শিলিগুড়ি পুরসভার নতুন ভবন নির্মাণস্থলে জমে আছে বৃষ্টির জল। ছবি: বিনোদ দাস
শহরের বাসিন্দাদের বাড়িতে আনাচে কানাচে জমে থাকা জলে ডেঙ্গিবাহক মশা জন্মে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে বলে শিলিগুড়ি পুরসভার তরফে স্বাস্থ্যকর্মীরা অভিযান করছেন। বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষা হচ্ছে। জল, আবর্জনা পরিষ্কার না করলে নোটিসও ধরাচ্ছে পুরসভা। পরিত্যক্ত জমিতে জল জমে থাকলে জরিমানা করার কথা বলা হচ্ছে। অথচ, শিলিগুড়ি পুরসভা চত্বরে নির্মীয়মাণ নতুন পুর ভবনের কাজের জায়গাতেই জল জমে মশার আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। পুরসভার ভূমিকা নিয়ে তাই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। শুধু তারাই নয়, পুরসভার কর্মীদের একাংশের মধ্যে তা নিয়ে দুর্ভাবনা ছড়িয়েছে। পুরসভা চত্বরে মশার উপদ্রব বেড়েছে বলে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘বিষয়টি দেখা হচ্ছে। ওই জল পরিষ্কার করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গির সংক্রমণ প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৩৩ জন হয়েছে। জুলাইয়ের শেষের দিক থেকেই বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গি সংক্রমণ। শহরের বিভিন্ন এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। ডেঙ্গি রোধে বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষার উপরেও তাই জোর দিতে বলা হয়েছে। মাসে দু’বারের বদলে, এ বার চার বার করে সমীক্ষা হচ্ছে। কোথাও জল জমে রয়েছে কি না, তাতে লার্ভা রয়েছে কি না দেখা হচ্ছে। ‘ভেক্টর কন্ট্রোল টিম’ সে মতো ব্যবস্থা নিচ্ছে। ৫, ১০, ২৭ নম্বরের মতো ওয়ার্ডে কয়েকটি বাড়িতে ডেঙ্গি সমীক্ষার কাজে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়া নিয়েও হইচই শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত বাসিন্দাদের একাংশের নামে পুলিশে অভিযোগ দায়েরও করা হয়েছে। অথচ, খাস পুরসভা চত্বরে কেন জল জমে থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন বাসিন্দারা।
স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্তের বক্তব্য, ‘‘পুরসভার নতুন ভবনের নির্মাণ কাজের জন্য জল নিতে পাশে ওই চৌবাচ্চার মতো করা হয়েছে। তবে সেখানে প্রতিদিনই লার্ভানাশক স্প্রে করা হচ্ছে।’’ বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, নির্মাণ কাজের জন্য জল তোলা হলে, সেখানে স্প্রে করেও লাভ নেই। কেন না, জলের সঙ্গে স্প্রে করা তেলও তো তুলে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে মশার লার্ভা জন্মানোর আশঙ্কা করছেন অনেকেই। তা ছাড়া, নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কয়েক জনের দাবি, শহরের বাসিন্দারা যেখানে নির্মাণ কাজ করছেন, সেখানে জল জমে থাকলে এবং প্রতিদিন স্প্রে করা হয় বলে জানালে কি পুরসভা তখন মানবে? দু’রকম নিয়ম হওয়া ঠিক নয়। পুরসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির অমিত জৈন বলেন, ‘‘পুরসভা চত্বরে জল জমে থাকায় কর্মীদের অনেকে চিন্তায় রয়েছেন। পুরসভা চত্বরই মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ সাধারণ মানুষের বাড়িতে গিয়ে জমা জল পরিষ্কারের কথা বলছেন, আর নিজেদের জায়গায় জল জমে থাকলে তা পরিষ্কার করবেন না, তা হয় না।’’ তাঁর দাবি, পুরসভার এই ‘উদাসীনতার’ জন্য সকলেই বিপদে পড়বেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy