Advertisement
E-Paper

শয্যা কম, বিঘ্ন অস্ত্রোপচারেও

রাজ্যে পালাবদলের পরে গত চার বছরে সরকারি উদ্যোগে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে গড়ে উঠেছে ক্রিটিকাল কেয়ার, সিটিস্ক্যান, এসএনসিইউ ও ডায়ালিসিস ইউনিট। চালু হয়েছে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানও। এমনকী, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের পরিকাঠামো তৈরির কাজও জোরকদমে চলছে।

গৌর আচার্য

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৮
এভাবেই হাসপাতালে থাকছেন রোগীরা। — নিজস্ব চিত্র

এভাবেই হাসপাতালে থাকছেন রোগীরা। — নিজস্ব চিত্র

রাজ্যে পালাবদলের পরে গত চার বছরে সরকারি উদ্যোগে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে গড়ে উঠেছে ক্রিটিকাল কেয়ার, সিটিস্ক্যান, এসএনসিইউ ও ডায়ালিসিস ইউনিট। চালু হয়েছে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানও। এমনকী, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের পরিকাঠামো তৈরির কাজও জোরকদমে চলছে।

তবু পরিকাঠামোর অভাবে হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে শয্যা বাড়ানো সম্ভব হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। প্রতি বছরই গরম ও বর্ষার মরসুমে অতিরিক্ত রোগীর চাপে ওই দুটি ওয়ার্ডে চিকিত্সা পরিষেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে, দীর্ঘ দিন ধরে হাসপাতালে চিকিত্সকের অভাব ও হাসপাতালের শল্য অপারেশন থিয়েটার বেহাল হয়ে বন্ধ থাকার কারণেও চিকিত্সা পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি। ফলে শল্য রোগীদের প্রসূতি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। তাতে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, জায়গার অভাবে পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে সম্প্রসারণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়াও সরকারি জটিলতার জেরে অপারেশন থিয়েটারের পরিকাঠামো উন্নয়ন করে সেটি চালুর প্রক্রিয়াও ধীরগতিতে চলছে। তাঁদের অভিযোগ, গত তিন বছর ধরে হাসপাতালের তরফে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে একাধিকবার পর্যাপ্ত চিকিত্সক নিয়োগের অনুরোধ করা হলেও কোনও লাভ হয়নি।

উত্তর দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকারের দাবি, জায়গার অভাবে মেডিসিন ওয়ার্ড সম্প্রসারণ করে শয্যা বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই খুব তাড়াতাড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ইনডোর বিভাগ চালু করে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে। তাঁর কথায়, ‘‘পূর্ত দফতর হাসপাতালের শল্য অপারেশন থিয়েটারের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করছে। এক মাসের মধ্যেই সেটি আবার চালু করা সম্ভব হবে। আর হাসপাতালে অতিরিক্ত চিকিত্সক নিয়োগের বিষয়টি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর খতিয়ে দেখছে।’’ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন কেয়া চৌধুরীর দাবি, হাসপাতালের সার্বিক চিকিত্সা পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য সমিতির তরফে রাজ্য সরকারের কাছে একটি লিখিত প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুত সমস্যা মিটবে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ৪৫টি করে শয্যা রয়েছে। ওয়ার্ড দু’টিতে সারা বছর গড়ে ৪০ জন করে রোগী ভর্তি থাকেন। তবে প্রতিবছর গরম ও বর্ষার মরসুমে ওই দুটি ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ থেকে ৭৫ জন। মূলত এপ্রিল থেকে অগস্ট পর্যন্ত দুটি ওয়ার্ডে অতিরিক্ত রোগীর চাপ থাকে।

হাসপাতালের সাধারণ রোগ বিশেষজ্ঞ পার্থসারথি দাস বলেন, ‘‘প্রতি বছর গরম ও বর্ষায় অতিরিক্ত রোগী থাকায় মেডিসিন ওয়ার্ডের মেঝেতে তাঁদের থাকতে হয়। তাতে তাঁদের তেমন সমস্যা, তেমন চিকিৎসকদেরও সমস্যা।’’ সুপার অনুপবাবু জানিয়েছেন, হাসপাতালে বর্তমানে ৪২ জন চিকিত্সক রয়েছেন। আরও ২০ জন চিকিত্সকের দরকার।

প্রায় এক দশক আগে হাসপাতালে মানসিক ওয়ার্ড তৈরির কাজ শুরু হলেও ২০১৪ সালে হাসপাতাল চত্বরে ১০ তলার সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু হওয়ার পরে ওই ওয়ার্ডটির কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেই মানসিক রোগীদের চিকিত্সার পরিকাঠামো থাকবে, তাই আলাদা করে ওই ওয়ার্ড তৈরির কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়াও হাসপাতালে গড়ে তিন জন করে অতিরিক্ত সাধারণ রোগ, প্রসূতি, অস্থি ও চোখ বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের দরকার। হাসপাতালে প্রসূতি, শল্য ও চোখ বিভাগের জন্য তিনটি অপারেশন থিয়েটার থাকলেও গত জানুয়ারি মাস থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের গোলযোগ ও একাধিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ার কারণে শল্য বিভাগের অপারেশন থিয়েটারটি বেহাল হয়ে বন্ধ হয়ে রয়েছে। ফলে শল্য রোগীদের প্রসূতি বিভাগে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। তাতে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে।

Poor Infrastructure Raiganj District Hospital Raiganj District Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy