রাজ্য মহিলা কমিশনে উত্তরবঙ্গের প্রতিনিধি না থাকায় এখানকার মহিলাদের সমস্যা পৌঁছচ্ছে না কমিশনের কাছে। শনিবার শিলিগুড়িতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত মহিলাদের নির্যাতন ও তার প্রতিরোধ বিষয় সেমিনারে উপস্থিত হয়ে এই মন্তব্য করেন রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্য শিখা সরকার আদিত্য।
রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান সুনন্দা মুখোপাধ্যায়ের কাছে এ ব্যপারে সুপারিশ করবেন বলে জানান তিনি। ইতিমধ্যেই মহিলা কমিশনের সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন দু’জন। সেই জায়গায় অন্তত একজনকে উত্তরবঙ্গ থেকে নির্বাচন করলে তাতে উত্তরবঙ্গের মানুষ লাভবান হবেন বলে দাবি করেন তিনি।
শিখাদেবী বলেন, “এর আগে শিলিগুড়ি থেকে জ্যোত্স্না অগ্রবাল সদস্য ছিলেন। কিন্তু তার পরে কেউ নেই। আমি চাইছি শিলিগুড়ি বা উত্তরবঙ্গের কেউ অন্তত প্রতিনিধি থাকুক। তাতে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ বাড়বে।” এদিন সেমিনারের সূচনা করেন শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা রাজ্য স্বাস্থ্য স্ট্যন্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য জ্যোত্স্না অগ্রবাল, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপিকা গঙ্গোত্রী চক্রবর্তী প্রমুখ।
কমিশন সূত্রের খবর, প্রতি এক হাজারে উত্তরবঙ্গের মিলিত আবেদনের যে মোট পরিমাণ, তার চেয়ে কলকাতার অভিযোগের পরিমাণ বেশি। গড়ে প্রতি এক হাজার আবেদনের মধ্যে কলকাতা থেকে আবেদন যায় ২০৮ টি। অন্যদিকে দার্জিলিং থেকে ২ টি, জলপাইগুড়ি থেকে ৩ টি, কোচবিহার থেকে ৮ টি, উত্তর দিনাজপুর থেকে ১২ টি, দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে ১০টি এবং মালদা থেকে ৩৮ টি। কলকাতা থেকে যত দূরের জেলা আবেদনের সংখ্যা ক্রমশ কমেছে বলে তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গিয়েছে। উত্তরবঙ্গে মহিলাদের অধিকার লঙ্ঘণের ঘটনা ঘটলেও, তা যথাযথ পদ্ধতিতে কমিশনের কাছে পৌঁছছে না বলে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও অভিযোগ করেছে। এই চিত্রটা বদলানো দরকার বলে দাবি করেছেন শিখাদেবী।
রাজ্যে পুলিশের ভূমিকা ঠিক না থাকাতে মহিলারা অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক বিচার পাচ্ছেন না বা পেতে দেরি হচ্ছে বলেও এ দিনের আলোচনায় অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে পুলিশকে আরও বেশি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে বলে বক্তব্যে জানান তিনি। মহিলাদের নিজেদেরও আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন গঙ্গোত্রীদেবীও। এ দিন বিধায়ক রুদ্রবাবুর বক্তব্য, সরকার ও সাধারণ বাসিন্দাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে আরও দায়িত্ব নিতে আহ্বান জানান তিনি। মহিলা কমিশনের কাছে যত অভিযোগ জমা পড়ে, তার মধ্যে ঘরোয়া হিংসার সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি বলে আলোচনায় উঠে আসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy