Advertisement
০৫ মে ২০২৪

সংস্কৃতি যেখানে যেমন...

জলপাইগুড়ি জেলার সাতকুড়ায় দেবী গর্ভেশ্বরীর বার্ষিক উৎসব ও মেলা অনুষ্ঠিত হল ২১ থেকে ৩০ মার্চ। ঐতিহাসিকদের মতে কোচ রাজবংশের শাখা রায়কত বংশের রাজারা এর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। বরাদ্দ করতেন পুজোর জন্য অর্থও। কারও মতে এটি একটি পীঠ। আবার কেউ একে উপপীঠও বলে চিহ্নিত করেছেন।

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৫ ০২:১৭
Share: Save:

দেবী গর্ভেশ্বরী মেলায় লোকগীতি

লেখা ও ছবি : অনিতা দত্ত।

জলপাইগুড়ি জেলার সাতকুড়ায় দেবী গর্ভেশ্বরীর বার্ষিক উৎসব ও মেলা অনুষ্ঠিত হল ২১ থেকে ৩০ মার্চ। ঐতিহাসিকদের মতে কোচ রাজবংশের শাখা রায়কত বংশের রাজারা এর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। বরাদ্দ করতেন পুজোর জন্য অর্থও। কারও মতে এটি একটি পীঠ। আবার কেউ একে উপপীঠও বলে চিহ্নিত করেছেন। উৎসবের উদ্বোধন করেন অদ্বৈত গুরুর উত্তরপুরুষ ব্রজগোপাল গোস্বামী। উদ্বোধনী মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক দীপক কুমার রায়, মহাবীর চাচান। উৎসব প্রাঙ্গণে ত্রিস্রোতা মহাপীঠ মুক্তমঞ্চে পরিবেশত হল উত্তরবঙ্গের নিজস্ব লোকনৃত্য গীতগুলি। মনঃশিক্ষা ও দেহতত্ত্বের গান শোনান দিশারু রায়। দর্শকরা উপভোগ করেন বরকে আহ্বান করার বা বরণের নৃত্য বৈরাতি। শৌচালয়ের প্রয়োজনীয়তা বিষয়েও আঞ্চলিক ভাষায় সচেতনামূলক নাটক মঞ্চস্থ হয় রেণুকা রায়ের পরিচালনায়। আগত দর্শক ও শ্রোতাদের মুগ্ধ করে নীলিমা রায় ও তাঁর সম্প্রদায়ের পরিবেশিত ভাওয়াইয়া। রবি রায়ের নির্দেশনায় পরিবেশিত হয় মেচেনি নৃত্য। কুসংস্কার মুক্ত হয়ে এগিয়ে চলার পথ দেখান রাজবংশী ভাষার নাটক ‘আই সো আগে যাই’। পরিচালনা বরুণ কর্মকার। বাউল গানে আসর জমিয়ে দেন বিপুল রায়।

সুর লেগে আছে বারান্দায়

শব্দ এত বাঙ্ময় হয়ে উঠল কেন? ‘‘একরাশ খাতায় আঁকিবুকি হিজিবিজি’’ কথা শোনাবার যোগ্য উত্তরসূরি পেয়ে? কী শোনায় সেই কথা? ‘‘লাল বালতির উঠোন/ মেয়েটা সেদিন নীলচে ফ্রক।’’ তার ‘‘খোলা চুলে লেগে আছে বুড়ির চুল,’’ তখন ‘‘মনকেমন চৈত্রদুপুর/ শিমুলের লাল রং/ বাতাসে চৈত্রকথা।’’ ‘‘এক এক দিন বড় মনখারাপের/ উঠোনে ঝিকিয়ে উঠছে মায়ের মুখ।’’ ‘ঝিকিয়ে ওঠে ‘জলছবি’। সেই ছবিতে ফিরে ফিরে আসে ‘‘বয়ঃসন্ধি গন্ধ, মিঠেল আকাশ’’ আর ‘গোল্লাছুট’। শব্দধারার স্বতঃস্ফূর্ত সুরঝংকার, চকিতে বর্ণবন্দি করেন মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস। সেই ঝংকার আর বর্ণমালার সুরে সুরে সেজে ওঠে তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘সুর লেগে আছে বারান্দায়’ (সিগনেট, কলকাতা)

লোকনাট্যের কর্মশালা

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইন্দ্রনীল আচার্যের উদ্যোগে এবং ইউজিসি-র অর্থানুকূল্যে অনুষ্ঠিত হল উত্তরবঙ্গের হারিয়ে যাওয়া লোকনাট্যের কর্মশালা। ২১ ও ২২ মার্চ দার্জিলিং জেলার রুইধাসা গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত নারায়ণ জোতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লোকনাট্যের শিল্পীরা তাদের পালাগান পরিবেশন করেন। প্রফুল্ল সিংহের পরিচালনায় পরিবেশিত হল মনসামঙ্গল-গান কেন্দ্রিক ‘বিষহরা’ পালা। রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক লোকনাট্য ‘পটুয়া’তে অংশ নেন বরিষ্ঠ শিল্পীরা। শিবেন সিংহ নির্দেশিত সত্যপীর পালাগানের একটি পালা বিভিন্ন আঙ্গিকে পরিবেশিত হল। তরাইয়়ের এক বিশেষ লোকনাট্য ধারা ‘পাঁচালি’ পরিবেশিত হয়় শিল্পী দেবলাল সিংহের তত্ত্বাবধানে। সামাজিক ঘটনাকেন্দ্রিক পালা ‘হালুয়া হালুয়ানি’ দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায়। ফিরে পাওয়া গেল ‘শিরুয়া বিশু়য়া’। সেখানে আমরা পাই চৈত্র সংক্রান্তির দিন তরাই অঞ্চলে প্রচলিত লোকাচার ও নৃত্যআঙ্গিক।

শ্রেয়সীর ছবি

সম্প্রতি বেঙ্গল আর্ট গ্যালারির আমন্ত্রণে কলকাতার আইসিসিআর-এ নন্দলাল বোস গ্যালারিতে এবং কেমোল্ডে সম্মেলক চিত্রপ্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছিল তাঁর ছবি। জলপাইগুড়িবাসী এই শিল্পীর নাম শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়। ছবির মাধ্যম অ্যাক্রেলিক। আইসিসিআর-এ প্রদর্শিত তিনটি ছবি ফিয়ার সিরিজের। একটি ছবির দৃশ্যে বালিঘড়িটিতে যেন বাঙ্ময় হয়ে উঠেছে ঘাত-প্রতিঘাত। ‘এক্সাইল’ বা নির্বাসন শীর্ষক ছবিটিতে ধরা পড়েছে শামুকের খোলস থেকে বেরিয়ে আসা নারীর মুখ, যেখানে নির্বাসনের কথা মুখ্য। অপর ক্যানভাস জুড়ে শামুকের খোলসের ভেতর গুটিয়ে থাকা নারীশরীর। কেমোল্ডে প্রদর্শিত ছবির শিরোনাম ‘ফেস অব মাই মাদার’। যেখানে নারীর মুখে ফুটে উঠেছে টানাপড়েনের অভিব্যক্তি। ছবিটি অল বেঙ্গল এডিটরস অ্যান্ড জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা বেস্ট পেন্টিং হিসাবে পুরস্কৃত হয়েছে। ২০-২৫ মার্চ কলকাতার গ্যালারি গোল্ডে প্রদর্শিত হল শিল্পীর ‘ট্রিবিউট টু ইয়োর রেড পেপার’ শীর্ষক ছবিটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE