Advertisement
০৪ মে ২০২৪

শেষ দিনে সব তত্ত্ব উড়িয়ে ‘মিলিজুলি’

মিলিজুলির ৮টি পঞ্চায়েতের কোথাও তৃণমূল, বিজেপি ও কংগ্রেস মিলেমিশে বোর্ড গড়েছে। আবার কোথাও বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএম মিলেছে।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৩৮
Share: Save:

পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়া নিয়ে মালদহে তৃণমূল নেতৃত্ব আগেই বার্তা দিয়েছিল, বিজেপিকে রুখতে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা হবে। কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্বও বিজেপিকে রুখতে তৃণমূলের সঙ্গে হাত ধরার কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু বুধবার পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের শেষ দিনে সেইসব দলীয় তত্ত্ব আর খাটল না।

এ দিন জেলায় শেষ ২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হয়েছে। তৃণমূল ১১টি, বিজেপি ৬টি, কংগ্রেস ৩টি এবং মিলিজুলি ভাবে ৮টিতে বোর্ড হয়েছে। মিলিজুলির ৮টি পঞ্চায়েতের কোথাও তৃণমূল, বিজেপি ও কংগ্রেস মিলেমিশে বোর্ড গড়েছে। আবার কোথাও বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএম মিলেছে। বোর্ড গঠন নিয়ে তৃণমূলের দ্বন্দ্বও কোথাও কোথাও প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে শাসক দলের সরকারি প্যানেলকে ভোটাভুটিতে হারিয়ে দলেরই বিক্ষুব্ধ প্যানেলের প্রার্থী প্রধান পদে জয়ী হল।

এ দিন কালিয়াচক-৩ ব্লকের ত্রিশঙ্কু গোলাপগঞ্জ পঞ্চায়েতে তৃণমূল, বিজেপি ও কংগ্রেস মিলে বোর্ড গঠন করে। এখানে ১৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ও কংগ্রেস ৪টি করে এবং বিজেপি ৩টি, সিপিএম ২টি ও নির্দল একটি আসন পেয়েছিল। সিপিএমের দু’জন কাউকে সমর্থন না করলেও বাকি ১২ জনের সমর্থনে প্রধান হয়েছেন তৃণমূলের সাবিনা ইয়াসমিন। তাঁর নাম প্রস্তাব করেন দলেরই বকুল মিঞা এবং সমর্থন করেন কংগ্রেসের সাকিনুর বিবি। উপপ্রধান পদে কংগ্রেসের প্রেমচাঁদ মণ্ডলের নাম প্রস্তাব করেন তৃণমূলের সাবিনা ইয়াসমিন ও সমর্থন করেন বিজেপির পলি মণ্ডল।

এদিকে, এই ব্লকেরই বীরনগর-১ পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে ঠেকাতে কংগ্রেস ও বিজেপি মিলে বোর্ড গড়ল। এ দিন প্রধান পদে বিজেপির সমর্থন নিয়ে কংগ্রেসের সীমা হালদার রায় জয়ী হন। কিন্তু এখানে সংরক্ষিত উপপ্রধান পদে প্রার্থী না থাকায় পদটি ফাঁকাই থেকে যায়। এই ব্লকের লক্ষ্মীপুর পঞ্চায়েতেও তৃণমূলকে ঠেকাতে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম ও এক নির্দল প্রার্থী মিলে বোর্ড গড়ে। প্রধান হয়েছেন নির্দল প্রার্থী যশোদা মণ্ডল ও উপপ্রধান সিপিএমের মাসেদা বিবি।

এই মিলিজুলি বোর্ডের মাঝেই কালিয়াচক-১ ব্লকের আলিপুর-১ পঞ্চায়েতে তৃণমূলেরই একটি বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী কংগ্রেস-বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বোর্ড গঠন করে নেয়। এখানকার ৯টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৬টি, কংগ্রেস ২টি ও বিজেপি একটি আসন পায়। কিন্তু তৃণমূলের সদস্যরা দু’টি ভাগে ভাগ হয়ে পড়ে। সরকারি ভাবে তৃণমূল প্রধান পদে উমে কুলসুম ও উপপ্রধান পদে সরিকা বিবির নামে প্যানেল জমা দেয়। পাল্টা বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী তৃণমূলের নূরে বিবির নাম প্রধান পদে ও উপপ্রধান পদে কংগ্রেসের আফনূর আলির নামে প্যানেল জমা করে। ৫-৪ ভোটে নূরে ও আফনূর জয়ী হন। এ হেন কাণ্ড নিয়ে তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, ‘‘বিজেপির কেউ যদি কোথাও আমাদের দলের কাউকে সমর্থন করে তবে সেই বিজেপি সদস্য আমাদের দলে ইতিমধ্যে যোগ দিয়েছে।’’ বিজেপির বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক স্বাধীন সরকার বলেন, ‘‘তৃণমূলকে রুখে এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এ দিন কয়েকটি পঞ্চায়েতে কংগ্রেস বা সিপিএমের সঙ্গে সমঝোতা করতে হয়েছে।’’ জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত শর্মা বলেন, ‘‘স্থানীয় স্তরে কেউ দলের বাইরে বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করলে দলগত পদক্ষেপ হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat TMC BJP Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE