Advertisement
E-Paper

ট্রাক্টরের দাপটে গাড়ির জট ডালখোলাতেও

কলকাতা থেকে শিলিগুড়ির দিকে যেতে গেলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে কালিয়াচকের যানজট পেরিয়ে এসে এখন ফের ধাক্কা খেতে হচ্ছে উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলাতেও। ভুট্টার ট্রাক্টরের জন্য যানজটে গাড়ি যেন নড়ছেই না। তাতে স্থানীয় বাসিন্দারাও নাকাল হচ্ছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৬ ০২:১৯
ফোর লেনের কাজের জেরে কালিয়াচকের জাতীয় সড়কে যানজটে আটকে শ’য়ে শ’য়ে গাড়ি।—নিজস্ব চিত্র

ফোর লেনের কাজের জেরে কালিয়াচকের জাতীয় সড়কে যানজটে আটকে শ’য়ে শ’য়ে গাড়ি।—নিজস্ব চিত্র

কলকাতা থেকে শিলিগুড়ির দিকে যেতে গেলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে কালিয়াচকের যানজট পেরিয়ে এসে এখন ফের ধাক্কা খেতে হচ্ছে উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলাতেও। ভুট্টার ট্রাক্টরের জন্য যানজটে গাড়ি যেন নড়ছেই না। তাতে স্থানীয় বাসিন্দারাও নাকাল হচ্ছেন। যানজটের জেরে বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রায়গঞ্জ-শিলিগুড়ি বাসও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

জেলা বাস ও মিনিবাস ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন যানজট সমস্যা নিয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলতে চায়। অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্লাবন প্রামাণিকের দাবি, পুলিশের গাফিলতির জেরেই কিছু দিন অন্তর ডালখোলা এলাকার জাতীয় সড়কে টানা কয়েক দিন ধরে যানজট লেগে থাকছে। তিনি বলেন, ‘‘যানজটের জন্য মাঝে মধ্যেই রায়গঞ্জ শিলিগুড়ি রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন বেশিরভাগ বাসমালিক। বার বার এমন ঘটনায় আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। শনিবারের মধ্যে যানজট সমস্যার সমাধান না হলে সংগঠনের তরফে বৈঠক করে জেলা জুড়ে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।’’

পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌরের দাবি, পুলিশ ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জেলা জুড়ে যৌথভাবে যান নিয়ন্ত্রণের আধুনিক পরিকাঠামো তৈরি ও রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছে। ডালখোলা এলাকার জাতীয় সড়কে ওভারটেক নিষিদ্ধ করে ডিভাইডার তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ যানজট সমস্যার সমাধানের জন্য সব রকম চেষ্টা করছে। ভুট্টা সরবরাহকারী বেআইনি ট্রাক্টরগুলির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাসমালিকদের অভিযোগ, পুলিশের গাফিলতির জেরে এর আগে গত ১১ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত ভুট্টা সরবরাহকারী ট্রাক্টরের দাপটে ডালখোলা এলাকার প্রায় ১০ কিলোমিটার জাতীয় সড়কে দিনভর তীব্র যানজট লেগে ছিল। পুলিশকে একাধিকবার লিখিত ভাবে যানজট সমস্যার সমাধানের দাবি জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি। তাঁদের দাবি, এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে গত ২১ মে থেকে তাঁরা ধীরে ধীরে রায়গঞ্জ শিলিগুড়ি রুটে বেসরকারি বাস চলানো বন্ধ করতে শুরু করেন। তারপরেই পুলিশের টনক নড়ে। এরপর যাত্রী দুর্ভোগের আশঙ্কায় পুলিশের তত্পরতায় ২৮ মে থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে ফের একই ভাবে ডালখোলার পূর্ণিয়া মোড় থেকে দোমহনা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার লম্বা জাতীয় সড়কে দিনভর তীব্র যানজট লেগে রয়েছে। ডালখোলা, করণদিঘি, চাকুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকা সহ সংলগ্ন বিহারের গোলাপবাগ ও বলরামপুর থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েকশো ট্রাক্টর ডালখোলা শহরে ঢুকে পড়ছে। ট্রাক্টরগুলি দিনভর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন ডালখোলা স্টেশনের রেকপয়েন্ট থেকে ভুট্টা বোঝাই করে সেগুলি ওজন করানোর জন্য স্থানীয় পূর্ণিয়ামোড় থেকে কলেজমোড় পর্যন্ত জাতীয় সড়কের ধারে থাকা একাধিক ওজনকেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে। ওজন করার পর সেই সব ভুট্টা ফের ট্রাক্টরে চাপিয়ে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ডালখোলা এলাকার জাতীয় সড়কের ধারে থাকা বিভিন্ন গোডাউনে। ফলে ওই দিন থেকে ফের জাতীয় সড়কে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তীব্র যানজট লেগে রয়েছে। ফলে দু’দিন ধরে রায়গঞ্জ থেকে যাত্রীদের বাসে চেপে ১৮৭ কিলোমিটার দূরে শিলিগুড়ি যেতে চার ঘণ্টার বদলে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। প্লাবনবাবুর দাবি, রায়গঞ্জ শিলিগুড়ি রুটে প্রতিদিন ৩২টি বাস চলাচল করলেও গত দুদিন ধরে যানজটের জেরে লোকসানের আশঙ্কায় তার মধ্যে ১৫টি বাসের চলাচল বন্ধ রেখেছেন মালিকেরা।

রায়গঞ্জের গোয়ালপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাছ ব্যবসায়ী প্রহ্লাদ হালদার এদিন সকালে বাসে ইসলামপুরে গিয়েছেন। তাঁর কথায়, যানজটের জন্য এ দিন বাসে পূর্ণিয়ামোড় থেকে দোমহনা যেতেই প্রায় দুঘণ্টা সময় লেগেছে। রায়গঞ্জ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের ইসলামপুর যেতে সময় লাগল প্রায় পাঁচ ঘণ্টা।

traffic congestion Tractors
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy