E-Paper

বাঁধের কাজেও তিস্তার গতি বদলের প্রভাব, চিন্তা

গত অক্টোবরে সিকিমের দক্ষিণ লোনাক হ্রদে জলোচ্ছ্বাস-বিপর্যয়ে গজলডোবায় তিস্তার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৪ ০৮:৩২
চলছে পর্যবেক্ষন।

চলছে পর্যবেক্ষন। নিজস্ব চিত্র।

বৃষ্টি হচ্ছে। তাতে ফুলবাড়ির তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানালে জল কিছুটা ভরলেও তিস্তা বাঁধের কাজ ঠিক মতো করা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যে পরিকল্পনায় বাঁধের কাজ করার কথা ছিল, নদীর গতি বদলানোয় সে পরিকল্পনা বাদ দিয়ে, অন্য ভাবে বাঁধরক্ষার কাজ করতে হচ্ছে সেচ দফতরকে। তাতে সমস্যা বেড়েছে। কাজের সময় সীমা বাড়াতে হচ্ছে সেচ দফতরকে। শিলিগুড়ি শহরের জল সমস্যার আশঙ্কাও তাই এখনই দূর হচ্ছে না।

গত অক্টোবরে সিকিমের দক্ষিণ লোনাক হ্রদে জলোচ্ছ্বাস-বিপর্যয়ে গজলডোবায় তিস্তার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেচ দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অংশে ২৫০ মিটার লম্বা এবং পারের দিকে ৮০ ফুট চওড়া অংশ ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল তিস্তা। মেরামতের জন্য ভাবা হয়েছিল, আগে যে অংশে বাঁধ ছিল তার বাইরে দিয়ে নদীখাতের মধ্যে রিং বাঁধ করা হবে। তাতে সমস্যা হবে না বলে মনে করা হয়েছিল। কারণ, পলি জমে নদীর গতি এই অংশে কিছুটা সরে নদীর মাঝের দিকে চলে যাবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু ১০ মে থেকে সেই কাজে নেমে দেখা যায়, নদীর জল সরছে না। যে অংশ ভেঙে গিয়েছিল সেখানে সাত-আট ফুট গভীর জল থেকে যাচ্ছে। ফলে, আগের পরিকল্পনা বদলাতে হয়েছে।

এখন যে অংশ নদী এখনও ভাঙেনি, সে বরাবর বাঁধ তৈরি করতে হচ্ছে। নদীর গতি এই অংশ থেকে ঘোরাতে ‘ডিফ্লেক্টার স্পার’ তৈরি করা হচ্ছে। তা করতে গিয়েও সমস্যা হচ্ছে বৃষ্টি এবং পাহাড় থেকে জল নেমে আসায়। পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে সিকিম থেকে জল বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যারাজগুলো জল ছাড়ায় তিস্তা ফুলেফেঁপে উঠেছে। তাতে নীচের দিকে ব্যারাজগুলোকেও জল ছাড়তে হচ্ছে। তাতে সমতলে গজলডোবায় তিস্তায় জলের বেগ বেড়েছে। তাতে বাঁধ মেরামতির কাজ করতে অনেক ক্ষেত্রে বিপত্তি দেখা দিয়েছে। ফলে, ২৫ মে’র মধ্যে কাজ শেষ করে তিস্তা ক্যানালে জল ছাড়ার কথা থাকলেও, তা সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। ৩১ মে পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে সেচ দফতর। চলতি মাসের পুরোটাই বাঁধ মেরামতির কাজে দরকার বলে তারা জানিয়েছে। সব ঠিক থাকলে ১ জুন থেকে তিস্তা ক্যানালের অংশে জল ছাড়তে পারবে তারা।

সেই অপেক্ষাতেই বসে রয়েছেন শিলিগুড়ির পুর কর্তৃপক্ষ। তিস্তায় বাঁধ মেরামতির কাজের জন্য গত ১০ মে থেকে ফুলবাড়িমুখী তিস্তা-মহানন্দায় লিঙ্ক ক্যানালে জল দেওয়া বন্ধ রেখেছে সেচ দফতর। কাজের জন্য এক মাস সময় লাগবে বলে প্রাথমিক ভাবে জানালেও পুরসভার অনুরোধে তারা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেই কাজ ২৫ মে’র মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছিল। এ দিন কাজের অগ্রগতি দেখতে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব, ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার, জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত, পুরসভার বাস্তুকারেরা।

মেয়র বলেন, ‘‘জলের স্রোতের জন্য বাঁধ মেরামতির কাজে সমস্যা হচ্ছে। আরও কিছুদিন তাদের লাগবে। তবে পানীয় জলের সমস্যা হবে না। বর্ষা হয়েছে। মহানন্দার জলও রয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Siliguri Teesta River

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy