Advertisement
০৭ মে ২০২৪

নয়া কমিটি গড়ে বিতর্ক এড়ানোর চেষ্টা কৃষ্ণেন্দুর

মালদহ কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে নিজে বসায় যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল সোমবার প্রথম বৈঠকেই তা মেটানোর চেষ্টা করলেন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। সোমবার বৈঠকে প্রাক্তন সভাপতি সন্তোষ চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে আসেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। এ দিন কলেজের উন্নয়নের জন্য প্রাক্তন অধ্যক্ষদের নিয়ে ‘অ্যাকাডেমিক কমিটি’ গড়ে তার চেয়ারম্যান হিসেবেও প্রবীণ শিক্ষাবিদ সন্তোষবাবুর নামই ঘোষণা করেন কৃষ্ণেন্দুবাবু।

পর্যটনমন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী মালদহ কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হওয়ার পরে অভিযোগ উঠেছিল প্রাক্তন সভাপতি সন্তোষ চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়ার। সোমবার সভাপতি হিসেবে প্রথম বৈঠকে কৃষ্ণেন্দুবাবু সঙ্গে নিয়ে আসেন সন্তোষবাবুকেও। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।

পর্যটনমন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী মালদহ কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হওয়ার পরে অভিযোগ উঠেছিল প্রাক্তন সভাপতি সন্তোষ চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়ার। সোমবার সভাপতি হিসেবে প্রথম বৈঠকে কৃষ্ণেন্দুবাবু সঙ্গে নিয়ে আসেন সন্তোষবাবুকেও। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৪ ০২:২৫
Share: Save:

মালদহ কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে নিজে বসায় যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল সোমবার প্রথম বৈঠকেই তা মেটানোর চেষ্টা করলেন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। সোমবার বৈঠকে প্রাক্তন সভাপতি সন্তোষ চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে আসেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। এ দিন কলেজের উন্নয়নের জন্য প্রাক্তন অধ্যক্ষদের নিয়ে ‘অ্যাকাডেমিক কমিটি’ গড়ে তার চেয়ারম্যান হিসেবেও প্রবীণ শিক্ষাবিদ সন্তোষবাবুর নামই ঘোষণা করেন কৃষ্ণেন্দুবাবু।

পরিচালন কমিটির সভাপতি হয়ে প্রথম বৈঠকের পরে কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “আমি এখানে রাজনীতি করতে আসিনি। মালদহ কলেজের শিক্ষার মানের উন্নতি করার জন্যই দায়িত্ব নিয়েছি। সেই জন্য প্রাক্তন অধ্যক্ষদের নিয়ে একটি অ্যাকাডেমিক কমিটি গঠন করেছি। তাঁরা যে পরামর্শ দেবেন সেই মতো কাজ হবে।”

শনিবার কৃষ্ণেন্দুবাবু কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তার কয়েক ঘণ্টা আগেই পর পর সমিতির সদস্য চার শিক্ষকের পদত্যাগকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। পর্যটনমন্ত্রী সভাপতি মনোনীত হতে চলেছেন, এ কথা জানার পরেই একযোগে তিন জন সদস্য পদত্যাগ করেন। আর এক শিক্ষক সভা শুরুর ঠিক আগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে এসএমএস করে তাঁর পদত্যাগ করার কথা জানিয়ে দেন। যদিও কেউই পদত্যাগের কোনও কারণ উল্লেখ করেননি। তবে কিছু শিক্ষকের দাবি, কৃষ্ণেন্দুবাবু সভাপতি মনোনীত হতে চলেছেন জানার পরেই ওই সদস্যরা পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন। কলেজে ইচ্ছেমতো নিজের প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছিল কৃষ্ণেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে। শিক্ষক মহলের একাংশের দাবি, কলেজের লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করা হচ্ছে তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী।

এ দিন ইস্তফা দেওয়া চার শিক্ষক প্রতিনিধিকেও ফের সমিতিতে সামিল হওয়ার অনুরোধ করেছেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। অথচ ২৪ ঘণ্টা আগেই তাঁরা রাজনৈতিক কারণে সরেছেন বলে মত প্রকাশ করেছিলেন তিনি। উপরন্তু, যে সন্তোষবাবু না কি বয়সের কারণে ইস্তফা দিয়েছেন, তাঁকে কেন ফের এমন দায়িত্ব দেওয়ার কথা কৃষ্ণেন্দুবাবুকে ভাবতে হল সেই প্রশ্নে কলেজেই নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। কৃষ্ণেন্দুবাবু অবশ্য বলেন, “পরিচালন সমিতির সভাপতি হলে নিয়মিত বৈঠকে আসতে হয়। তবে অ্যাকাডেমিক কমিটিতে তার প্রয়োজন নেই।” তবে কলেজের একাংশের মতে, চাপে পড়েই সন্তোষবাবুকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করে মুখরক্ষার চেষ্টা হয়েছে। সন্তোষবাবু কেবল বলেন, “শারীরিক কারণে আমি সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। ইস্তফা পত্রে এটাই লিখেছি। এর বেশি কী বলব!”

এ দিন পরিচালন কমিটির বৈঠকের শেষে কৃষ্ণেন্দুবাবু কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সেখানে পদত্যাগী শিক্ষক উজ্জ্বল সাহাকে মন্ত্রী অনুরোধ করেন ইস্তফাপত্র তুলে ফের সমিতিতে যোগ দিতে। তবে উজ্জ্বলবাবু তাতে সোড়া দেননি। পদত্যাগী শিক্ষক অরূপ রায়চৌধুরী এবং এ কে এম আনোয়ারুজ্জামান আলাদা ভাবে হলেও একই সুরে বলেছেন, “পরিচালন কমিটিতে থেকে কোনও কাজ করতে পারছিলাম না। যখন শুনলাম সভাপতি পদত্যাগ করেছেন, আমরাও পদত্যাগ করেছি।”

তৃণমূল সূত্রে খবর, শিক্ষাবিদকে সরিয়ে কলেজের সভাপতি পদে বসায় কৃষ্ণেন্দুবাবুকে নিয়ে দলেও আলোচনা শুরু হয়েছে। জবরদস্তি করে সভাপতি সন্তোষ চক্রবর্তীকে ইস্তফা দেওয়ানোর অভিযোগও উঠেছে। দলের একাংশ ভাবছেন, যেখানে সমিতির মেয়াদ ফুরোতে মাত্র ন’মাস বাকি, সেখানে একটু অপেক্ষা করে নতুন করে নির্বাচনের পরেই তাঁর ওই পদে বসাটা বেশি সম্মানজনক হতো। সোমবার সন্তোযবাবুকে বৈঠকে এনে কৃষ্ণেন্দুবাবু সেই বিতর্কে ইতি টানার চেষ্টা করলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE