Advertisement
১৩ জানুয়ারি ২০২৫

প্রশ্নের মুখে শিশুসুরক্ষা

এই অবস্থায় শিশুপাচার রোধের কাজ প্রশ্নের মুখে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

শুভঙ্কর চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০৮:৫০
Share: Save:

প্রশাসনিক জটিলতার কারণে উত্তরবঙ্গের ছয় জেলায় দীর্ঘদিন চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি (সিডব্লিউসি) নেই। কোচবিহার, দার্জিলিং, কালিম্পং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ— এই ছয় জেলায় ওই কমিটি কার্যত অকেজো। উত্তরবঙ্গে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় শুধু সিডব্লিউসি কাজ করছে। দুই জেলার কমিটিকেই বাড়তি দায়িত্ব বর্তেছে। ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ার সিডব্লিউসি’কে নিজের জেলা ছাড়াও দায়িত্ব নিতে হচ্ছে আরও সাত জেলা কোচবিহার, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, কালিম্পং, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের। জলপাইগুড়ি সিডব্লিউসি’কে দেখতে হচ্ছে দার্জিলিং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, বীরভূম এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সিডব্লিউসি’র কাজকর্মও।

এই অবস্থায় শিশুপাচার রোধের কাজ প্রশ্নের মুখে। জলপাইগুড়ি সিডব্লিউসি’র চেয়ারপার্সন বেবি উপাধ্যায় বলেন,‘‘সরকারি নির্দেশ। বাড়তি চাপ নিতেই হচ্ছে।’’ নিজস্ব সিডব্লিউসি না থাকায় সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে কোচবিহারের সমাজকল্যাণ আধিকারিক শুভেন্দুশেখর মণ্ডল বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’

উদ্ধার হওয়া শিশুকে কোন হোমে পাঠানো হবে, তা সিডব্লিউসি ঠিক করে। কোনও জেলায় ওই কমিটি না থাকলে অন্য জেলার কমিটির অনুমতি নিতে হয়। আলিপুরদুয়ার সিডব্লিউসি’র চেয়ারপার্সন কান্তিভূষণ মহন্ত জানান, দক্ষিণবঙ্গের জেলারকাজ করা হচ্ছে ই-মেল মারফৎ। ওই জেলাগুলিতে সমাজকল্যাণ দফতর প্রাথমিক স্তরে বিষয়গুলি দেখে কাগজপত্র তৈরি করে পাঠাচ্ছে। তা তিনি সই করে দিচ্ছেন।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের বক্তব্য, বহু সময়ই উদ্ধার হওয়া শিশুকে নিয়ে দুই জেলায় ঘুরপাক খেতে হচ্ছে। পুলিশও দায়িত্ব নিতে চাইছে না। শিশুকে উদ্ধারের পর তাকে হোমে পাঠাতে দেরি হলে নিয়মমতো শাস্তির মুখে পড়তে হয়। তাই অন্য জেলায় ঘুরপাক খাওয়া এবং দেরির ভয়ে শিশু উদ্ধারের কাজে কয়েকটি জেলায় ঢিলেমি তৈরি হয়েছে বলে রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

জেলার হোম থেকে শিশু দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রয়েছে সিডব্লিউসি’র। ফলে, আলিপুরদুয়ারে বসে ঝাড়গ্রামে কোন বাচ্চাকে দত্তক দেওয়া হচ্ছে বা সেই অছিলায় বিক্রি করা হচ্ছে কি না, তার নজরদারি করা সিডব্লিউসি’র পক্ষে কতটা সম্ভব, সে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের মধ্যেই। জলপাইগুড়ির হোম-কাণ্ডে ‘অ্যাড হক’ কমিটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তারপরও কেন সিডব্লিউসি নিয়ে শিথিলতা দেখাচ্ছে রাজ্য সরকার, সেই প্রশ্ন উঠছে নানা মহল থেকে।

জলপাইগুড়ি সিডব্লিউসি’র মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩১ জুলাই। কবে নতুন কমিটি গঠিত হবে, তা একমাত্র নবান্নই বলতে পারে। আলিপুরদুয়ারের সমাজকল্যাণ আধিকারিক বিভুদান মজুমদার বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ির নতুন কমিটি তৈরি না হওয়া অবধি চাপ বাড়বে আলিপুরদুয়ারের উপর। তবে, শুনেছি, কিছু জেলার সিডব্লিউসি’র জন্য নাকি নির্দেশিকা বেরিয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Child Trafficking Child Care Home
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy