Advertisement
০১ মে ২০২৪
তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ

গীতাঞ্জলি প্রকল্পে অনিয়ম, কোন্দল

সংখ্যালঘুদের বাড়ি তৈরির গীতাঞ্জলি প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যাঁদের নিজস্ব বাড়ি নেই, তাঁদেরকেই ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে, কোচবিহারে মাথাভাঙায় যাঁরা ইন্দিরা আবাসে ঘর পেয়েছেন, তাঁদেরও গীতাঞ্জলি প্রকল্পের প্রাপকের তালিকায় রাখা হয় বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০১:২৮
Share: Save:

সংখ্যালঘুদের বাড়ি তৈরির গীতাঞ্জলি প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যাঁদের নিজস্ব বাড়ি নেই, তাঁদেরকেই ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে, কোচবিহারে মাথাভাঙায় যাঁরা ইন্দিরা আবাসে ঘর পেয়েছেন, তাঁদেরও গীতাঞ্জলি প্রকল্পের প্রাপকের তালিকায় রাখা হয় বলে অভিযোগ। বিধায়কের অনুমতি নিয়েই প্রকল্পের প্রাপকের তালিকা তৈরি হয় বলে অভিযোগ উঠেছে প্রাক্তন বনমন্ত্রী তথা বিধায়ক হিতেন বর্মনের বিরুদ্ধেও। অভিযোগ ঘিরে মাথাচাড়া দিয়েছে শাসকদলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব। মাথাভাঙা ১ পঞ্চায়েত সমিতির তরফেই প্রকল্পের প্রাপকদের নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

তৃণমূলেরই একটি অংশ ইতিমধ্যে মাথাভাঙা ১ বিডিওকে এ বিষয়ে অভিযোগ জানান বলে জানা গিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ প্রসঙ্গে কিছু সত্যতা মিলেছে বলেও জানা দিয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধায়ক ছাড়াও মহকুমাশাসক এবং বিডিওকে নিয়ে গঠিত ৩ জনের কমিটি প্রকল্পে প্রাপকদের তালিকা তৈরি করে। বিডিও থান্ডুপ ভুটিয়া বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। কয়েকটি ক্ষেত্রে অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে।” প্রাক্তন বনমন্ত্রী হিতেনবাবু বলেন, “এখানে পক্ষপাতিত্ব বা অনিয়মের সুযোগ নেই। আমাকে কেউ অভিযোগ জানায়নি। যদি এমন ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে আমরাই ব্যবস্থা নেব।”

মাথাভাঙা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা আবু তালেব আজাদও অভিযোগ পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, “বহু ক্ষেত্রেই যাঁদের পাকা বাড়ি রয়েছে, কিছু দিন আগে ইন্দিরা আবাসে ঘর পেয়েছেনতাঁদের নামে গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ঘর দেওয়া হয়েছে বলে নানা অভিযোগ পেয়েছি। কিছু অভিযোগ প্রমাণিতও হয়েছে। বাকিগুলি তদন্ত চলছে। প্রাপক তালিকা তৈরির সময় পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করলে এমন অভিযোগ উঠত না। বিধায়ক কিছু জানাননি।” হিতেনবাবুর পাল্টা দাবি, “প্রকল্পে প্রাপকদের তালিকা তৈরিতে পঞ্চায়েত সমিতির ভূমিকা নেই। তাঁদের বলার কোনও প্রয়োজন হয়নি।”

প্রশাসন সূত্রের খবর, গীতাঞ্জলির ‘আমার বাড়ি’ প্রকল্পে মাথাভাঙায় ঘর বিলির প্রক্রিয়া গত লোকসভা ভোটে আগে থেকে শুরু হয়েছে। ওই প্রকল্পে শীতলখুচি বিধানসভা এলাকায় ৫৭ জনের নাম তালিকাভূক্ত করে পাঠানো হয়। তালিকা অনুযায়ী বরাদ্দ মিলেছে কয়েক জায়গায় কাজও শুরু হয়েছে। তৃণমূল কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, কুর্শামারি, জোরপাটকি এবং শিকারপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৬ প্রাপকদের মধ্যে ৪ জনের পাকা বাড়ি রয়েছে। ২ জন কিছুদিন আগে ইন্দিরা আবাসে ঘর পেয়েছেন বলে অভিযোগ।

প্রাপকদের তালিকায় কুর্শামারির তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি জুলজুলাল মিয়াঁর শ্বশুরের নাম রয়েছে বলে অভিযোগ। এলাকার তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য আকতার আলির অভিযোগ, “জুলজুল মিয়াঁর শ্বশুরের পাকা বাড়ি রয়েছে। এলাকায় অনেক গরিব মানুষ রয়েছেন, যাঁদের ঘর নেই বললেই চলে। তাঁদের কেন দেওয়া ঘর দেওয়া হল না এটা জানানো উচিৎ।” জুলজুলাল মিয়াঁ ওই অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর পাল্টা দাবি, “আমার শ্বশুরের নামে কোনও ঘর বরাদ্দ হয়নি। একই নামে অন্য কারও ঘর বরাদ্দ হয়েছে। আমার কিছু বলার নেই। ব্লক প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cooch behar gitanjali tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE