ধৃত পরিমল। — নিজস্ব চিত্র
জিম-পার্লারের তরুণী কর্মী সঙ্গীতা কুণ্ডুকে অপহরণের অভিযোগে তিনি যে সংস্থায় চাকরি করতেন, তার কর্ণধার পরিমল সরকার সহ ৪ জনকে পুলিশ সোমবার রাতে গ্রেফতার করল। পুলিশ জানায়, ধৃত বাকি ৩ জনও পরিমলবাবুর সংস্থার কর্মী। তাঁদের নাম সুবিমল ওরফে টাপ্পু হাজরা, দুঃখনাথ রায় ও তপন রায়। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক শুভদীপ রায় ধৃতদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার আবেদন মঞ্জুর করেন। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘তরুণীর অন্তর্ধান রহস্যের ব্যাপারে কিছু স্পষ্ট সূত্র মিলেছে। ধৃত চার জনকে আরও জেরা করা হবে।’’
পুলিশের দাবি, একাধিক মোবাইলের কল-রেকর্ড থেকে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে। সেই তথ্যের সঙ্গে ধৃতদের বয়ান মিলিয়ে দেখার সময়ে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। তাই ধৃতদের ১৪ দিনের জন্য হেফাজতে নিয়ে জেরার জন্য সহকারী সরকারি আইনজীবী প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় আদালতের কাছে আবেদন জানান। কিন্তু, পরিমলবাবুদের আইনজীবী শুভজিৎ ভট্টাচার্য আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল অন্তর্ধান রহস্যের কিনারা করার জন্য গোড়া থেকেই পুলিশকে তদন্তে সহযোগিতা করা সত্ত্বেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের আরেক আইনজীবী অত্রি শর্মার দাবি, তাঁদের মক্কেলরা কোনও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন।
১৭ অগস্ট সঙ্গীতা তাঁর কর্মস্থল শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার সেবক রোডের অফিস থেকে নিখোঁজ হন। তিনি ওই অফিসের উপরেই পরিমলবাবুর দেওয়া একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। পরিমলবাবু ২৬ অগস্ট ‘মিসিং ডায়েরি’ করেন। নিখোঁজ তরুণীর মা অঞ্জলিদেবী ও দাদা শম্ভুবাবু ৫ সেপ্টেম্বর ওই থানাতেই পরিমলবাবুর বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু অন্তর্ধান রহস্যের কিনারা করতে না পারায় পুলিশের সমালোচনায় সরব হন শহরের অনেকে। ইতিমধ্যে পরিমলবাবু আগাম জামিনের আবেদন করেও শেষ পর্যন্ত শুনানির আগেই তা প্রত্যাহার করেন। নিখোঁজ তরুণীর পরিবারের তরফে রাজ্য পুলিশের এডি়জি তথা আইজি (উত্তরবঙ্গ) নটরাজন রমেশবাবুর কাছেও দ্রুত রহস্যের কিনারা করার দাবি জানানো হয়। এডিজি-র দফতর থেকে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচার রিপোর্ট তলব করা হয়। বিষয়টি জানার পরে রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থও রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। শিলিগুড়ির সিপি-র তরফ থেকে তাঁকে রিপোর্ট পাঠানো হয়। পুজোর পরে পুলিশি তদন্তেও গতি আনা হয়।
ওই তরুণী নিখোঁজ হওয়ার পরে ৩ মাস হতে চলেছে। ইতিমধ্যে পরিমলবাবু ও সংস্থার কর্মীরা একাধিকবার পুলিশের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও তাঁদের গ্রেফতার করার আড়ালে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে অভিযোগ পরিমলবাবুর স্ত্রী গার্গীদেবীর। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ব্যবসা বন্ধ করার চক্রান্ত থাকতে পারে। সেটাও সামনে আসা দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy