শোকে ভেঙে পড়ছেন শহিদের পরিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
‘‘অমন ভাবে বাবার মুখ ঢাকা কেন?’’ অবাক বিস্ময়ে সে দিকে তাকিয়েছিল বছর এগারোর রোহন। বাবার কোথায় লেগেছে?
কাশ্মীরে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত বিএসএফ জওয়ান দীনেশ গিরির সাদা কাপড়ে মোড়া মৃতদেহ ঘরের চৌহদ্দি ছুঁতেই হতবাক কয়েকটি চোখ যেন বিশ্বাসই করতে পারছিল না। স্ত্রী সরিতাদেবী, দুই ছেলে রবি ও রোহন এদিন পর্যন্ত জানত দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে বাবা বিশ্রাম নিতে আসছে বাড়িতে। এখানে রেখে তাঁর চিকিৎসা করানো হবে। কিন্তু অমন ভাবে মুখ ঢাকা কেন? বুঝেও বুঝতে পারছিলেন না কেউই। বাবা, মা, ভাইয়েরা অবশ্য আগেই খবর পেয়েছিলেন। তবু এই শেষবারের মতো ঘরের ছেলেকে দেখছেন মনে আসতেই ভেঙে পড়েছিলেন গোটা গিরি পরিবারই। শুধু পরিবারই বা কেন? পাড়ায় সবার প্রিয় চির যুবা ছেলেটির শেষ যাত্রায় ভেঙে পড়েছিল গোটা পরিবারই।
শুক্রবার রাতে শ্রীনগরের কাছে গৌরীবন এলাকায় জঙ্গিদের আক্রমণে প্রাণ হারান শিলিগুড়ির দুর্গানগরের বাসিন্দা বিএসএফের হেড কনস্টেবল দীনেশ। ২৩ টি গাড়ির কনভয়ের শেষ গাড়িতে ছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, জঙ্গিরা প্রথমে বোমা ছোড়ে। তাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা মারেন চালক। সেই সময় দুপাশ থেকে বেশ কয়েকজন লাগাতার গুলি ছুড়তে থাকায় গাড়িতে থাকা বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম হন আরও কয়েকজন। ‘‘চালক নিয়ন্ত্রণ না হারালে হয়ত কাউকেই প্রাণ হারাতে হত না’’—আক্ষেপ ঝরে পড়ে ছোট ভাই সন্তোষের গলায়। এদিন বিকেলের বিমানে দিল্লি থেকে বাগডোগরায় আনা হয় শহিদের দেহ। তাঁকে শহিদের সম্মান জানানো হয় বিএসএফের পক্ষ থেকে। দেহতে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় উপচে পড়ায় দ্রুত তা সরিয়ে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানানো হয় পরিবারের তরফ থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy