যথাযথ ভাবে আইন প্রয়োগ না হওয়াতেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পুলিশ অফিসাররা আক্রান্ত হচ্ছেন। এমনই মনে করেন শিলিগুড়ির রেল পুলিশ সুপার সুনীল যাদব। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের দফতরে এক কর্মশালায় বিভাগীয় আধিকারিকদের আইন এবং আইনের প্রয়োগ পদ্ধতি ভাল ভাবে বুঝি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার।
গত জানুয়ারি মাসে শিলিগুড়িতে রেল পুলিশ সুপারের দায়িত্ব নিয়েছেন আইপিএস অফিসার সুনীল যাদব। রেল পুলিশ সূত্রের খবর, তাঁর নির্দেশেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় রেল পুলিশের সদর দফতরে আইনি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালার শুরুতে বক্তব্য রাখার সময়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রশিক্ষকদের উদ্দেশ্যে সুনীলবাবু বলেন, “অফিসারেরা সকলেই আইনের কোন ধারায় কী বলা আছে জানেন, তাই সে সব নিয়ে বেশি না বলে আইনের প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করুন।”এরপরেই, অফিসারদের উদ্দেশে পুলিশ সুপার বলেন, “বিভিন্ন জায়গায় আইসি, ওসি-রা যে মার খাচ্ছে তার কারণ, তাঁরা আইন জানে না, আইনের প্রয়োগ জানে না। আর আইনের প্রয়োগ জানে না বলেই জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যা হয়। সে কারণেই এই কর্মশালা আয়োজনের উদ্যোগ।”
চলতি সপ্তাহেই মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে পরপর দু’দিন পুলিশের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসিকে মারধর করার অভিযোগও ওঠে। এই ঘটনাগুলির প্রেক্ষিতেই এ দিন রেল পুলিশ সুপার ‘আইনের প্রয়োগ পদ্ধতি’ না জানার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন বলে করছেন রেল পুলিশের অফিসারেরা।
প্ল্যাটফর্ম থেকে উদ্ধার হওয়া অথবা স্টেশন চত্বরে ঘুরে বেড়ানো অনাথ এবং ভবঘুরে শিশু কিশোরদের নিরাপত্তার দায়িত্ব রেল পুলিশের। সে কারণে এ দিন শিশুদের যৌন হয়রানি থেকে সুরক্ষা দেওয়ার পকসো আইন এবং জুভেনাইল জাস্টিক অ্যাক্ট নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি দুই জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিকরাও। রেল পুলিশ সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে ডুয়ার্সের একটি স্টেশনে কয়েকটি শিশু পাচার হওয়ার অভিযোগ পাওয়ার পরেও পদক্ষেপ করতে দেরি হওয়ায় রেল পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। এ দিনের কর্মশালায় নিউ জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি সহ ডুয়ার্সের বিভিন্ন স্টেশনের দায়িত্বে থাকা রেল পুলিশের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। নাবালকদের রাতভর থানায় বসিয়ে না রাখা, রাতের বেলায় শিশু কিশোরদের হেফাজতে না নেওয়ার বিষয়ে অফিসারদের বারবার সর্তক করে দিয়েছেন রেল পুলিশ সুপার।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে গত বছর ন’শোরও বেশি শিশু-কিশোর উদ্ধার হয়েছিল বলে কর্মশালায় যৌথ আয়োজনের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে। সংগঠনের কো অর্ডিনেটর তাপস কর্মকার বলেন,“পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগই বেশি ওঠে। তা নিয়েই অসন্তোষও তৈরি হয়। এ দিনের কর্মশালায় হাজির পুলিশ আধিকারিকদের নানা প্রশ্ন ছিল, সে বিষয়গুলি এ দিন বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy