Advertisement
E-Paper

ঘিসিঙ্গের মৃত্যুতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে তাঁর দল

জীবনের শেষ প্রান্তে এসে পাহাড়ের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পাওয়ার চেষ্টার কসুর করেননি সুবাস ঘিসিঙ্গ। কিন্তু সাড়া পাননি। অথচ মারা যাওয়ার পক্ষকালের মধ্যেই জিএনএলএফ সুপ্রিমোকে ঘিরেই পাহাড়ের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন টানাপড়েন। প্রয়াত নেতার মূর্তি গড়ে দলের পালে সহানুভূতির বাতাস টেনে হারানো জমি খুঁজতে মরিয়া হয়ে উঠেছে জিএনএলএফ। বসে নেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাও। দলীয় নেতাদের অনেকেই ঘিসিঙ্গের আবক্ষ মূর্তি লালকুঠিতে বসানোর দাবি তুলেছেন। রোহিণীর রাস্তাটিও ঘিসিঙ্গের নামেই করার প্রস্তাবও ভেবে দেখছে জিটিএ।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:২৭

জীবনের শেষ প্রান্তে এসে পাহাড়ের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পাওয়ার চেষ্টার কসুর করেননি সুবাস ঘিসিঙ্গ। কিন্তু সাড়া পাননি। অথচ মারা যাওয়ার পক্ষকালের মধ্যেই জিএনএলএফ সুপ্রিমোকে ঘিরেই পাহাড়ের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন টানাপড়েন।

প্রয়াত নেতার মূর্তি গড়ে দলের পালে সহানুভূতির বাতাস টেনে হারানো জমি খুঁজতে মরিয়া হয়ে উঠেছে জিএনএলএফ। বসে নেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাও। দলীয় নেতাদের অনেকেই ঘিসিঙ্গের আবক্ষ মূর্তি লালকুঠিতে বসানোর দাবি তুলেছেন। রোহিণীর রাস্তাটিও ঘিসিঙ্গের নামেই করার প্রস্তাবও ভেবে দেখছে জিটিএ।

মোর্চার অন্দরের খবর, শীঘ্রই পাহাড়ে পঞ্চায়েত নিবার্চন। ঘিসিঙ্গ-সহানুভূতি কাজে লাগিয়ে পাহাড়ে ফের প্রধান প্রতিপক্ষের আসনটি অন্তত নিতে চাইছে জিএনএলএফ। যা দেখে কপালে ভাঁজ পড়েছে মোর্চা নেতাদের। জিটিএ-এর আগামী বৈঠকে তাই ঘিসিঙ্গের মৃত্যু নিয়ে শোক প্রস্তাব নিতে চলেছে দল। সহানুভূতির হাওয়া কাজে লাগিয়ে ঘিসিঙ্গ পুত্র মোহন যাতে দলকে চাঙ্গা করতে না পারেন সেটাই গুরুঙ্গদের এখন লক্ষ্য বলে মোর্চা সূত্রে জানা গিয়েছে।

জিটিএ সদস্য কিংবা প্রথম সারির মোর্চা নেতারা ঘিসিঙ্গের ব্যাপারে আসরে না নামলেও প্রবীণ নেতারা ময়দানে নেমেছেন। যেমন, একদা বিমল গুরুঙ্গের ঘনিষ্ঠ অনুগামী তথা কার্শিয়াং পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান বলরাম ছেত্রী, রোহিণীর রাস্তাটি ‘সুবাস ঘিসিঙ্গ পথ’ হিসেবে ঘোষণার জন্য জিটিএ-এর কাছে দাবি জানিয়েছেন। লালকুঠিতে যাতে ঘিসিঙ্গের একটি আবক্ষ মূর্তি বসানো যায়, সে জন্যও আর্জি জানিয়েছেন মোর্চার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। বলরামের প্রশ্ন, “গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সূচনা ঘিসিঙ্গই করেছিলেন। তিনিই লালকুঠিতে স্বায়ত্বশাসনের সদর দফতর করেছিলেন। সেখানে তাঁর একটি আবক্ষ মূর্তি থাকবে না?” ঘিসিঙ্গের নামে রোহিণীর রাস্তাটি তৈরির ব্যাপারেও যে প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি তা-ও কবুল করেছেন বলরাম।

পাহাড়ের রাজনীতিতে বলরাম এক সময়ে গুরুঙ্গের অন্যতম ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ২০০৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মোর্চা গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার সময়ে গুরুঙ্গের পরেই দলের পক্ষে বক্তব্য রাখতেন তিনি। সম্প্রতি অবশ্য সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নিয়েই ব্যস্ত তিনি। জিএনএলএফ-এর নেতাদের অনেকেই মনে করছেন, ‘অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে গ্রহণযোগ্য বলরামকে সামনে রেখে আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়ছেন বিমল গুরুঙ্গ, রোশন গিরি প্রমুখ। জিএনএলএফ-এর দার্জিলিঙের আহ্বায়ক এম জি সুব্বা বলেন, “জীবদ্দশায় যাঁরা সুবাস ঘিসিঙ্গকে হেনস্থা করেছেন মৃত্যুর পরে তাঁর শোকযাত্রায় উপচে পড়া ভিড় দেখে ঘাবড়ে গিয়েছেন তাঁরা। সে জন্যই মোর্চা নেতাদের একাংশের শ্রদ্ধার বহর দেখে তাই সন্দেহ হচ্ছে।”

মোর্চা সূত্রে জানা গিয়েছে, খোদ গুরুঙ্গই ঘিসিঙ্গের মৃত্যুর পরে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে আসরে নেমেছেন। তাই মিরিকে অন্ত্যেষ্টির দিন জিটিএ সভার দু’জন সভাসদকে পাঠিয়েছিলেন। মোর্চাক এক নেতা জানান, গুরুঙ্গ নিজেও মিরিকে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, শেষ মুহূর্তে বিক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন, খবর পেয়ে যাননি।

পাহাড় থেকে ‘নির্বাসিত’ হওয়ার পরে অনেকবার চেষ্টা করেছেন তাঁর চেনা ঠিকানায় ফিরতে। তখন পথ অবরোধ থেকে অবস্থানপাহাড় অচল করে বাধা দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। মৃত্যুর পরে পাহাড় জুড়ে সমবেদনার বাতাসে কি সেই প্রতিরোধ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছে মোর্চা?

kishore saha siliguri Subhash Ghisingh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy