আধার কার্ড পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বাসিন্দাদের একাংশের কাছ থেকে দীর্ঘ দিন ধরে টাকা তোলার অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ থানার নওদা পঞ্চায়েত এলাকা থেকে তাদের ধরা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত বিপ্লব বর্মন ও আমিনুল হক স্থানীয় মালন এলাকার বাসিন্দা। ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ একটি ল্যাপটপ ও চোখ-হাতের ছাপ সংগ্রহের যন্ত্র উদ্ধার করেছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ভুয়ো পরিচয় দিয়ে সরকারি কাজ করার চেষ্টার অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ ও ১৭০ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। রবিবার রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেন।
প্রাথমিক তদন্তের পুলিশের দাবি, ধৃতরা বিহারের পূর্ণিয়ায় সরকারি ভাবে আধার কার্ড তৈরির দায়িত্বে থাকা একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। মাস খানেক আগে তারা এলাকায় ফিরে নওদা পঞ্চায়েত এলাকায় ঘুরে ঘুরে আধার কার্ড পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বাসিন্দাদের কাছ থেকে ৭০ টাকা করে তুলছিলেন।
হেমতাবাদ থানার ওসি মনোজিৎ দাসের দাবি, ‘‘ধৃতদের ল্যাপটপ পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে, ধৃতরা এখনও পর্যন্ত কাউকে আধার কার্ড দিতে পারেনি। তাদের পক্ষে কাউকে আধার কার্ড দেওয়া সম্ভবও নয়। প্রতারণা করে টাকা তোলার জন্যই তারা আধার কার্ডের ছবি তোলার কাজ করছিল।’’ তিনি বলেন, ‘‘নানা মহল থেকে ধৃতদের জাল আধার কার্ড চক্র বলে প্রচার চালানো হলেও পুলিশ তদন্ত করে সে রকম কিছুই পায়নি। সেই কারণে, তাদের জেল হাজতে নেওয়ার দরকার হয়নি।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, পূর্ণিয়ায় সরকারি ভাবে আধার কার্ড তৈরির দায়িত্বে থাকা একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী বিপ্লব ও আমিনুল মাসখানেক আগে বাড়ি ফিরে জানতে পারেন, নওদা পঞ্চায়েত এলাকার বহু বাসিন্দার আধার কার্ড এখনও আসেনি। সে কথা জানার পর বাসিন্দাদের আধার কার্ড পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ভোটার কার্ড ও রেশন কার্ডের প্রতিলিপি জমা নেওয়ার পর তাদের কাছ থেকে ৭০ টাকা করে নিয়ে তারা ছবি তুলে দিত বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছে। মনোজিৎবাবু বলেন, ‘‘যেহেতু বাসিন্দারা জানেন ধৃতরা আধার কার্ড দেওয়ার কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, তাই অনেকেই বিশ্বাস করে কার্ড পাওয়ার জন্য তাদের টাকা দিতে শুরু করেন।’’
পুলিশ জানিয়েছে, প্রায় এক সপ্তাহ আগে কয়েক জন বাসিন্দা হেমতাবাদের ব্লক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করে জানান, টাকার বিনিময়ে নওদা পঞ্চায়েত এলাকায় আধার কার্ড তৈরির জন্য ছবি তোলার কাজ চলছে। এর পরেই হেমতাবাদ ব্লকে সরকারি ভাবে আধার কার্ড তৈরির দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থার কর্ণধার শঙ্কু ঘোষ পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ধৃতরা বাসিন্দাদের কাছ থেকে ইতিমধ্যেই প্রায় ১০ হাজার টাকা তুলেছিল বলেও পুলিশের দাবি। কয়েক দিনের মধ্যেই তারা পালানোর ছক করেছিল। তবে ধৃতদের আধার কার্ড পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা তোলা ছাড়াও আর কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পূর্ণিয়ায় আধার কার্ড তৈরির দায়িত্বে থাকা ওই সংস্থার সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy