Advertisement
০৫ মে ২০২৪

নিত্য ভোগান্তি এনজেপি-রাধিকাপুর প্যাসেঞ্জারে

একাধিক কামরার পাখা চলে না। সন্ধ্যার পর কয়েকটি কামরায় আলোও জ্বলে না। গন্তব্যে যাওয়ার আগে বেশ কিছু কামরায় শৌচাগারে জল ফুরিয়ে যায়। ভোগান্তির এখানেই শেষ নয়, বিভিন্ন কামরার দরজার সামনের রাস্তা বস্তা রেখে বন্ধ করে দেওয়ায় যাত্রীরা ওঠা-নামায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ট্রেনটিও নিয়মিত দেরিতে চলছে।

গৌর আচার্য
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০২:৩২
Share: Save:

একাধিক কামরার পাখা চলে না। সন্ধ্যার পর কয়েকটি কামরায় আলোও জ্বলে না। গন্তব্যে যাওয়ার আগে বেশ কিছু কামরায় শৌচাগারে জল ফুরিয়ে যায়। ভোগান্তির এখানেই শেষ নয়, বিভিন্ন কামরার দরজার সামনের রাস্তা বস্তা রেখে বন্ধ করে দেওয়ায় যাত্রীরা ওঠা-নামায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ট্রেনটিও নিয়মিত দেরিতে চলছে।

রেল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে এক মাস রাধিকাপুর-এনজেপি প্যাসেঞ্জারে এ ভাবেই যাত্রী পরিষেবা বেহাল হয়ে পড়েছে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম অরুণ কুমার শর্মা অবশ্য ওই ট্রেনে পরিষেবা বেহাল হওয়ার বিষয়টি জানেন না। ডিআরএমের কথায়, “ট্রেনটি দেরিতে চলছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে।”

২০১২ ফেব্রুয়ারিতে রাধিকাপুর-এনজেপি ডেমু প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি চালু হওয়ায় রেলের ইতিহাসে এই প্রথম রায়গঞ্জ-শিলিগুড়ি রেল যোগাযোগ গড়ে ওঠে। রাধিকাপুর স্টেশন থেকে সকাল ৬টায় ছেড়ে বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছনোর কথা। অন্য দিকে, বিকাল সওয়া ৫টায় নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছেড়ে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে রাধিকাপুর স্টেশনে যাওয়ার কথা।

নিত্যযাত্রীর অভিযোগ, তিন মাস ধরে প্রতিদিন ট্রেন তিন ঘণ্টা দেরিতে যাতায়াত করছে। যাত্রীরা বেশি রাতে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ ও রাধিকাপুর স্টেশনে নেমে বাড়ি ফেরার জন্য রিকশা বা কোনও যানবাহন না পেয়ে সমস্যায় পড়ছেন। প্রতিদিনই ট্রেনটির তিন-চারটি কামরার পাখা চলছে না। গরমে যাত্রীরা সমস্যায় পড়ছেন।

মাঝেমধ্যে এনজেপি থেকে ছাড়ার পর কয়েকটি কামরায় লাইট নিভে যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর অন্ধকার কামরায় মাবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে যাত্রীরা সফর করতে বাধ্য হন। অনেকে নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন। রাধিকাপুর ও এনজেপি থেকে ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই ট্রেনের একাধিক শৌচাগারের জল শেষ হচ্ছে। সাফাইয়ের অভাবে ট্রেনের বিভিন্ন কামরায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খাবারের উচ্ছিষ্ট, ফলের খোসা-সহ আবর্জনার দুর্গন্ধে যাত্রীরা নাকে রুমাল গুঁজে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রতিদিন রাধিকাপুর স্টেশন থেকে বারসই পর্যন্ত একশ্রেণির যাত্রী ট্রেনের কিছু কামরার দরজা আটকে রাখছেন সব্জি ও মুড়ির বস্তা দিয়ে। বস্তা টপকে যাত্রীরা ট্রেনে উঠতে গিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও। রায়গঞ্জের তুলসীতলার বাসিন্দা গৃহবধূ প্রিয়াঙ্কা দে বলেন, “চিকিৎসার কাজে সপ্তাহে তিন দিন শিলিগুড়িতে যেতে হয়। ট্রেনের পরিষেবা বেহাল। নিরাপত্তার অভাবে এক মাস বাসে যাতায়াত করছি।”

রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ীকে প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবসার কাজে শিলিগুড়িতে যেতে হয়। তাঁর কথায়, “ট্রেনটির পরিষেবা স্বাভাবিক করার জন্য ডিআরএমকে স্মারকলিপি পাঠানো হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gour acharya raiganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE