গোলমালের পরে দৃশ্যতই বিধ্বস্ত আক্রান্ত ছাত্রীরা। — নিজস্ব চিত্র
রোজকার মতো সোমবার দুপুরেও ক্লাস চলছিল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে। আচমকা হইচই শুনে শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে বাইরে বেড়িয়ে আসেন ছাত্র ছাত্রী, অধ্যাপকেরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর রুদ্র রূপ দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পড়ুয়ারা। দু’দলের মধ্যে রীতিমতো ইট পাথর ছুড়ে হাতাহাতি শুরু হয়ে গিয়েছে দেখে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। একদল ছাত্রছাত্রী আর এক দলকে তাড়া করছে, চোখের সামনে এই ঘটনা দেখে অনেকেই আবার ক্লাসে ফিরে যান। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এ দিন দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর, জাতীয় সড়ক অবরোধকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল। আর প্রভাব পড়ল বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন পাঠনের উপরে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পুরাতন মালদহের এক ছাত্রী বলেন, ‘‘এ দিনের ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে ভয় হচ্ছে। ভাঙচুর হল। ইট, বেল্ট নিয়ে একে অপরকে মারছে। ভয়ে ক্লাসের মধ্যে হাত-পা কাঁপছিল।’’ তিনি জানান, নির্বাচন পর্ব না মিটলে আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন না।
পড়ুয়াদের পাশাপাশি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন রণক্ষেত্র হয়ে ওঠায় উদ্বিগ্ন অধ্যাপক মহলও। এক অধ্যাপক জানান, এ দিনের ঘটনা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নজিরবিহীন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই সংঘর্ষ চলতে থাকায় পড়ুয়ারা ভয় পেয়ে গিয়েছেন। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, নির্বাচন শুরু হওয়ার আগেই এমন ঘটনায় ব্যাহত হবে পঠন পাঠন। অধ্যাপকদের একাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি তুলেছেন। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
আট বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলেও ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়নি। জানুয়ারিতে প্রথম নির্বাচন হতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের ঘটনার পর কোনও বিভাগেই পঠন পাঠন হয়নি। এক ছাত্র বলেন, সপ্তাহখানেক আগে নির্বাচন নিয়ে টিএমসিপি-র দুই দলের মধ্যে গোলমাল হয়েছিল। তবে এ দিনের মতো হয়নি। কর্তৃপক্ষের উচিত কড়া হাতে বিষয়টি মোকাবিলা করা। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার অরিজিৎ দাস বলেন, পরিচয় পত্র ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে। পড়ুয়াদের আতঙ্কের কিছু নেই। নিরাপত্তা রক্ষীর সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy