Advertisement
E-Paper

পাইকারি বাজারে ক্রেতা নেই, আলুর দাম তলানিতে

চাষের এলাকা বেড়েছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর। ভিন্‌ রাজ্যের ক্রেতাদেরও পাইকারি বাজারে দেখা নেই। সব মিলিয়ে আলুর দাম তলানিতে ঠেকেছে বলে কৃষকদের অভিযোগ। আলুর দাম না মেলায় জলপাইগুড়ি জেলার একাংশ কৃষক খেত থেকেও আলু তোলেননি। রবিবার খোলা বাজারে আলুর দাম কেজি প্রতি ১০ টাকায় নেমে আসে। পাইকারি বাজারে দাম কমে ৪ টাকায় নেমে যায়। এই পরিস্থিতিতে ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকদের সিংহভাগই খেত থেকে আলু না তুলে অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:০২
বাজারে দাম নেই। গাছ শুকোলেও খেতেই আলু ফেলে রাখছেন চাষিরা। নিজস্ব চিত্র।

বাজারে দাম নেই। গাছ শুকোলেও খেতেই আলু ফেলে রাখছেন চাষিরা। নিজস্ব চিত্র।

চাষের এলাকা বেড়েছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর। ভিন্‌ রাজ্যের ক্রেতাদেরও পাইকারি বাজারে দেখা নেই। সব মিলিয়ে আলুর দাম তলানিতে ঠেকেছে বলে কৃষকদের অভিযোগ। আলুর দাম না মেলায় জলপাইগুড়ি জেলার একাংশ কৃষক খেত থেকেও আলু তোলেননি। রবিবার খোলা বাজারে আলুর দাম কেজি প্রতি ১০ টাকায় নেমে আসে। পাইকারি বাজারে দাম কমে ৪ টাকায় নেমে যায়। এই পরিস্থিতিতে ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকদের সিংহভাগই খেত থেকে আলু না তুলে অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

পাইকারি আলুর বাজার কত দিনের মধ্যে চাঙ্গা হতে পারে, তা নিয়ে কৃষি এবং কৃষি বিপণন দফতরের কর্তারা স্পষ্ট কিছু জানাতে পারেননি। কৃষকরা জানান, এই সময়ে মূলত পোখরাজ প্রজাতির আলুর ফলন হয়। রবিবার পাইকারি বাজারে ৪ টাকা ২০ পয়সা কেজি দরে আলু বিক্রি হয়েছে। যদিও এক কিলো পোখরাজ প্রজাতির আলুর উত্‌পাদনে খরচ প্রায় ৭ টাকা। জেলার মোট চাষের ২০ শতাংশ এলাকা আলুর দখলে। বাজারের পরিস্থিতি দেখে ক্রান্তির রতন সরকার, জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের রাউত বাগান এলাকার দেবেন দাসের মতো কৃষকরা আলু না তুলে খেতে ফেলে রেখেছেন বলে দাবি করেছেন।

জলপাইগুড়ির সহকারি কৃষি অধিকর্তা হরিশ্চন্দ্র রায় বলেন, “গাছ শুকিয়ে যাওয়ার পরে আলু না তুললেও অন্তত পনেরো দিন মাটিতে আলু ভাল থাকবে। ওই কয়েকদিনে বাজার কিছুটা চাঙ্গা হলেও হতে পারে।”

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ির গড় আলু চাষের এলাকা ২৫ হাজার হেক্টর। এ বছর তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর। ধূপগুড়ি ব্লকে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয় এবার সেখানে চাষের এলাকা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১২ হাজার হেক্টর। একই ভাবে ময়নাগুড়ি ব্লকে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর, মালবাজার ব্লকে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। জলপাইগুড়ি সদর ব্লক এলাকায় আলু চাষের এলাকা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর এবং রাজগঞ্জ ব্লকে ৪ হাজার হেক্টর। শুধু যে এলাকা বেড়েছে, তা নয়। হেক্টর পিছু উত্‌পাদনের ছবিও পাল্টেছে বলে জানা গিয়েছে। সহকারি কৃষি অধিকর্তা জানান, “হেক্টর প্রতি জমিতে গড়ে ২৮ টন আলু উত্‌পাদনের কথা। অনুকূল আবহাওয়ার জন্য এ বার উত্‌পাদন বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩২ টন।”

ময়নাগুড়ির বার্নিশ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দুই আলু চাষি বিশ্বনাথ মণ্ডল এবং রবি রাউত জানান, পোখরাজ প্রজাতির আলু হিমঘরে রাখা যায় না। ভিন্‌ রাজ্যে যায়। কিন্তু এ বার বাজারে ভিন্‌ রাজ্যের আলু ক্রেতাদের দেখা নেই কেন?

স্পষ্ট কিছু জানাতে পারেননি কৃষি বিপণন দফতরের জেলা আধিকারিক সুব্রত দে। তিনি বলেন, “গত বছর প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য বিহার, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, অসমে আলুর উত্‌পাদন মার খায়। ফলে পশ্চিমবঙ্গে আলুর চাহিদা বাড়ে। প্রাথমিকভাবে জেনেছি, এ বার আবহাওয়া ভাল থাকায় ওই রাজ্যগুলিতে ফলন ভাল হয়েছে। তাই পাইকারি বাজারে আলুর দাম কমেছে কিনা সেটা দেখা হচ্ছে।”

কৃষকদের একাংশের দাবি, এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার টাকা। ধূপগুড়ির গাদং এলাকার চাষি মহেন্দ্র দাস বলেন, “গত বছর এই সময় বাজারে কমপক্ষে ৬ টাকা কিলো দরে আলু বিক্রি হয়েছে। এবার বাইরের পাইকার না থাকায় দাম নেই।”

potato price high price
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy