কলেজের উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের দুই শিক্ষাকর্মীকে স্থায়ী করেনি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। এই অভিযোগ -সহ চার দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিলেন এই কলেজের শিক্ষাকর্মীরা। বুধবার থেকে ৪৭ জন শিক্ষাকর্মী কলেজ চত্বরে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কর্মবিরতি ও অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। উল্লেখ্য শিক্ষাকর্মীদের এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্মচারি সমিতির সম্পাদক তপন নাগ। তৃণমূল কংগ্রেসের রায়গঞ্জ শহর কমিটির প্রাক্তন সভাপতি তপনবাবু বর্তমানে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের তৃণমূল পরিচালিত রোগী সহায়তা কেন্দ্রের আহ্বায়কের পদে রয়েছেন। যদিও তাঁর দাবি, “সমিতি কোনও রাজনৈতিক দল প্রভাবিত নয়। ডান-বাম বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থক শিক্ষাকর্মীরা সমিতির সদস্য রয়েছেন।”
তপনবাবুর অভিযোগ, রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজকে রাজ্য সরকার পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে। সেই অজুহাত দেখিয়ে ৩ রা মার্চ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কলেজ কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয় যে উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত কার্যকরী করা সহ শিক্ষাকর্মীদের কোনও দাবি মানা সম্ভব নয়। তিনি বলেন,“এখনও পর্যন্ত কলেজের শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের বেতন দেওয়া, স্নাতক স্তরের ফর্ম পূরণের কাজ সহ নানা প্রশাসনিক কাজকর্ম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী হচ্ছে। তা হলে শিক্ষাকর্মীদের সমস্যার সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় কেনও দ্বিচারিতা করছেন? তাই আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ও অবস্থান বিক্ষোভ চলবে।”
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তপন মজুমদার জানান, “শিক্ষাকর্মীদের দাবি পূরণ করার এক্তিয়ার আমার নেই। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ফ্যাক্স করে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমনাথ ঘোষের দাবি, সরকারি কোনও নির্দেশিকা না থাকায় রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত সহ শিক্ষাকর্মীদের নানা সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে রাজ্য শিক্ষা দফতরে যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে।”
কলেজ সূত্রের খবর, গত বছরের ২৭ অগাস্ট কলেজের উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে দুই অস্থায়ী কর্মী কুশল বিশ্বাস ও শিপ্রা কর্মকারকে স্থায়ীকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কলেজের তরফে ওই সিদ্ধান্তের প্রতিলিপি কমিটির চেয়ারম্যান তথা উপাচার্যের কাছে পাঠিয়ে অবিলম্বে তাঁদের নিয়োগপত্র দেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়।
ওই দুই শিক্ষাকর্মী কর্মরত অবস্থায় মৃতের পোষ্য হিসেবে গত প্রায় ছ’বছর ধরে কলেজে অস্থায়ীভাবে কর্মরত রয়েছেন। সমিতির অভিযোগ, গত ১৬ জানুয়ারি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কুশলবাবু ও শিপ্রাদেবীর পরীক্ষাও নেন। গত বছরের ২২ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিপ্লব রায় ও সুব্রত চক্রবর্তী নামে কলেজের আরও দুই শিক্ষাকর্মীর প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বকেয়া পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেও সেই নির্দেশ এখনও কার্যকরী করা হয়নি। কলেজের গ্রন্থাগারে ৬ জন শিক্ষাকর্মী থাকার কথা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে ৪টি পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy