কর্তব্যরত ট্রাফিক কনস্টেবলকে চড়ের অভিযোগ পেয়েও কেন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হয়নি প্রশ্নে কোতোয়ালির পুলিশকে তিরস্কার করলেন মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতের বিচারক। এর পরেই তিনি ওই ধারা যোগ করার নির্দেশ দেন।
গত ১৭ জুলাই প্রাক্তন জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের নামে থানায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল নৃপেন পালচৌধুরীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। তাঁর বিরুদ্ধে ১৮৬, ৩৪১, ৫০৬-এর মতো জামিন যোগ্য ধারায় মামলা করে পুলিশ। মঙ্গলবার তা আদালতে ওঠে। বিচারক শান্তনু দত্ত আইনজীবীর কাছে জানতে চান কেন কর্তব্যরত সরকারি কর্মীকে হেনস্থার পরে জামিন অযোগ্য ধারা নেই।
এ দিন সরকারি আইনজীবী শান্তা চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “বিচারক নথি দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করে জানান সঠিক তদন্ত হয়নি। কর্তব্যরত সরকারি কর্মীকে হেনস্থার পরেও ৩৫৩ ধারা নেই দেখে তিনি পুলিশকেওই ধারা সংযোজনের নির্দেশ দেন। এর পরে ওই ধারা সংযোজনের আবেদনও জমা দেওয়া হয়।” আদালতের নির্দেশের খবরে বুধবার শহরে আলোড়ন পড়ে। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর জানান, আদালতের নির্দেশ মতো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রশ্ন ওঠে অভিযুক্ত শাসক দলের যুব নেতা হওয়ার জন্যই কি তদন্ত ঠিক মতো না করে জামিনযোগ্য ধারা দেওয়া হল? জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “আইন আইনের পথেই চলবে। আমি এর বেশি কিছু বলব না।”
যদিও অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতা সৈকতবাবুর দাবি, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। তাঁকে সামনে রেখে দলকে কালিমালিপ্ত করার চক্রান্ত চলছে বলে তাঁর অভিযোগ। তিনি বলেন, “আইনি পথে লড়াই করব। ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধেও লড়াই জারি থাকবে।” আইনজীবীদের একাংশ জানান, জামিন অযোগ্য ৩৫৩ ধারা যুক্ত হওয়ায় পুলিশ অভিযুক্ত তৃণমূল যুব নেতাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য। সেটা না হলে অভিযুক্ত স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করতে পারেন।
গত ১৭ জুলাই ট্রাফিক কনস্টেবল নৃপেন পালচৌধুরী কোতোয়ালি থানায় সৈকতবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, ওই দিন দুপুরে দিনবাজারের ট্রাফিক পোস্টের কাজ করার সময় যুব তৃণমূল নেতা গাড়ি নিয়ে রাস্তা আটকে দাঁড়ান। গাড়ির চালককে রাস্তা ছেড়ে দাঁড়াতে বললে বচসা বাঁধে। অভিযোগ, সৈকতবাবু গাড়ি থেকে নেমে তাঁকে চড় মারেন ও ধাক্কা দেন। যদিও যুব তৃণমূল নেতা ওই ঘটনাকে অস্বীকার করে উল্টে অভিযোগকারী ট্রাফিক কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার পাল্টা অভিযোগ তোলেন। বুধবার তিনি বলেছেন, “নানা ভাবে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই ট্রাফিক কনস্টেবলকে হেনস্থা করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আমি যে নির্দোষ সেটা আইনি পথে প্রমাণ করে ছাড়ব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy