Advertisement
০১ মে ২০২৪

চাঁচলে ঝড়ে ভাঙল তিনশো বাড়ি, ক্ষতি ধানেও

কুড়ি মিনিটের ঝড় লণ্ডভণ্ড করে দিল মালদহের চাঁচলের তিনটি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঝড়ের তাণ্ডবে তিনটি ব্লকে সম্পূর্ণ ও আংশিক ভেঙে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৫০০টিরও বেশি বাড়ি। কোথাও উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি, ভেঙে পড়েছে শতাধিক বড় গাছ। কোথাও ঝড়ের দাপট বাড়ির টিনের ছাদ উপড়ে নিয়ে ফেলেছে ৫০০ মিটার দূরে। ক্ষতি হয়েছে বোরোধানের খেতেও।

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বোরো ধানের খেত।

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বোরো ধানের খেত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৪ ০১:৫৯
Share: Save:

কুড়ি মিনিটের ঝড় লণ্ডভণ্ড করে দিল মালদহের চাঁচলের তিনটি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঝড়ের তাণ্ডবে তিনটি ব্লকে সম্পূর্ণ ও আংশিক ভেঙে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৫০০টিরও বেশি বাড়ি। কোথাও উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি, ভেঙে পড়েছে শতাধিক বড় গাছ। কোথাও ঝড়ের দাপট বাড়ির টিনের ছাদ উপড়ে নিয়ে ফেলেছে ৫০০ মিটার দূরে। ক্ষতি হয়েছে বোরোধানের খেতেও।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ চাঁচলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। কিন্তু অন্যত্র ঝড়ের দাপট ততটা না থাকলেও হরিশ্চন্দ্রপুর-২, হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ও চাঁচল-২ ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘটনার পর রাত থেকেই ওই এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। যা এ দিন রাত পর্যন্ত স্বাভাবিক হয়নি। বিদ্যুত না থাকায় সমস্যা দেখা দিয়েছে পানীয় জলেরও। যদিও ঝড়ের পাশাপাশি মরসুমের প্রথম বৃষ্টির পর গরমের হাত থেকে অনেকটাই স্বস্তি মিলেছে বাসিন্দাদের।

চাঁচলের মহকুমাশাসক সঞ্জীব দে বলেন, “বিডিওদের কাছে ক্ষতিগ্রস্থদের রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। চাঁচল-২ ব্লকে ৫০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। ওই এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রানের ত্রিপলও পাঠানো হয়েছে। বাকি এলাকার রিপোর্ট পেলেই ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রান দেওয়া হবে।” প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহকুমা জুড়েই প্রথমে হালকা ঝড় শুরু হয়। কিন্তু ৩টি ব্লকে ঝড়ের দাপট এতটাই ছিল যে ওই সব এলাকার মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ার পাশাপাশি উড়ে যায় বাড়ির টিন ও খড়ের চালা। শুধু তাই নয়, একাধিক এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে। কড়িয়ালি এলাকাতেই ১২টি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে।

উড়ে গিয়েছে স্টেশনের ছাউনি। বাপি মজুমদারের তোলা ছবি।

এ দিন হরিশ্চন্দ্রপুরের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় যান ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক তজমূল হোসেন। তিনি বলেন, “লতাশি, কড়িয়ালি, গোলামোড়, তালগাছি এলাকা সহ হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রতিটি গ্রামেই কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। দুটি ব্লকেই প্রায় ৫০০ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জামিল ফিরদৌস বলেন, “ব্লকে ২০০টিরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় খবর পৌঁছেছে। প্রশাসনকে দ্রুত ত্রাণের ব্যবস্থা করতে বলেছি।”

ঝড় থামতেই বিদ্যুতনগর এলাকার সিরাজুল হক দেখেন যে তার বাড়ির টিনের গোটা ছাদটাই উড়ে গিয়েছে। রাতে প্রতিবেশীর বাড়িতে কাটানোর পরে সকালে বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে মাঠের মধ্যে ওই টিনের চাল খুঁজে পেয়েছেন তিনি। সিরাজুল বলেন, “ঝড় শুরু হতেই চারদির ধুলায় ভরে যায়। কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। তারপর দেখি বাড়ির টিনের ছাদটাই নেই।” বাড়ির ছাদ উড়ে গিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের সোনাকুলের নাদেরুল ইসলামেরও। তিনিও বলেন, “ঝড় শেষ হতেই বৃষ্টি শুরু হয়। ছাদ উড়ে যাওয়ায় অন্যের বাড়িতে রাত কাটাই।” ঝড়ের দাপটে মালাহার রেল স্টেশন সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও টিনের চাল উড়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

thunder chanchal destruction of houses
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE