গঙ্গারামপুরে অর্পিতা। নিজস্ব চিত্র
রণকৌশল সাজিয়ে ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ যাতে কোনও ভাবেই বিজেপির দখলে না যায়, সেটাই লক্ষ্য তাঁর। উল্টোদিকে, গোপনে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন সদ্য বিজেপিতে যাওয়া তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রও। তাঁরও লক্ষ্য, যেমন করেই হোক, জেলা পরিষদের দখল নেওয়া। ফলে এই দ্বৈরথে জেলা পরিষদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়েই জোর আলোচনা জেলার রাজনৈতিক মহলে।
জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, বুধবার জেলা পরিষদের সদস্যদের একাংশদের নিয়ে বৈঠক করেছেন অর্পিতা। পাশাপাশি, জেলা পরিষদে তৃণমূলের দলনেতা হিসেবে শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ প্রবীর রায়কে দায়িত্ব দিয়ে বিজেপিতে যাওয়া সদস্যদের পদ খারিজের প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। এরই সঙ্গে সভাধিপতি, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে বিশেষ অডিট করিয়ে তাঁদের চাপে ফেলতে চাইছে শাসক দল। অর্পিতা ইতিমধ্যে জানিয়েও দিয়েছেন, ‘‘জেলা পরিষদের পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে স্পেশাল অডিট করা হবে।’’ জেলা পরিষদের ১৮ জন সদস্যের মধ্যে সভাধিপতি-সহ মোট ১০ জনকে বিজেপিতে নিয়ে গিয়েছেন বিপ্লব। তারপরেই বিজেপির দাবি, রাজ্যের প্রথম জেলা পরিষদ তাঁদের দখলে এসেছে। এই দাবি উড়িয়ে অর্পিতা বলেন, ‘‘যাঁরা বিজেপিতে গিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ-বিরোধী আইন প্রয়োগ করে সদস্যপদ খারিজ করা হবে। কাজেই জেলা পরিষদ বিজেপির দখলে চলে গিয়েছে, এটা ভুল। জেলা পরিষদ তৃণমূলেরই থাকবে।’’
পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী, আড়াই বছরের আগে জেলা পরিষদে অনাস্থা আনা যায় না। পাশাপাশি, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা একদল ছেড়ে অন্য দলে খাতায়কলমে যেতেও পারেন না। আবার, দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য যদি দলত্যাগ করে অন্য দলে চলে যান, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধেও দলত্যাগ-বিরোধী আইন প্রয়োগ করা যায়না। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের মেয়াদ এখনও আড়াই বছর হয়নি। কাজেই সদস্যেরা বিজেপিতে গেলেও খাতায়কলমে তৃণমূলেরই থাকবেন এবং তৃণমূলও এখনই সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে পারবেন না।
এ দিকে, জেলা পরিষদের ১৮ জনের মধ্যে বিজেপিতে গিয়েছেন ১০ জন সদস্য। দুই তৃতীয়াংশের থেকে দু’জন কম। কাজেই তৃণমূল দলত্যাগ-বিরোধী আইন প্রয়োগ করার দাবি করলেও তা প্রমাণ করতে পারবে না। জেলা পরিষদ ধরে রাখতে হলে তৃণমূলকে প্রমাণ করতে হবে যারা বিজেপিতে গিয়েছেন তাঁরা দলত্যাগ করে গিয়েছেন। যা অত্যন্ত কঠিন। সূত্রের খবর, তাই তৃণমূল শিবির পুরো বিষয়টিকে আদালতে নিয়ে যেতে চাইছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy