Advertisement
E-Paper

চমক দিয়েই উত্তরে খাতা খুলতে মরিয়া তৃণমূল

আত্রেয়ী পাড়ের বালুরঘাট থেকে তোর্সা পাড়ের কোচবিহার—এখনও উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার একটি লোকসভা আসন তৃণমূল দখল করতে পারেনি। কোথাও বামেদের কাছে পর্যুদস্ত হয়েছে তৃণমূল। আবার কোথাও কংগ্রেসের কাছে। অতীতের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে এবার উত্তরেও লোকসভা আসনে সাফল্য পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল।

কৌশিক চৌধুরী ও অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৪ ০৭:৪০

আত্রেয়ী পাড়ের বালুরঘাট থেকে তোর্সা পাড়ের কোচবিহার—এখনও উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার একটি লোকসভা আসন তৃণমূল দখল করতে পারেনি। কোথাও বামেদের কাছে পর্যুদস্ত হয়েছে তৃণমূল। আবার কোথাও কংগ্রেসের কাছে। অতীতের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে এবার উত্তরেও লোকসভা আসনে সাফল্য পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল। সেই কারণেই উত্তরের ৮টি আসনের প্রার্থী তালিকায় তৃণমূল ‘চমক’ দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলে মনে করছেন কংগ্রেস ও বাম শিবিরের উত্তরবঙ্গের শীর্ষ নেতাদের অনেকে।

তৃণমূল অবশ্য বিষয়টিকে ‘চমক’ হিসেবে না দেখে রাজনীতিতে ভিন্ন জগতের ব্যক্তিত্বদের টেনে আনার প্রক্রিয়া বলে দাবি করছে। তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান গৌতম দেবের যুক্তি, “দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা রাজনীতি করছেন, তাঁরাই শুধু প্রার্থী হবেন এমন কোনও নিয়ম নেই। বরং রাজনীতির ক্ষেত্রটা প্রসারিত করতে হবে। নানা ক্ষেত্রের মানুষকে রাজনীতিতে টেনে আনতে হবে। এটা যে চমক নয় তা সময়ই বলবে।”

তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় বালুরঘাটে নাট্যব্যক্তিত্ব অর্পিতা ঘোষ, মালদহের দুটি আসনে যথাক্রমে গায়ক সৌমিত্র রায় ও চিকিৎসক মোয়াজ্জেম হোসেন। রায়গঞ্জে অবশ্য তৃণমূল প্রাথী সত্যরঞ্জন দাশমুন্সির একটা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। তিনি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির ভাই। তবে সরাসরি রাজনীতির আসরে এতদিন তাঁকে কমই দেখা গিয়েছে। পাশের জেলা দার্জিলিঙে তৃণমূলের অন্তত ৩ জন নেতা প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু, ‘মুখ চেনা’ নেতাদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ভাইচুং ভুটিয়াকে প্রার্থী করা হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।

সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন...

জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের প্রার্থী বিজয় কৃষ্ণ বর্মন। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার বিজয়কৃষ্ণবাবু উত্তরবঙ্গের সংস্কৃতি জগতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। এক সময়ে মাথাভাঙা ব্লক কংগ্রেস সভাপতি থাকলেও দীর্ঘদিন সক্রিয় রাজনীতির ময়দানে তাঁকে দেখা যায়নি। জলপাইগুড়িতেও লোকসভা আসনের জন্য তৃণমূলের অনেক দাবিদার থাকলেও তাঁদের পেছনে ফেলেছেন বিজয়কৃষ্ণবাবু। কোচবিহারেও তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে দলের একাধিক নেতার কলকাতায় দলের প্রদেশ দফতরে পৌঁছেছিল। কিন্তু, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রেণুকা সিংহকে মনোনীত করে টিকিট দিয়েছে তৃণমূল। আলিপুরদুয়ারে পুরোদস্তুর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। সদ্য আরএসপি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া বাম আমলের প্রাক্তন রাষ্ট্রমন্ত্রী দশরথ তিরকেকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল।

তবে বিরোধীরা কটাক্ষ করতেও ছাড়ছেন না। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা দার্জিলিং জেলার কার্যকরী সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, “তৃণমূল কর্মীদের মর্যাদার কথা বলেই তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম। আর এখন দলের তাঁরাই উপেক্ষিত, ব্রাত্য। প্রার্থী তালিকা দেখে তাই মনে হচ্ছে। আমরা মনে করি, যাঁরা সারা বছর, সর্বক্ষণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করেন। তাঁদেরই লোকসভা বা আইনসভায় পাঠানো উচিত। এতে এলাকার উন্নয়ন হয়। তৃণমূল যা করছে, তা রাজনীতির পক্ষে ভাল লক্ষণ নয়।” জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার সাংগঠনিক দুই জেলা কংগ্রেস কমিটির কো অর্ডিনেটর মোহন বসুর কথায়, “তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা দেখে মনে হল, ওরা যেন চটজলদি সফলতার কোনও টোটকা খুঁজছে। ভোটের প্রার্থী তালিকায় সাধারণ বাসিন্দাদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারার মতো কেউই নেই। এই ধরনের রাজনীতি গণতান্ত্রিক দলের পথ হতে পারে না।”

loksabha vote siliguri trinomul kaushik chowdhury anirban roy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy