জেলরক্ষীদের টাকা ও সিগারেট না দিলে বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় না, এই অভিযোগে মালদহ জেলা সংশোধনাগারের সামনে বিক্ষোভে নাজেহাল হলেন কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সকালে মালদহ জেলা জেলের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে। জেল সূত্রের খবর, ওই সময়ে জেলের ভেতরে থাকা সব বন্দিও রক্ষীদের জুলুম রোখার দাবিতে অনশনের হুমকি দেন। তাতে জেল কর্তৃপক্ষের অস্বস্তি বেড়ে যায়।
কারণ, মঙ্গলবার থেকে সংশোধানাগের ভিতর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ১০ কেপিপি কর্মী অনশন শুরু করেন। সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ জন। বৃহস্পতিবার রাতে ৭ জন কেপিপি কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের মালদহ মেডিক্যল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এই অবস্থায় অন্য বন্দিরা অনশনে বসায় পরিস্থিতি কিছুটা জটিল হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত জেলের তরফে রক্ষীদের কারও বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণ হলে সাসপেন্ড করা হবে বলে জানালে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। পরে জেলের ডেপুটি জেলর রঞ্জন হালদার তাঁর মোবাইল নম্বর কাগজে লিখে জেলের সামনে টাঙিয়ে অভিযোগ জানাতে বললে তখনকার মতো অবস্থা আয়ত্বে আসে। এর পরেই জেলে থাকা ৭২২ জন বন্দির অর্ধেক অনশন তুলে খান বলে জেল কর্তৃপক্ষের দাবি।
মালদহ জেলা সংশোধনাগারে সুপার দোরজি ভুটিয়া বলেন, “বিচারাধীন বন্দিদের পরিবারের কাছে থেকে জেলরক্ষীদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়া যে অভিয়োগ উঠেছে তা ঠিক নয়। তবে অভিযোগ ওঠার পরে ডেপুটি জেল সুপার জেলের বাইরে সাদা কাগজে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়েছেন বিক্ষোভকারীদের। স্পষ্ট অভিযোগ পেলে নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্ট রক্ষীকে সাসপেন্ড করা হবে।” তিনি জানান, প্রায় অর্দেক জেলবন্দি খেলেও অন্যরা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলের তরফে বিষয়টি মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এদিনই সকালে জেলের সামনে বন্দিদের একাংশের আত্মীয়রা দেখা করার জন্য জড়ো হন। ওই আত্মীয়দের অভিযোগ, বিধি মেনে অনুমতি পাওয়ার পরেও দেখা করার আগে মাথা পিছু ৫০ তেকে ১০০ টাকা এবং ২-৩ প্যাকেট সিগারেট চান কয়েকজন কারারক্ষী। এর পরে বিক্ষোভ শুরু হয়। ইতিমধ্যে জেলের ভেতর থেকে কর্মীরা কর্তৃপক্ষকে খবর দেন, সব বন্দি অনশনে বসেছেন। তখন ডেপুটি জেলার রঞ্জনবাবুকেক বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে বারবার বলতে শোনা যায়, “আপনারা কাউকে এক পয়সা দেবেন না। বিচারাধীন বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে কোনও পয়সা লাগে না। জেল রক্ষীরা টাকা চাইলেই আমাকে ফোন করুন। আমি সঙ্গে সঙ্গে সেই জেলরক্ষীকে সাসপেন্ড করে দেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy