ত্রাণের খাবার দুঃস্থদের পাঠানো হয়েছে। তেমনিই, গোটা পুর এলাকায় রাজ্য সরকারই ত্রাণ দেয়। বামবোর্ড এক টাকার ত্রাণ কেনেনি।’’ কৃষ্ণবাবু বলেন, ‘‘ত্রাণ নিয়ে দলবাজি সিপিএম করেছে। পাম্প, ত্রিপল, খাবার সরকারি ভাবে পৌঁছানোর আগে বাম দলের কর্মীরা তা পাড়ায় পাড়ায় নিয়ে গিয়েছেন।’’ তৃণমূলের এই সমস্ত অভিযোগও মেয়র মানতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Municipal Corporation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE