Advertisement
E-Paper

ধর্ষণের অভিযোগ পেয়েও ‘নিষ্ক্রিয়’ পুলিশ

শাসক দলের নেতার ছেলে বলে ধর্ষণে অভিযুক্ত এক যুবককে চার দিন ধরে পুলিশ গ্রেফতার করছিল না বলে অভিযোগ উঠল কোচবিহারের তুফানগঞ্জে। ছাট গেন্দুবাড়ি এলাকার বাসিন্দা নির্যাতিতা মহিলা সোমবার পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৪ ০২:০৪

শাসক দলের নেতার ছেলে বলে ধর্ষণে অভিযুক্ত এক যুবককে চার দিন ধরে পুলিশ গ্রেফতার করছিল না বলে অভিযোগ উঠল কোচবিহারের তুফানগঞ্জে। ছাট গেন্দুবাড়ি এলাকার বাসিন্দা নির্যাতিতা মহিলা সোমবার পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই অভিযুক্তকে পুলিশ অসম থেকে গ্রেফতার করে। ওই মহিলা গত বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার ছেলের বিরুদ্ধে তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন। অভিযুক্ত নিজেও তৃণমূল কর্মী।

পুলিশ জানায়, অভিযুক্তের বাড়ি ছাট গেন্দুবাড়িতেই। স্থানীয় সিপিএম নেতারা অভিযোগ করেছেন, শাসক দলের নেতার ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিল পুলিশ। এদিন বিষয়টি নিয়ে হইচই হওয়ায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা নাটাবাড়ির প্রাক্তন বিধায়ক তমসের আলি বলেন, “অভিযুক্তের বাবা শাসক দলের স্থানীয় বুথ সভাপতি। তিনি জোর ও প্রভাব খাটিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।” তমসের দাবি করেন, “এদিন আমাদের মহিলা সংগঠনের সদস্যরা ধর্ষিতার সঙ্গে পুলিশ সুপারের অফিসে যান। সেখানে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। তারপরেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।” তবে কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ঠিক নয়। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তও চলছে।”

সিপিএমের অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের নাটাবাড়ির বিধায়ক তথা কোচবিহারে দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “পুলিশের উপরে তৃণমূল চাপ তৈরি করেছে, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।” তাঁর কথায়, কোনও মামলা হওয়ার পরে পুলিশ তার তদন্ত করে। এ ক্ষেত্রেও তদন্তের পরেই গ্রেফতার করা হয়েছে।

অভিযুক্ত বা তার বাবার সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। কিন্তু তৃণমূলের তুফানগঞ্জ ১ ব্লক সভাপতি ফজল করিম দু’বার দু’রকম দাবি করেন। প্রথমবার অভিযুক্তের বাবাই ওই বুথের সভাপতি বলে মেনে নেন। দ্বিতীয়বার জানান, ওই ব্যাক্তি দলের কোনও দায়িত্বে নেই। তবে তাঁর কথায়, “আইন আইনের পথে চলবে।”

এদিন ওই নির্যাতিতা সিপিএমের মহিলা সংগঠনের নেত্রীদের সঙ্গে এসপি-র অফিসে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ সুপার না থাকায় তিনি ডিএসপি পদ মর্যাদার এক অফিসারের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেন। সেখানে তিনি জানান, তাঁর স্বামী কর্মসূত্রে নদিয়ার ফুলিয়ায় থাকেন। তাঁর পাঁচ বছরের ছেলে মামার বাড়িতে থাকে। তিনি শ্বশুরবাড়িতে একটি ঘরে একা থাকেন। গত ২৮ জুলাই সোমবার রাত ১২টা নাগাদ অভিযুক্ত বাঁশের বেড়া ভেঙে তাঁর ঘরে ঢোকে। তিনি তখন ঘুমোচ্ছিলেন। অভিযুক্ত তাকে খুনের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে। অভিযুক্ত পালিয়ে যাওয়ার সময় ওই মহিলা চিৎকার করলে তাঁর শ্বশুর এবং আত্মীয়রা সেখানে হাজির হন। ওই ঘটনার পরে পুলিশে তাঁরা যাতে অভিযোগ না করেন, সে জন্যও চাপ তৈরি করা হয়। ওই পরিবারের উপরে সালিশি করে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব চাপ তৈরি করে বলে অভিযোগ। বুধবার ওই মহিলার স্বামী বাড়ি ফেরেন। বৃহস্পতিবার তিনি স্ত্রীকে নিয়ে গিয়ে থানায় অভিযোগ করেন। পরে মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দিও দেন তিনি। কিন্তু অভিযুক্ত প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছিল না বলে অভিযোগ।

coocj behar rape accused tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy