এসজেডিএ-র বোর্ড সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিলেন কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার। সোমবার এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান, কার্যনির্বাহী আধিকারিক ও নগরোন্নয়ন দফতরে সচিবের কাছে ওই পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। কংগ্রেস বা বিরোধী দলের হয়ে একমাত্র তিনি এসজেডিএ বোর্ডের সদস্য ছিলেন। এসজেডিএর বিভিন্ন প্রকল্পে বহু কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অথচ কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্করবাবু বোর্ড সদস্য থাকায় দলের তরফে তা নিয়ে আন্দোলন করার ক্ষেত্রে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে দলের একাংশ দাবি করেন। রবিবার শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কর্মিসভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী তাঁকে এসজেডিএ সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশও দেন। শঙ্করবাবুও এ ব্যাপারে সহমত পোষণ করেন।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “যে কারণে তিনি ইস্তফা দিতে চেয়েছেন তাতে আরও আগেই তিনি তা করতে পারতেন। এ নিয়ে বলার কিছু নেই।” এসজেডিএ’র কার্যনির্বাহী আধিকারিক আর বিমলা জানান, দফতরে ‘রিসিভিং’ বিভাগে এ দিনই ইস্তফা দিতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন শঙ্করবাবু। সিইও বলেন, “মূল চিঠিটি শঙ্করবাবু চেয়ারম্যানকে লিখেছেন। আমাকে তার প্রতিলিপি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে কী নিয়ম রয়েছে তা দেখে সেই মতো ব্যবস্থানেওয়া হবে।”
এসজেডিএ’র নানা প্রকল্পে অন্তত ১০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পুলিশে অন্তত ৮ টি অভিযোগও করা হয় এসজেডিএ’র তরফে। পুলিশ এসজেডিএ’র তিনজন বাস্তুকার এবং ঠিকাদার সংস্থার ১৩ জনকে গ্রেফতার করে। প্রাক্তন সিইও তথা তৎকালীন মালদহের জেলাশাসক গোদালা কিরণ কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। তবে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তিনি জামিন পেয়ে যান। পুলিশের তরফে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বোর্ডের সদস্য এসজেডিএ’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, বিধায়ক শঙ্কর মালাকার, প্রাকক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা, জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের তৎকালীন সভাপতি চন্দন ভৌমিককে। দুর্নীতি কাণ্ডে বোর্ড সদস্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সুজয় ঘটকের নেতৃত্বে আন্দোলনে নামে যুব কংগ্রেসও। তবে দলের বিধায়ক তথা দীর্ঘদিন জেলা সভাপতির দায়িত্বে থাকা শঙ্করবাবু এসজেডিএ’র বোর্ড সদস্য থাকায় তা নিয়ে তৃণমূলের তরফে কংগ্রেসের আন্দোলনকে কটাক্ষ করা হয়। দলের নেতাদের একাংশও মত দেন এ পরিস্থিতিতে এসজেডিএ’র সদস্য পদ থেকে শঙ্করবাবুর পদত্যাগ করা উচিত। মাস কয়েক আগে প্রাক্তন জেলা সভাপতি উদয় দুবে কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় তা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন। রবিবার ফের তিনি শিলিগুড়িতে কর্মিসভায় তা নিয়ে সরব হন। এর পরেই অধীরবাবু ওই পদ থেকে শঙ্করকে ইস্তফা দিতে নির্দেশ দেন। শঙ্করবাবু বলেন, “প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির নির্দেশ মেনে ইস্তফা পত্র পাঠিয়ে দিয়েছি।” প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা এসজেডিএর প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “শঙ্করবাবু-সহ বোর্ড সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তো রয়েইছে। ওঁর সদিচ্ছা থাকলে আগেই পদ থেকে সরে দাঁড়াতে পারতেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy