Advertisement
E-Paper

টাকা দাবি করেছেন কৃষ্ণেন্দু, অভিযোগ

লোকসভা ভোটের জন্য দলীয় তহবিলে দু’কোটি টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইংরেজবাজারের বিধায়ক তথা রাজ্যের পযর্টনমন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর বিরুদ্ধে। রবিবার ইংরেজবাজার থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন মালদহ শহরের বালুচর এলাকার এক আয়কর আইনজীবী।

পীযূষ সাহা

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৪ ০২:৫০

লোকসভা ভোটের জন্য দলীয় তহবিলে দু’কোটি টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইংরেজবাজারের বিধায়ক তথা রাজ্যের পযর্টনমন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর বিরুদ্ধে। রবিবার ইংরেজবাজার থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন মালদহ শহরের বালুচর এলাকার এক আয়কর আইনজীবী। সঞ্জয়কুমার শর্মা নামে ওই আইনজীবী জানিয়েছেন, রাজ্য নির্বাচন আধিকারিকের কাছেও তিনি অভিযোগ দায়ের করেছেন। কৃষ্ণেন্দুবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের পাল্টা অভিযোগ এনেছেন।

জেলার পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব জানান, অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত শুরু হয়েছে। জেলাশাসক তথা ওই লোকসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার শরদ দ্বিবেদী বলেন, “এখনও কোনও অভিযোগ হাতে আসেনি। পেলে তা খতিয়ে দেখা হবে।”

এফআইআরে সঞ্জয়বাবু জানান, শনিবার রাত ৯টা ৩২ মিনিটে তাঁর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রতিভা সিংহ তাঁর মোবাইল থেকে সঞ্জয়বাবুর মোবাইলে ফোন করেন। রাজনৈতিক তহবিলে চাঁদা দেওয়ার বিষয়ে কথা বলার জন্য কালীতলায় তৃণমূলের দলের দফতরে যেতে বলেন প্রতিভাদেবী। তিনি যেতে অস্বীকার করলে কৃষ্ণেন্দুবাবুর কাছ থেকে ফোন আসে। ঠিক রাত ৯টা ৩৯ মিনিটে আসে ওই ফোন, কথা হয় ২ মিনিট ৪২ সেকেন্ড। ফোনেই কৃষ্ণেন্দুবাবু ২ কোটি টাকা চাঁদা চান। অন্যথা ফল খারাপ হবে, এমন হুমকিও দেন বলে সঞ্জয়বাবু উল্লেখ করেছেন তাঁর লিখিত অভিযোগে।

কৃষ্ণেন্দুবাবু সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “ওই আইনজীবীই আমার সই জাল করেছিলেন। পুলিশ তদন্তও করছে। সেই কারণেই তিনি আমাকে ফাঁসাতে চাইছেন।” মন্ত্রীর অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে সঞ্জয়বাবু বলেন, তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করায় কৃষ্ণেন্দুবাবুই তাঁর উপরে পাল্টা চাপ দিচ্ছেন। তিনি ইংরেজবাজার পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ওই ওয়ার্ডেই তিনি একটি চারতলা বাড়ি তৈরি করছেন। তাঁর দাবি, পুরসভার সব নিয়ম মানা সত্ত্বেও, মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার পরই রবিবার সেই বাড়ি তৈরির কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কৃষ্ণেন্দুবাবু ‘হুমকি’ দেওয়ার পর রাতে পুলিশ তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করতে চেয়েছিল বলেও সঞ্জয়বাবুর দাবি। তিনি গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখতে চাওয়ায় পুলিশ চলে যায়। থানার খবর, তাঁর বাড়ির কাজে বাধা দেওয়ার বিষয়ে ৭ মার্চ একটি অভিযোগ দায়ের করেন সঞ্জয়বাবু। সে বিষয়ে খোঁজখবর করতেই শনিবার রাতে তাঁর বাড়ি গিয়েছিল পুলিশ।

কৃষ্ণেন্দুবাবু যে শনিবার রাতে সঞ্জয়বাবুকে ফোন করেছিলেন, তা অবশ্য তিনি অস্বীকার করেননি। তবে তাঁর কথায়, “ওই আইনজীবী বেআইনি ভাবে বাড়ি তৈরি করছিলেন। বাসিন্দারা অভিযোগ করায় আমি ফোন করি। আমি তাঁকে কাজ বন্ধ করতে বলেছিলাম। টাকা চাইনি।” কাউন্সিলর প্রতিভাদেবীরও বক্তব্য, “বেআইনি ভাবে বাড়ি তৈরি হচ্ছিল বলেই নির্মাণ বন্ধ করা হয়েছে। সঞ্জয়বাবুর সব অভিযোগ মিথ্যা।” ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে কৃষ্ণেন্দুবাবু কাজ বন্ধ করতে বলতেই পারেন, বলা হচ্ছে পুরসভা সূত্রে।

রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বও কৃষ্ণেন্দুবাবুর পাশে দাঁড়িয়েছেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের মতে, এই অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

মালদহ ট্যাক্স বার অ্যাসিয়েশনের জেলা সম্পাদক অমিত পালচৌধুরী বলেন, “আজ সঞ্জয়বাবুর কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে, আগামী দিন আমরাও এর শিকার হতে পারি।” সিপিএম জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “অভিযোগ মারাত্মক। আমরা এর নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।” দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস প্রার্থী আবু হাসেম খান চৌধুরীর বক্তব্য, “এ আর নতুন কী। কৃষ্ণেন্দুর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আগেও উঠেছে।”

krishnendu roy choudhury piyush saha maldah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy