দিনের বেলা উপনয়ন। সন্ধ্যায় ইফতার পার্টি। রবিবার রীতি মেনে এক দিনে দুই অনুষ্ঠান হল জলপাইগুড়ির সরকারি কোরক হোমে। আর তাতে সব আবাসিকই এক ভাবে যোগ দিল।
কোরক হোমে বরাবরই সব ধর্মের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এক দিকে যেমন হয় রাখিবন্ধন থেকে সরস্বতী পুজো, অন্য দিকে তেমনই ইফতার পার্টি। তবে একই দিনে সকালে উপনয়ন ও বিকেলে ইফতার এই প্রথম। এমনকী, মেনুও হল রীতি মেনেই। উপনয়ন উপলক্ষে দুপুরে আবাসিকদের পাতে পড়ল ভাত, ডাল, পকোরা, পটল-চিংড়ি, পাবদা মাছের ঝাল, চাটনি ও দই-মিষ্টি৷ আর সন্ধ্যার পর ইফতার পার্টিতে আবাসিকদের জন্য ছিল খেজুর, ঘুগনি, কলা ও অন্যান্য কাটা ফল, পিঁয়াজি, বোঁদে এবং আমের রস৷
জলপাইগুড়ির সরকারি এই হোমে এই মুহূর্তে ৮৭ জন আবাসিক রয়েছে৷ যার মধ্যে ১২ জন কিশোর অপরাধী৷ হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, হোমের আবাসিকদের মধ্যে এক কিশোর অপরাধী-সহ দুজনের উপনয়নের জন্য তাদের আত্মীয়েরা আবেদন করেন৷ সে জন্য এ দিন সেখানে প্রথম বার উপনয়নের আয়োজন করা হয়৷
হোমের সুপার প্রণয় দে বলেন, ‘‘আমাদের হয়তো এখানে সদস্য সংখ্যাটা একটু বেশি। কিন্তু কোরক হোমে আমরা ও আবাসিকরা একটা পরিবারের মতোই থাকি৷ বাড়িতে যেমন ছোটদের অভিভাবক থাকে, এখানে তেমনি আমরাই আবাসিকদের অভিভাবক৷ ফলে এক জন অভিভাবক বাড়িতে যা কর্তব্য পালন করেন, আমরা হোমে সেই কর্তব্য পালন করে থাকি৷ সেজন্যই এই আয়োজন৷’’
বাড়ির সব নিয়মই মেনেই উপনয়ন হয়। এমনকী, শনিবার সন্ধ্যায় জলভরা ও গঙ্গা নিমন্ত্রণে যান এলাকায় থাকা মহিলারাই৷ এ দিন মস্তক মুণ্ডন থেকে যজ্ঞ— সবই হয়৷ আর ভিক্ষা মা হন খোদ সিডব্লিউসি-র চেয়ারপার্সন বেবী উপাধ্যায়৷ তাঁর কথায়, ‘‘হোম কর্তৃপক্ষ ও দুই আবাসিকের ইচ্ছা ছিল আমি ভিক্ষা মা হই৷’’
সন্ধ্যার পর হোমেই হয় ইফতার পার্টি৷ প্রণববাবু বলেন, এ দিনই পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে৷ হোমের দশ আবাসিক রোজা রেখেছে৷ তাদের জন্যই এই আয়োজন৷ প্রতিবারই আমরা এই আয়োজন করে থাকি৷
জলপাইগুড়ির এই সরকারি হোম থেকে এর আগে বারবার আবাসিকদের পালানোর ঘটনা ঘটছে৷ সাম্প্রতিককালেও তিনটি ঘটনার নজির রয়েছে ওই হোমে৷ হোম সূত্রের খবর, এই ধরনের ঘটনা রুখতে হোমের কর্তারা আবাসিকদের আরও বেশি করে আপন হতে চাইছেন এই সব অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy